পরীক্ষা: আইএসএলে রণনীতি নিয়ে অঙ্ক কষছেন হাবাস। ফাইল চিত্র
শুক্রবার আইএসএলের উদ্বোধনী ম্যাচেই খেলতে নামছে এটিকে-মোহনবাগান। প্রতিপক্ষ কেরল ব্লাস্টার্স। যাদের কোচ আবার গত বারের আই লিগ জয়ী মোহনবাগান কোচ কিবু ভিকুনা। প্রথম ম্যাচের আগে সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসকে দুশ্চিন্তায় রাখছে ফুটবলারদের চোট-আঘাতজনিত সমস্যা।
রয় কৃষ্ণ, প্রণয় হালদারদের চোটমুক্ত রাখতেই এ বার কোনও অনুশীলন ম্যাচ খেলার ঝুঁকি নেননি এটিকে-মোহনবাগানের স্পেনীয় কোচ। হাবাস জানেন, গত বছর দুই পর্বেই কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল তাঁকে। তা ছাড়া, গত বছর প্রতি ম্যাচেই তাঁর দলের খেলা দেখতে যুবভারতীতে হাজির থাকতেন কিবু। খাতা খুলে নোটও নিতেন। এ কথাও কানে গিয়েছে হাবাসের। তাই কেরল ম্যাচের আগে আরও সাবধানী হয়ে উঠেছেন সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচ। গোয়ায় লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখতে চাইছেন দলের অনুশীলন। কালো কাপড় দিয়ে মাঠের চারপাশ ঢেকে দিয়েছেন। যাতে বিপক্ষের কেউ কোনও ভাবে জেনে না যান তাঁদের নকশা।
হাবাস জানেন, আধুনিক ফুটবলে সেটপিস থেকে অনেক কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও গোলের দরজা খুলে যায়। তাই গত কয়েক দিনে ফ্রি-কিক, কর্নার থেকে গোল করা এবং রক্ষণ সামলানোর অনুশীলন জোরকদমে হয়েছে তিরি, কার্ল ম্যাকহিউ, ডেভিড উইলিয়ামসদের।
কিন্তু তার পরেও চিন্তা দূর হচ্ছে না হাবাসের। গোয়া থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, কেরলের বিরুদ্ধে প্রথম দল ঠিক করা নিয়েই একাধিক পরীক্ষা তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন অনুশীলনে। গত মরসুমে হাবাস বেশির ভাগ ম্যাচে খেলেছেন ৩-৫-২ ছকে। কিন্তু এ বার সেই ছকের পাশাপাশি ৪-৪-২, ৩-৪-৩ ছকেও মহড়া দিয়ে রাখছেন।
জানা গিয়েছে, সব ছকেই অরিন্দম ভট্টাচার্যকে গোলে রাখছেন এটিকে-মোহনবাগান কোচ। কোনও দিন ৩-৫-২ ছকে তাঁর রক্ষণে থাকছেন প্রবীর দাস, তিরি এবং সন্দেশ ঝিঙ্ঘন। মাঝমাঠে প্রীতম কোটাল, ব্র্যাড ইনম্যান, প্রণয় হালদার, হাভি হার্নান্দেস এবং শুভাশিস বসু। আক্রমণে ডেভিড উইলিয়ামস ও রয় কৃষ্ণ জুটির উপরেই আস্থা রাখা হচ্ছে।
৪-৪-২ ছকে হাবাসের রক্ষণ শুভাশিস, তিরি, সন্দেশ এবং প্রীতম। মাঝমাঠে কার্ল ম্যাকহিউ, প্রবীর, সুসাইরাজ এবং এদু গার্সিয়া। আক্রমণে ডেভিড উইলিয়ামস ও রয় কৃষ্ণ।
শোনা যাচ্ছে, এ বার হাবাসের চমক হতে পারে ৩-৪-৩ ছক। যেখানে সন্দেশ, তিরি ও প্রীতম থাকবেন রক্ষণে। মাঝমাঠে দুই প্রান্তে প্রবীর এবং শুভাশিস। দুই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার কার্ল ম্যাকহিউ এবং হাভি হার্নান্দেস। আক্রমণে রয় কৃষ্ণ, উইলিয়ামসের সঙ্গে যুক্ত হবেন সুসাইরাজ। প্রবীর ও শুভাশিস পালা করে যেমন আক্রমণে যাবেন, তেমনই রক্ষণও সামাল দেবেন প্রীতমদের সঙ্গে। পরিবর্ত হিসেবে চমক হবেন এদু গার্সিয়া। যিনি গত বছর বহু ম্যাচে গোল করে জিতিয়েছিলেন এটিকে-কে।
তবে কোনও ছকই এখনও চূড়ান্ত নয়। সব ছকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দলকে দেখে নিচ্ছেন হাবাস। শুক্রবার প্রথম ম্যাচেই বোঝা যাবে জয় পেতে কাদের নিয়ে রণনীতি সাজাচ্ছেন এটিকে-মোহনবাগান কোচ।
অন্য দিকে, শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গলের কোচ রবি ফাওলার বলছেন, ‘‘প্রস্তুতি ভালই চলছে। আমরা যে ছন্দে ফুটবলটা খেলতে চাই, তার সঠিক কম্বিনেশন দেখে নিচ্ছি অনুশীলনে। ছেলেরাও হাসিখুশি মেজাজে রয়েছে। দলের মধ্যে সেই পরিবেশ রাখতে চাই।’’ শুক্রবার জামশেদপুরের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারে এসসি ইস্টবেঙ্গল।
‘ফ্যান ওয়াল’ আইএসএলে: করোনা সংক্রমণের জন্য দর্শকরা থাকবেন না স্টেডিয়ামে। কিন্তু খেলার মাঝে ভেসে উঠবে বিভিন্ন দলের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস প্রকাশের মুহূর্ত। সম্প্রতি যা দেখা গিয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কিংবা সদ্য সমাপ্ত আইপিএলে। কৃত্রিম জয়ধ্বনিও স্টেডিয়ামে বাজানো হবে বলে জানা দিয়েছে।