লর্ডসে রানের চাপে দমবন্ধ পেসের আগুনে দগ্ধ ইংল্যান্ড

ব্রিটিশ মিডিয়ায় খবর ছিল, অস্ট্রেলীয় পেসারদের মারকাটারি ধার থেকে বাঁচতেই নাকি এমন পাটা উইকেট বানানোর নির্দেশ দিয়েছিল ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু সে আর হল কই?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৭
Share:

স্মিথ: ডাবল সেঞ্চুরির উচ্ছ্বাস। শুক্রবার লর্ডসে। ছবি: রয়টার্স।

ব্রিটিশ মিডিয়ায় খবর ছিল, অস্ট্রেলীয় পেসারদের মারকাটারি ধার থেকে বাঁচতেই নাকি এমন পাটা উইকেট বানানোর নির্দেশ দিয়েছিল ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু সে আর হল কই?

Advertisement

বিপক্ষের রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে যেমন দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম অ্যলিস্টার কুকদের, তেমন মিচেল জনসনদের আগুনে পেসের আঁচেও দগ্ধ ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া ৫৬৬-৮ তুলে ডিক্লেয়ার করার পর ইংল্যান্ড ১১ ওভারের মধ্যেই ৩০-৪ হয়ে যায়। কুক (২১) ও বেন স্টোকস (৩৭) অপরাজিত থেকে দিনের শেষে দলকে টেনে নিয়ে গেলেন ৮৫-৪ পর্যন্ত। কার্ডিফে শুধু দ্বিতীয় ইনিংসে দু’টি উইকেট পাওয়া জনসন লর্ডসে নতুন বল না পেয়েও তাঁর প্রথম দুই ওভারেই দুটো উইকেট তুলে নিলেন। ইয়ান বেল এই নিয়ে টেস্টে এগারো বার এক রানে আউট হয়ে ছুঁয়ে ফেললেন সচিন তেন্ডুলকরকে।

প্রথম দিন যেখানে একটার বেশি উইকেট পড়ল না, সেখানে দ্বিতীয় দিন পড়ল এগারোটা! লর্ডস পিচের এমন রহস্যময় চরিত্র দেখে অবাক বিশেষজ্ঞরাও। রিকি পন্টিং টিভি বক্সে বলছিলেন, ‘‘বেশ অবাক লাগছে। তবে ব্রড আর অস্ট্রেলীয় পেসাররা এই পরিবেশটাকে যে ভাবে কাজে লাগাল, তার প্রশংসা করতেই হবে।’’

Advertisement

দু’দিন আগে এমসিসি-র ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির বৈঠকে এমন পাটা বাইশ গজ নিয়ে এক লাইনও খরচ করেননি পন্টিং, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়রা। অথচ লর্ডস টেস্টের প্রথম দিন একটির বেশি উইকেট পড়তে না দেখে পন্টিং বলে ফেলেন, ‘‘উইকেট দেখে মনে হচ্ছিল গ্রাউন্ডসম্যানদের কাছে সরাসরি কেউ বলেছে, আমার অমুক রকমের পিচ চাই। এটা ঠিক নয়।’’ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া ইংরেজ স্পিনার গ্রেম সোয়ান তো টুইট করে বসেন, ‘‘নাগপুরের উইকেটটাকে কে, কখন লর্ডসে চালান করে দিল, কে জানে!’’ তবে দ্বিতীয় দিনই তাঁদের ভুল প্রমাণ করে দিলেন পেসাররা।

লর্ডসের প্রধান গ্রাউন্ডসম্যান মিক হান্টের বোধহয় মনে ছিল না এই মাঠেই কাউন্টি জীবনে বহু বছর কাটিয়েছেন অস্ট্রেলীয় ওপেনার ক্রিস রজার্স। হয়তো এও মনে ছিল না যে, গত মাসেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কিংসটনে ১৯৯ রানে আউট হয়ে যাওয়া স্টিভ স্মিথ এমন উইকেট পেলে তাতে রানের ফোয়ারা ছোটাতে পারেন।

হলও তাই। দু’জনেই মহানন্দে রান-ভোজনে মাতলেন। তাঁদের ২৮৪ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপেই টিম ৫৬৬ রানের পাহাড়ে। ৭৭ বছর পর এই প্রথম কোনও অস্ট্রেলীয় লর্ডসে ডাবল সেঞ্চুরি পেলেন (১৯৩৮-এ শেষ বার ২০৬* করেছিলেন বিল ব্রাউন)। তিনি স্টিভ স্মিথ। যিনি টেস্ট জীবন শুরু করেছিলেন লর্ডসে, প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরিও (২১৫) করলেন সেই ঐতিহাসিক মাঠে। চা-বিরতির আগে জো রুটের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে তিনি এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যাওয়ার দশ ওভার পরই ডিক্লেয়ার করে দেন মাইকেল ক্লার্ক। যিনি নিজে এ দিন মাত্র সাত রান করেছেন।

রজার্স (১৭৩) এ দিন সকালেই জেমস অ্যান্ডারসনের বল ডাক করতে গিয়ে হেলমেটে জোর আঘাত পান। কিছুক্ষণ পরই আগের দিনের রানের সঙ্গে ১৫ যোগ করে স্টুয়ার্ট ব্রডকে প্রথম উইকেট দিয়ে ফিরে যান। এখান থেকেই শিকার শুরু ব্রডের। যিনি ইনিংস শেষে ৪-৮৩। তবে তিনি একটু দেরিতে জাগলেন। ইংরেজ পেসারদের দ্বিতীয় দিনের এই বোলিং যে ইঙ্গিত দিয়ে গেল, সেটা যে ভুল নয়, তা-ই প্রমাণ করে দিলেন অস্ট্রেলীয় পেসাররা। এগারো ওভারের মধ্যেই চার ইংরেজ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন