সহবাগের মতো শট হল না একদমই

বীরুর ব্যাটিং সুলভ বীরত্ব এটাকে বলতে পারছি না। প্রথমত, ওর বোঝা উচিত ক্রিকেটার হিসেবে যতই ও সেরাদের একজন হোক, কোচের আবেদনকারী হিসেবে খুবই দুর্বল এক প্রার্থী।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৬
Share:

প্রার্থী: সহবাগকে (ডান দিকে) হারিয়ে কোচ হয়েছেন শাস্ত্রী। —ফাইল চিত্র।

বিরাট কোহালিদের কোচ নির্বাচন নিয়ে বীরেন্দ্র সহবাগের মন্তব্য শুনে আমার প্রথমেই মনে হচ্ছে বড্ড ‘লেট শট’। ওর যদি সত্যিই এত কিছু বলার থাকে তাহলে আগেই কেন মুখ খুলল না? এখনকার যুগে সোশ্যাল মিডিয়া এত শক্তিশালী। এবং, বীরু নিজে টুইটারে ভীষণই সক্রিয়। এ সব কথা তো আগেই সেখানে বলতে পারত।

Advertisement

তা না করে একটি টিভি চ্যানেলে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরে বিস্ফোরক কথা বলতে চাওয়াটা একদমই ভাল লাগছে না। আমি নিশ্চিত আরও অনেকের মনেই প্রশ্নটা জাগবে যে, নিজের শো জনপ্রিয় করার লক্ষ্য এর মধ্যে থাকল কি না। আমি নিজেও বিশেষজ্ঞ হিসেবে নানা দীর্ঘ দিন ধরে টিভি চ্যানেলে বসছি। যতদূর শুনছি, সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েই ‘শো’-তে বসেছিল বীরু। আর প্রথম শো-তেই একেবারে ছক্কা।

তবে বীরুর ব্যাটিং সুলভ বীরত্ব এটাকে বলতে পারছি না। প্রথমত, ওর বোঝা উচিত ক্রিকেটার হিসেবে যতই ও সেরাদের একজন হোক, কোচের আবেদনকারী হিসেবে খুবই দুর্বল এক প্রার্থী। তার কারণ, ওর সেভাবে কোনও কোচিং অভিজ্ঞতা নেই। কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবে আগের বারই শুধু মেন্টরের ভূমিকায় ছিল। মেন্টর আর কোচ এক নয়। তা-ও কিংগস ইলেভেন বাজে ফল করায় টুর্নামেন্ট শেষে সিনিয়র ক্রিকেটারদের ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করেছিল। সেটা মোটেও কোনও ভাল কোচের লক্ষণ নয়। এরকম রেকর্ড নিয়ে আসা কেউ কোচের পদ রাতারাতি জিতে যাবে, এটা ভাবাই তো বিলাসিতা।

Advertisement

আরও পড়ুন: চেন্নাইয়ে মহড়া শুরু যুযুধান দুই শক্তির, উড়বে কি বিতর্কের আগুন

সহবাগের আর একটা বক্তব্য হচ্ছে ওকে নাকি বোর্ডের কর্তারা আবেদন করতে বলেছিলেন। বিরাটও নাকি বলে, তুমি আবেদন করো। ও নাকি শাস্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছিল। তাজ্জব হয়ে যাচ্ছি দেখে যে, কোচের আবেদন করার জন্য এত লোকের কাছে ছোটাছুটি করব কেন? এই তো কয়েক দিন আগেই আমি দিল্লির কোচের পদের জন্য আবেদন করেছিলাম। আমি কি দিল্লির ক্যাপ্টেন গৌতম গম্ভীরকে জিজ্ঞেস করে আবেদন করেছিলাম নাকি? আমার মনে হয়েছিল, যোগ্য প্রার্থীদের একজন আমি। তাই আবেদন করেছিলাম। দিল্লির বন্ধুরা আমাকে অনেকে বলেছিল, আমি কোচ হব। তার পরেই হইনি। কে পি ভাস্করকে কোচ করা হয়েছে। আমি কিন্তু পরিস্থিতি তিক্ত করে তুলিনি। সহবাগ যতই মরিয়া থাকুক এই পদ পাওয়ার জন্য, সৌজন্য হারানো উচিত হবে না।

আমি জানি না, কোচ নিয়ে সিদ্ধান্তকারীদের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল না বলতে ও কী বোঝাতে চেয়েছে। হিন্দিতে বলেছে, ‘সেটিং নহি থা’। এর মানে কি আমাদের দেশের তিন কিংবদন্তি ক্রিকেটারের দিকে ও আঙুল তুলল? সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং ভি ভি এস লক্ষ্মণ মিলে তো কোচ নির্বাচন করেছে। ওরা তিন জনে সহবাগের প্রাক্তন সতীর্থও। কোচ নির্বাচন যারা করেছে, তাদের সঙ্গে ‘সেটিং’ ছিল না বলতে সচিনদেরই বোঝানো হয়।

আর সত্যি কথা বলতে কী, সহবাগ যখন কমেন্ট্রি করছিল ইংল্যান্ডে তখন তো শুনেছি সচিন, সৌরভ আর লক্ষ্মণও ওখানেই ছিল। সৌরভ-লক্ষ্মণ তো কমেন্ট্রি করছিল। মানে সহবাগের পাশাপাশি বসেই হয়তো ওরা কমেন্ট্রি করেছে। এত লোকের সঙ্গে কথা বলেছে বীরু আর ওর দুই প্রিয় প্রাক্তন সতীর্থ সৌরভ ও লক্ষ্মণের সঙ্গে কোচের পদের জন্য আবেদন করা নিয়ে আলোচনা করেনি, এটাও ভেবে নেওয়া কঠিন।

ব্যাট হাতে যার টাইমিংয়ে ভয়ঙ্কর বোলাররাও সব উড়ে যেত, মাইক হাতে সে বোধ হয় টাইমিংয়ে গন্ডগোল করে সহজ ক্যাচ দিয়ে গেল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন