IOA

FIFA bans AIFF: ধাক্কা ফুটবলে, নির্বাসনের মুখে দাঁড়িয়ে ভারতের আরও তিন ক্রীড়া সংস্থা

মঙ্গলবার ফিফা নির্বাসিত করেছে ভারতীয় ফুটবলকে। এখন যা অবস্থা, তাতে নির্বাসিত হতে পারে আরও বেশ কিছু ক্রীড়াসংস্থা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২২ ১২:১৮
Share:

নির্বাসিত হতে পারে শরথ, মনপ্রীতদের ক্রীড়া সংস্থা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিয়ম মেনে না চলায় সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থাকে (এআইএফএফ) নির্বাসিত করেছে ফিফা। আঙুল তোলা হয়েছে প্রশাসকদের কমিটির (সিওএ) দিকে। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সিওএ-কে ‘তৃতীয় পক্ষের অনুপ্রবেশ’ বলেছে ফিফা। তবে শুধু ফুটবলই নয়, ভারতের আরও তিনটি ক্রীড়া সংস্থার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স সংস্থা (আইওএ), হকি এবং টেবিল টেনিস সংস্থাকেও নির্বাসিত করা হতে পারে। কারণ, এই সবক’টি সংস্থাতেই এখন ছড়ি ঘোরাচ্ছে সিওএ।

Advertisement

প্রতিটি জায়গাতে সমস্যা একই। দাবি, জাতীয় ক্রীড়ানীতি অনুসারে সংবিধান তৈরি করতে হবে। প্রায় সব সংস্থায় দীর্ঘ দিন ধরে কেউ না কেউ ক্ষমতা দখল করে ছিলেন। নির্বাচন হয়নি অনেক দিন ধরে। হকি ইন্ডিয়ার সভাপতি ছিলেন নরিন্দর বাত্রা। তিনি সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। ছেড়ে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক হকি সংস্থায় (এফআইএইচ) তাঁর পদও। সমস্যা তাতেও মেটেনি। এআইএফএফের মতোই হকি ইন্ডিয়াতে সর্বেসর্বা হয়ে বসেছে সিওএ।

হকি সংস্থার বিপদ আরও বেশি। কারণ সামনের বছর ভারতেই বিশ্বকাপ হওয়ার কথা রয়েছে। রৌরকেলাতে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। এফআইএইচ যদি হকি ইন্ডিয়াকে নির্বাসিত করে দেয়, তা হলে সামনের বছর ভারতে বিশ্বকাপ হবে না। ভারতও বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না।

Advertisement

টেবিল টেনিসেও একই অবস্থা। দিল্লি হাইকোর্টের রায় অনুসারে সেখানে সিওএ বসানো হয়েছে। গত বছর জাতীয় কোচ সৌম্যদীপ রায়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ তুলেছিলেন মণিকা বাত্রা। দিল্লি হাইকোর্ট সেই মামলার বিচারে জানায়, ভারতের টেবিল টেনিস সংস্থা বেশ কিছু আধিকারিকদের স্বার্থরক্ষার জন্য বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরেই সিওএ-কে প্রশাসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সিওএ-ও বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছে। কমনওয়েলথ গেমসের আগে বেশ কিছু খেলোয়াড়কে অন্যায্য ভাবে বাদ দেওয়া হয়। আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পর দিয়া চিতালে খেলার সুযোগ পান। বাকিরা পাননি।

ফিফা যে দিন এআইএফএফ-কে নির্বাসিত করল, সে দিনই ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার প্রশাসন চালানোর জন্য তিন সদস্যের সিওএ নিয়োগ করল দিল্লি হাইকোর্ট। এখানেও সেই জাতীয় ক্রীড়াবিধির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সংবিধান তৈরির কথা বলা হয়েছে। আইওএ-কে যদি নির্বাসিত করা হয়, তা হলে বিরাট সমস্যায় পড়বেন ভারতের ক্রীড়াবিদরা। অলিম্পিক্স তো বটেই, আইওএ-র অধীনে যে ক’টি ক্রীড়া সংস্থা রয়েছে, তাদের কোনও ক্রীড়াবিদ কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন না। রাতারাতি হাজার হাজার ক্রীড়াবিদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।

প্রসঙ্গত, গত বছর দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছিল, যে ৪১টি ক্রীড়া সংস্থা রয়েছে, তাদের ক’জন জাতীয় ক্রীড়ানীতি মেনে সংবিধান তৈরি করেছে তা জানাতে। এ বছর ২৬ মে দিল্লি হাইকোর্ট একটি নির্দেশে জিমন্যাস্টিক্স, হ্যান্ডবল, যোগাসন, টেনিস, ভলিবল, রোয়িং, গল্ফ-সহ বিভিন্ন খেলার সংবিধান খুঁটিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রককে। সেই কাজ এখনও চলছে।

সব মিলিয়ে, ভারতের বেশির ভাগ খেলাধুলোতেই এখন তৈরি হয়েছে সমস্যা। আদালতের হস্তক্ষেপ এবং কর্তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার চেষ্টা শুধু ফুটবল নয়, রয়েছে দেশের বেশিরভাগ খেলাতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন