যেটা ভেবেছিলাম সেটাই হল।
অশ্বিন-জাডেজার স্পিন বোমার সামনে বাংলাদেশের বাকি ব্যাটসম্যানরা দু’টো সেশনে উড়ে গেল শ’দেড়েক রানের মধ্যেই।
টেস্টটা যে মুশফিকুর রহিমরা হারছে, সেটা চতুর্থ দিনের শেষ দিকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বল স্পিন করার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল ওই সময়। এমন পিচে পঞ্চম দিনের উইকেটে অশ্বিন-জাডেজারা ঠিক কী করতে পারে, সেটা ভারতের দশ বছরের কোনও বাচ্চাও বলে দেবে। স্রেফ ব্যাটসম্যানদের পুঁতে ফেলা।
তবে বাংলাদেশের একটা ভাল দিক কিন্তু বলতেই হবে। দলটা এখন আস্তে আস্তে টেস্ট ক্রিকেটের উপযুক্ত হয়ে উঠছে। অন্তত ব্যাটিংয়ের দিক থেকে। এক ইনিংসে ছ’শোর কাছাকাছি রান তোলা, সাকিবের ডাবল সেঞ্চুরি এগুলো নিউজিল্যান্ড সিরিজে করে দেখিয়েই কিন্তু উপ্পলে নেমেছিল মুশফিকুররা। এই টেস্টেও তো দু’ইনিংসে দেড়শো ওভার ব্যাট করে দেখালো। মুশফিকুর সেঞ্চুরি করল, মাহমুদউল্লাহ দারুণ লড়াই করল। বিশ্বের এক নম্বর টিমের ডেরায় নেমে তাদের মনের মতো পিচে পাঁচ দিন ম্যাচ টেনে নিয়ে যাওয়াটাও কিন্তু কম কথা নয়। সে দিক থেকে বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। আরও টেস্ট খেলার সুযোগ পেলে আরও উন্নতি করবে এই টিমটা।
১৬-১৭ বছর আগে বাংলাদেশের ক্লাব টিমের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমার। সেখানে ওদের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা খেলত। ঠিক তার পর পরই তো ওরা টেস্টে খেলার মর্যাদা পেল। কিন্তু ওরা তৈরি ছিল না। ওয়ান ডে ক্রিকেটের মোড থেকে তখন বেরিয়ে আসতে পারেনি ওদের সেরা ক্রিকেটাররা। এখন ছবিটা অনেক পাল্টেছে। ইংল্যান্ডের মতো দলকেও কিন্তু দেশের মাঠে ওরা এখন হারাচ্ছে।
তবে উপমহাদেশের চেনা পরিবেশে উতরে গেলেও বিদেশে টেস্টে সাফল্য পেতে গেলে বাংলাদেশকে কিন্তু বোলিংয়ের দিকটা আরও নজর দিতে হবে। একজন স্ট্রাইক বোলার তুলে আনতে হবে। সে পেসার হোক বা স্পিনার। যে টানা নিখুঁত লেংথে বল করে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। আমাদের অশ্বিনের মতো। না হলে বিদেশের মাঠে কিন্তু বিপদে পড়ে যেতে হবে।
এখনও তো অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট পরীক্ষায় পড়েনি ওরা। ওখানকার বাউন্সি উইকেটে গতিময় বোলিংয়ের সামনে পড়ার অভিজ্ঞতা হলে বুঝবে টেস্ট ক্রিকেটের পরীক্ষা কত কঠিন!