বাংলায় আমার সম্মান কোথায়, প্রশ্ন অরিন্দমের

ডন-নাটকের পরে সিনিয়রদের নিয়ে আশঙ্কার মেঘ

বঙ্গ ক্রিকেটে ‘ডনের’ জমানা কি শেষের দিকে? আসন্ন রঞ্জি মরসুমে অরিন্দম দাসকে যদি আর বাংলা জার্সিতে ওপেন করতে না দেখা যায়, খুব আশ্চর্যের থাকবে না। দীর্ঘ পনেরো বছর বঙ্গ ক্রিকেটে কাটিয়ে ফেলার পর ময়দানের ‘ডন’ পরিকল্পনা নিচ্ছেন বাংলা ছাড়ার। অভিমানে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ০৩:১৮
Share:

গম্ভীর দল নির্বাচন সমস্যা। পরিবেশ অবশ্য হাল্কা। সিএবি-তে চার বঙ্গ নির্বাচক (বাঁ দিক থেকে) ইন্দুভূষণ রায়, সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অলোক ভট্টাচার্য এবং রাজু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যুগ্ম সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

বঙ্গ ক্রিকেটে ‘ডনের’ জমানা কি শেষের দিকে?
আসন্ন রঞ্জি মরসুমে অরিন্দম দাসকে যদি আর বাংলা জার্সিতে ওপেন করতে না দেখা যায়, খুব আশ্চর্যের থাকবে না। দীর্ঘ পনেরো বছর বঙ্গ ক্রিকেটে কাটিয়ে ফেলার পর ময়দানের ‘ডন’ পরিকল্পনা নিচ্ছেন বাংলা ছাড়ার।
অভিমানে?
‘‘না না অভিমানে নয়। তবে বাংলায় আমার সম্মানটাও কোথায়?’’ সোমবার সন্ধেয় ফোনে বলছিলেন অরিন্দম। জল্পনা চলছে যে, আসন্ন মরসুমে ত্রিপুরার হয়ে খেলতে দেখা যাবে তাঁকে। তিনি নাকি সিএবি-র কাছে ছাড়পত্রও চেয়েছেন। অরিন্দম নিজে অবশ্য কোথায় যাচ্ছেন বলতে চাইলেন না। ‘‘ওটা বলা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। ত্রিপুরা হতে পারে। অন্য কোথাও হতে পারে। তবে এটা ঠিক যে বাংলা ছাড়ার কথা আমি ভাবছি। এটুকু বলতে পারি, যত দিন খেলেছি বাংলার হয়ে, নিজের একশো শতাংশ দিয়ে খেলেছি।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘আরও কয়েকটা বছর খেলার ইচ্ছে আমার আছে। আর আমার জীবনে এটা তো নতুন নয়। আমি আগেও বাদ পড়েছি। প্রাথমিক দলেও অনেক সময় জায়গা হয়নি। কে জানে, আমার চেষ্টা হয়তো বাংলা ক্রিকেটকে সন্তুষ্ট করেনি।’’
গত কয়েক বছর ধরেই নানা রকম প্রশ্ন উঠত টিমে অরিন্দমের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। গত মরসুমেও তাঁর পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ছিল না টিম ম্যানেজমেন্ট। বেশ কিছু দিন ধরেই বলাবলি চলছিল যে, এ বার সময় হয়েছে অরিন্দমের বদলে কাউকে তুলে আনার। শোনা গেল, অরিন্দমকে রেখে দিতে সিএবিও খুব একটা আগ্রহী নয়। তারা টিমে চাইছে নতুন মুখ। চাইছে, উঠতিদের রঞ্জির ময়দানে নামিয়ে দিতে। বলা হচ্ছে, এখনও না তৈরি হলে আর হবে কবে?

Advertisement

যা হলে, আরও কয়েক জন সিনিয়র ক্রিকেটারের রঞ্জি-ভাগ্যকে মেঘাচ্ছন্ন দেখাতে পারে।

এ দিন ঋদ্ধিমান সাহাকে অধিনায়ক করে কেএসসিএ টুর্নামেন্টের টিম বেছে ফেলা হল। লক্ষ্মীরতন শুক্ল এখনও ফিট নন। তাই নেই। মনোজ তিওয়ারিকে রাখা হয়নি তিনি জিম্বাবোয়ে সফরের ভারতীয় টিমে সুযোগ পেয়েছেন বলে। অশোক দিন্দাকে রাখা হয়নি কারণ সিএবি বলছে, এই টুর্নামেন্টে তারা তরুণদের দেখে নিতে চাইছে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এটা আবার পরোক্ষে সিনিয়রদের বার্তা নয় তো?

Advertisement

চার সিনিয়র রঞ্জিতে কনফার্মড। লক্ষ্মী, মনোজ, ঋদ্ধি এবং দিন্দা। কিন্তু বাকিদের নিয়ে সংশয় আছে। যেমন শিবশঙ্কর পালের প্রত্যাবর্তনের কোনও সম্ভাবনা তেমন কেউ দেখছেন না। সৌরভ সরকার— বলাবলি হচ্ছে বাংলা পেসার এত দিন যা করেছেন দুর্দান্ত। কিন্তু এ বার কনিষ্ক শেঠদের সুযোগ দিতে হবে। অফস্পিনার সৌরাশিস লাহিড়ীকেও সম্পূর্ণ কণ্টকমুক্ত দেখাচ্ছে না। কোনও কোনও মহল বলছে, প্রজ্ঞান ওঝাকে (তিনি খুব সম্ভবত আসছেন) নিয়ে স্পিন আক্রমণের যে ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হচ্ছে, সেখানে সৌরাশিসের বদলে আমির গনি থাকলে ভাল। গনিকে তো আজ না হলে কাল খেলাতে হবে। তবে পাল্টা যুক্তিও আসছে। বলা হচ্ছে, গত বছর বাংলাকে এলিটে রেখে দেওয়ার পিছনে সৌরাশিসের অবদান অস্বীকার করা যায় না। তাঁকে কী ভাবে বাদ দেওয়া সম্ভব?

সোমবার একটা আকর্ষণীয় সিদ্ধান্ত নিলেন সিএবি যুগ্ম সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ক্লাবদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন যে, ময়দানের সমস্ত পিচকে ‘গ্রিন টপ’ বানাবেন। কিন্তু পরিস্থিতি যা, তাতে আসন্ন ৩ জুলাইয়ের রঞ্জি প্রাথমিক দল নির্বাচনী বৈঠকও আকর্ষণীয় হওয়ার কিছু কম ইঙ্গিত দিচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন