রুপোর পদক হাতে হিমা। ছবি: পিটিআই।
একটি সোনা। ছ’টি রুপো। ২২টি ব্রোঞ্জ। জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের দশম দিন খুব খারাপ নয় ভারতের প্রাপ্তিযোগ। তবে বেশি আলোচনা পুরুষদের আটশো মিটারে সোনাজয়ী মনজিৎ সিংহকে নিয়ে। এই ইভেন্টে অবশ্য রুপোও জিতেছে ভারত। জিনসন জনসন।
এ দিকে, চারশো মিটারে রুপোজয়ী হিমা দাস এ দিন ২০০ মিটারে ফলস স্টার্টের জন্য বাতিল হয়ে যান। গুয়াহাটি থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, তার পর পরই তিনি এক ভিডিয়ো বার্তায় দাবি করেন, কোনও দু’জন ব্যক্তি নাকি তাঁর বিরুদ্ধে অসমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। সে খবর পেয়েই মনঃসংযোগ নষ্ট হয় এবং ২০০ মিটারে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন হিমা। ভিডিয়োয় এ সব বলার সময় অসমের এই অ্যাথলিটের দু’পাশে তাঁর দুই কোচ নিপন দাস ও নবজিৎ মালাকারও ছিলেন।
মনজিৎ হরিয়ানার অ্যাথলিট। বয়স ৩১। আজ পর্যন্ত কোনও জাতীয় প্রতিযোগিতায় সোনা জেতেননি। জাকার্তায় দৌড় শেষ করেছেন ১ মিনিট ৪৬.১৫ সেকেন্ডে। এটাই সেরা সময়। মনজিত কিন্তু এখনও কোনও চাকরি পাননি। সোনা জিতে অ্যাথলিট বলেছেন, ‘‘এত দিন ধরে নিজের দৌড়ের ভিডিয়ো দেখেছি। বোঝার চেষ্টা করেছি, কোথায় মার খাচ্ছি। এই ভুলগুলোই উদ্বুদ্ধ করেছে আরও ভাল ফলের জন্য।’’ হরিয়ানার জিন্দ গ্রামের এই কৃষক সন্তান যোগ করেছেন, ‘‘যে কোনও ভাবেই এখানে নিজের সেরাটা দিতে চেয়েছিলাম। অনেকেই জানেন না এখনও আমি বেকার। তবে আমার কোচ বলেছেন, বড় সাফল্য পেলে চাকরি আটকাবে না। দেখা যাক।’’
এ দিনের ব্যক্তিগত বিভাগে অন্য এক রুপোজয়ী মেয়ে পিঙ্কি বালহারা। তাঁর ইভেন্ট কুরাশ। যা এক ধরনের কুস্তি এবং মধ্য এশিয়ায় জনপ্রিয়। পিঙ্কি ফাইনালে উজবেকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে হারলেন ৫২ কেজি বিভাগে। এই খেলাতেই মালপ্রভা যাদব জিতেছেন ব্রোঞ্জ।
এমনিতে ভারতীয় শিবিরের মন খারাপ তিরন্দাজির কম্পাউন্ড বিভাগে ছেলে ও মেয়েদের রুপোতেই সন্তুষ্ট থাকতে হওয়ায়। বিশেষ করে ছেলেদের জন্য। তাঁদের লড়াইটা ছিল শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে। চূড়ান্ত লড়াইয়ের পরে স্কোর দাঁড়ায় ২২৯-২২৯। বিচারকরা শুটআউটের নির্দেশ দেন। এবং আবার টাই হয়। এ বার ২৯-২৯। কিন্তু সোনার ধাতবটি কোরীয়দের জন্যই ধার্য হয় কারণ বুলস আই-এ তাঁরা বেশি তির মেরেছিলেন। মেয়েরাও ফাইনালে হেরেছে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছেই। এখানেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। স্কোর ২২৮-২৩১।
ব্রোঞ্জ জিতলেও মঙ্গলবার পুরুষদের টেবল টেনিসে ভারতের সাফল্য ঐতিহাসিক। সেমিফাইনালে ভারত ০-৩ হারে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে। সাথিয়ান গণশেখরণ, শরৎ কমল ও অমলরাজ পেরে ওঠেননি কোরীয়দের বিরুদ্ধে। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে শক্তিশালী জাপানের বিরুদ্ধে তাঁদের ৩-১ জয় এক কথায় অবিশ্বাস্য। এই জয়ই এশিয়ান গেমসের ইতিহাসে টেবল টেনিসে ভারতের প্রথম পদকটি নিশ্চিত করে।
এশিয়ান গেমসের অ্যাথলেটিক্সে এ বারই প্রথম হল ৪x৪০০ মিটার রিলের মিক্সড বিভাগের দৌড়। যেখানে ভারতের ছেলে ও মেয়েরা জিতলেন রুপো। এই দলে কিন্তু হিমা দাসও ছিলেন। তাই এশিয়াড থেকে তাঁর দু’টি রুপো হয়ে গেল। পাশাপাশি দ্যুতি চন্দ ২০০ মিটারের ফাইনালে উঠলেন। পাশাপাশি বাংলার মেয়ে স্বপ্না বর্মন তাঁর পদক জয়ের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল করলেন। মেয়েদের হেপ্টাথলনের প্রথম দিন চারটি ইভেন্টের পরে স্বপ্না রয়েছেন ভাল জায়গায়। পাশাপাশি ভারতকে আশায় রেখেছে স্কোয়াশ দল।