চন্দ্রেশ্বর প্রসাদ: ভারতের শেষ এশিয়াড পদকজয়ী টিমের ফুটবালর।
ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্টপার চন্দ্রেশ্বর প্রসাদ আর নেই। বুধবার দিল্লির হাসপাতালে নানা রোগভোগের পর তিনি মারা যান। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। রেখে গিয়েছেন স্ত্রী, দুই ছেলে আর দুই মেয়েকে। ষাট-সত্তর দশকের কলকাতা ময়দান কাঁপানো ডিফেন্ডার সি প্রসাদ এশিয়ান গেমসে ভারতের শেষ পদকজয়ী ফুটবল টিমের সদস্য ছিলেন। যদিও সেই ১৯৭০ ব্যাঙ্কক এশিয়াডে প্রসাদ অসুস্থ হয়ে পড়ায় জাপানের বিরুদ্ধে ব্রোঞ্জ জয়ের ম্যাচে অধিনায়ক নইমুদ্দিনের সঙ্গী স্টপার হতে পারেননি। তবে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান স্পোর্টিং— তিন বড় ক্লাবেই দীর্ঘ দিন চুটিয়ে খেলেছেন প্রসাদ। বড় ক্লাবে অধিনায়কত্ব করা ছাড়াও ১৯৭১-এ মারদেকা আর সিঙ্গাপুরে পেস্তা সুকান টুর্নামেন্টে ভারতীয় দলকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সে বছরই ‘অর্জুন’ সম্মানে ভূষিত হন প্রসাদ। কিন্তু পটনার ভূমিপুত্র প্রসাদ ফুটবল থেকে অবসরের পর একটা সময় আর্থিক সঙ্কটের কারণে ক্ষোভে ‘অর্জুন’ ফিরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
শ্যাম থাপার সংযোজন: আমরা একসঙ্গে সে ভাবে ক্লাব ফুটবল না খেললেও জাতীয় দলের হয়ে প্রচুর ম্যাচ খেলেছি। সত্তরে এশিয়াডে ব্রোঞ্জ জেতা সেই ভারতীয় দলে আমরা দু’জনেই ছিলাম। মারদেকাতেও একসঙ্গে খেলেছি। ডিফেন্ডার হিসেবে ওর সবচেয়ে বড় গুণ আমার মতে আন্তর্জাতিক মানের পাওয়ার। ট্যাকল, হেড, শট— যা-ই করত সেটাই খুব পাওয়ারফুল ছিল। বিশেষ করে হেডিংয়ে ভীষণ জোর ছিল। একেবারে জমাট ডিফেন্ডার বলতে যা বোঝায় সেটাই ছিল। ওকে টপকে যাওয়া ভীষণ কঠিন। আমি নিজে স্ট্রাইকার ছিলাম বলে সেটা আরও ভাল বুঝতাম। এখন রক্ষণে যে পাওয়ার গেমের আশায় ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান কিংবা আই লিগের অন্য টিমগুলো বড় চেহারার বিদেশি ডিফেন্ডারের পিছনে ছোটে, চন্দ্রেশ্বর প্রসাদ এখন খেললে সেটার দরকার পড়ত না। বড় টিমে ডিফেন্ডার হিসেবে ওরই হায়েস্ট পেমেন্ট হত, গ্যারান্টি। এ দেশের এমন এক আন্তর্জাতিক ফুটবলারেরও জীবনে যা ন্যায্য প্রাপ্তি হওয়া উচিত ছিল, তার সিকিভাগও পায়নি। এমনকী একবার ন্যায্য টাকার দাবিতে বিহার সরকারের বিরুদ্ধে অনশনে পর্যন্ত বসেছিল চন্দ্রেশ্বর প্রসাদ। গত বছর ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবার্ষিকী উৎসবের প্রথম অনুষ্ঠানেই চন্দ্রেশ্বর প্রসাদকে সংবর্ধনা পেতে দেখে খুব ভাল লেগেছিল।