খলনায়ক: এই সেই মাঠ। গুয়াহাটির ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামের এই দশাই ছিল শেষ ম্যাচে। মাঠের কোনও উন্নতি হয়নি বলেই জানাল ফিফা। ফাইল চিত্র
ব্রাজিল-ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালে ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে জড়ো হয়ে প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটাতে বলছে গুয়াহাটির এফএম চ্যানেলগুলি!
কারণ শুনে অবাক শহরবাসী। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এমনই বিজ্ঞাপন প্রচারের চুক্তি ছিল রেডিও সংস্থার সঙ্গে। খেলা কলকাতায় চলে গেলেও তা-ই বদলায়নি চুক্তির শর্ত!
ম্যাচ সরে যাওয়ার আমজনতার চোখে ‘খলনায়ক’ স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষও। ফুটবলকর্তাদের একাংশ কিন্তু দুষছেন মাঠ নিয়ে ব্রাজিলের আপত্তিকেই। তাঁদের মতে, গত কাল ও আজকের রোদে খেলার উপযুক্ত হয়ে উঠত মাঠ। বিদেশি দলের আশঙ্কাই বঞ্চিত করল গুয়াহাটিকে।
২০০৭ সালে ন্যাশনাল গেমসের সময় থেকে ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামের মাঠের সঙ্গে জড়িত সাইয়ের আঞ্চলিক অধিকর্তা সুভাষ বসুমাতারি। তাঁর বক্তব্য, ফিফার মান অনুযায়ীই সব তৈরি করা হয়েছে। মাঠে রয়েছে উন্নত নিকাশি ব্যবস্থাও। কিন্তু ৪০ ঘণ্টা বৃষ্টির পরে বিশ্বের যে কোনও মাঠে খেলা হলে তার অবস্থা শোচনীয় হতে বাধ্য। গুয়াহাটির স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা না হলে সেমিফাইনালে সমস্যা হতো না। মাঠকর্মীদের দাবি, রবিবার থেকে বৃষ্টি হয়নি। সোমবার ও আজ রোদ ছিল। দিনরাত পরিশ্রম করে মাঠ প্রায় শুকিয়ে ফেলেছিলেন তাঁরা। তাঁদের কথায়— ‘এখানে খেলাতে ফিফার আপত্তি ছিল না। কিন্তু বিদেশি দলের কোচ-ম্যানেজাররা ঝুঁকি নিতে চাননি।’ যদিও মঙ্গলবার রাতে ফের তুমুল বৃষ্টি নেমেছে গুয়াহাটিতে। ফলে মাঠের অবস্থা মুনর্মুষিক।
অসম ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সচিব অঙ্কুর দত্ত বলেন, ‘‘খেলা বাতিলের জন্য দায়ী বৃষ্টিই। সরকার বা ফিফাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।’’ স্থানীয় ফুটবল সংগঠন, ফুটবলপ্রেমীরা অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ, স্টেডিয়ামের পরিকাঠামোয় গলদ থাকাতেই মাঠ থেকে জল বেরতে পারেনি। সরগরম অসমের রাজনীতিও। কংগ্রেস কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারকে। প্রশাসন অবশ্য দাবি করেছে, ফিফা আয়োজিত বিশ্বকাপে সরকার ইচ্ছামতো হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
তার পরেও মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের উদ্যোগে মাঠ শুকোতে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছিল। রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দু’দলের খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও অন্যদের জন্য শহরে পাঁচতারা তাজ হোটেলের ২৫টি ঘর ‘বুক’ করা হয়েছিল। খেলা কলকাতায় সরে যাওয়ায় সে সব বুকিং বাতিল হয়।