চাকরি গেল বখতাবরের।
সন্তান দত্তক নেওয়ার জের! আটলেটিকো দে কলকাতা থেকে ছাঁটাই হয়ে গেলেন গত দু’মরসুমের আইএসএলের সফলতম গোলকিপার কোচ দেশি বখতাবর।
এডেল বেটে, অমরিন্দর সিংহের মতো কিপারকে তারকা করে তোলার পিছনে বড় ভূমিকা ছিল আন্তোনিও হাবাসের এই সহকারীর। তাঁকে মাদ্রিদে অনুশীলন চলাকালীনই ছেঁটে ফেলতে বাধ্য হল এটিকে। চমকপ্রদ কারণে। পদত্যাগী কোচ হাবাসের বিদেশি সব সহকারীকে বাদ দিলেও আটলেটিকো মাদ্রিদের কর্তারা কলকাতার কিপার কোচ দেশিকে রেখে দিয়েছিলেন। গত দু’মরসুমে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য।
যিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি মেয়েকে সম্প্রতি দত্তক সন্তান নিয়েছেন। ওই দেশের নিয়মানুযায়ী, সন্তান দত্তক নিলে তার যাবতীয় আইনি কাজকর্ম সারতে অন্তত তিন-চার মাস সময় লাগে। দেশি তাই চেয়েছিলেন, সরাসরি সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। কিন্তু চিফ কোচ হোসে ফ্রান্সিসকো মলিনা তাতে রাজি হননি। তিনি কলকাতার কর্তাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, প্রি-সিজনে যদি শিল্টন পাল, দেবজিৎ মজুমদারের জন্য কিপার কোচ কাজ না করতে পারেন তা হলে তাঁকে আর প্রয়োজন নেই। শেষ পর্যন্ত কোচের কথা মেনেই স্প্যানিশ কিপার কোচ লুই ভিসেন্তেকে নতুন কিপার কোচ করে দিল কলকাতা। সরকারি ভাবে দু’-একদিনের মধ্যে যা ঘোষিত হবে।
কিপার কোচ ছাড়া হাবাসের উত্তসূরি মলিনার কাছে আরও একটা বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ছয় জন ভারতীয় ফুটবলারের মাদ্রিদ ক্যাম্পে দীর্ঘ অনুপস্থিতি। অর্ণব মণ্ডল, ডিকা-সহ ইস্টবেঙ্গলের পাঁচ ফুটবলারের সঙ্গে এটিকের যে চুক্তি আছে তাতে কলকাতা লিগের ডার্বি খেলে তাঁরা যাবেন স্পেনে। ডার্বি নিয়ে যা টালবাহানা চলছে, তাতে সেটা পিছিয়ে গেলে ওই ছয় ফুটবলারকে আর না-ও পাঠানো হতে পারে মাদ্রিদে। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, ৭ সেপ্টেম্বর ডার্বি হলে ৯ সেপ্টেম্বর অর্ণবদের মাদ্রিদ পাঠানো হবে। জাতীয় দলে থাকা প্রীতম কোটালের অবশ্য তার আগেই যোগ দেওয়ার কথা সেখানে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ১৮ তারিখ শেষ হয়ে যাচ্ছে মাদ্রিদ শিবির। তা হলে তো মাত্র দিন সাতেকের বেশি প্রি-সিজন ট্রেনিং করতে পারবেন না ছয় ভারতীয় ফুটবলার। বিস্মিত মলিনা ই-মেলে এটিকে কর্তাদের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কলকাতার ডার্বিটা কী বুঝতে পারছি না। তার জন্য আমাদের ফুটবলার আটকে আছে কেন সেটাও বুঝছি না। আমার অনুশীলনে যদি এত ফুটবলার না থাকে তা হলে টিমের স্ট্র্যাটেজি তৈরি করব কী করে?’’ কর্তারা নতুন চিফ কোচকে আশ্বস্ত করেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই ফুটবলারদের পাঠানোর চেষ্টা করবেন মাদ্রিদে।
হাবাসের জায়গায় এটিকের কোচ হিসেবে যিনি এসেছেন সেই মলিনা ফুটবলারজীবনে গোলকিপার ছিলেন। তাঁর কাছে এটিকে-তে কোচিং করতে আসাটা চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে হাবাসের মতো সফল ভাবমূর্তির জায়গায়। সে জন্য হেল়ডার পস্টিগা, হিউম, দ্যুতিদের নিয়ে মাদ্রিদে দু’বেলা কঠোর অনুশীলন চালাচ্ছেন মলিনা। ব্যবহার করছেন গত মরসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালিস্ট আটলেটিকো মাদ্রিদ ক্লাবের পরিকাঠামো। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে বিধাননগর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনুশীলন করবে মলিনার এটিকে। তবে গত দু’মরসুমের মতো এ বার হোম ম্যাচের আগের দিন নতুন ঘরের মাঠ রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে হিউমরা অনুশীলন করবেন কি না তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি এটিকে শিবিরে।