ড্র করলেই আজ ফাইনাল

মলিনারা এক গোল মাথায় না রেখে নামবেন

অর্ণব মণ্ডলের না থাকাটা তাঁর টিমের পক্ষে বড় ক্ষতি, স্বীকার করে নিচ্ছেন। আবার দিয়েগো ফোরলান বিপক্ষে খেললেন কী খেললেন না তা নিয়েও মাথাব্যথা নেই তাঁর, সেটাও জানিয়ে দিচ্ছেন সোজাসুজি-ই। মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে নামার আগের দিন জোসে মলিনা বলে দিলেন, ‘‘অর্ণব আমার টিমের অন্যতম অপরিহার্য ফুটবলার।’’

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:০৭
Share:

নজরে মুম্বই। ফুটবলারদের নিয়ে কোচের ক্লাস।-নিজস্ব চিত্র

অর্ণব মণ্ডলের না থাকাটা তাঁর টিমের পক্ষে বড় ক্ষতি, স্বীকার করে নিচ্ছেন।

Advertisement

আবার দিয়েগো ফোরলান বিপক্ষে খেললেন কী খেললেন না তা নিয়েও মাথাব্যথা নেই তাঁর, সেটাও জানিয়ে দিচ্ছেন সোজাসুজি-ই।

মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে নামার আগের দিন জোসে মলিনা বলে দিলেন, ‘‘অর্ণব আমার টিমের অন্যতম অপরিহার্য ফুটবলার। ও-র না থাকাটা অবশ্যই দলের পক্ষে ক্ষতি।’’ কলকাতায় গত শনিবার ম্যাচ খেলতে নামার আগে দলের সবথেকে ধারাবাহিক ডিফেন্ডারের চোট পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বাইরে চলে যাওয়া নিয়ে মুখ খোলেননি এটিকে কোচ। হয়তো টিম চাপে পড়ে যেতে পারে এটা ভেবে। প্রশ্ন করায় বলেছিলেন, ‘‘দেখতে হবে চোটটা কোথায়? এখনই কিছু বলা যাবে না।’’

Advertisement

মুম্বইতে গিয়ে অর্ণবের না থাকা নিয়ে তাঁর হতাশার কথা প্রকাশ্যে আনলেও, ফোরলানকে নিয়ে যে মলিনার মনোভাব বদলায়নি তা বুঝিয়ে দিয়েছেন এটিকে কোচ। রবীন্দ্রসরোবরে প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে মলিনা মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘মেসিকেই লা লিগার ম্যাচে মার্কিং করিনি। আর ফোরলান কে?’’ এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ফোরলান সম্পর্ক উঠতেই বেশ উত্তেজিত হয়ে হিউমদের কোচ বলে দিয়েছেন, ‘‘কোনও একজন ফুটবলারকে নিয়ে আমি কখনও আলাদা ভাবি না। টিম নিয়ে ভাবি। তা হলে ফোরলান খেলল না বাইরে থাকল তা নিয়ে ভাবতে যাব কেন? ও মাঠে থাকা অবস্থাতেই আমরা গোল করে প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচ জিতেছি। ওর জায়গায় কে খেলবে জানি না। যে-ই খেলুক তাঁকে আটকাবে আমার রক্ষণ। আমরা জেতার জন্য তৈরি।’’

সোমবার সকালেই মুম্বই গিয়েছে আটলেটিকো দে কলকাতা। দলের সঙ্গে যাননি অর্ণব। অস্ত্রোপচারের জন্য কলকাতায় রয়ে গিয়েছেন টানা তিন বছর এটিকে-তে খেলা একমাত্র বঙ্গ ডিফেন্ডার। এ দিন সন্ধ্যার অনুশীলনে ম্যাচ খেলাননি স্প্যানিশ কোচ। হালকা দৌড়োদৌড়ি, ‘বল চোর চোর খেলা’ বা পাসিং ফুটবল এবং হালকা স্ট্রেচিং করেই অন্ধেরি স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে টিম হোটেলে ফিরে গিয়েছেন হিউম-পস্টিগারা। ফলে বোঝা যায়নি টিমে কোনও পরিবর্তন হবে কী না। হয়তো মুম্বই কোচ আলেজান্দ্রো গুইমারেসকে ধোঁয়াশায় রাখার জন্যই নিজের টিম দেখাতে চাননি মলিনা। তবে এটিকে হোটেলে ফোন করে যা ইঙ্গিত পাওয়া গেল তাতে রক্ষণ নিয়ে সাপোর্টিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনা করলেও টিমে পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। মলিনার এক সহকারী ফোনে বললেন, ‘‘হাবাসও কী টিম করবেন কাউকে আগে বলতেন না। মলিনাও বুঝতে দেন না। জুয়েল রাজাকে যে কলকাতার সেমিফাইনালে প্রথম একাদশে রাখা হবে বা দেবজিৎ মজুমদারের জায়গায় গোলকিপার হিসাবে ড্যানিয়েল মায়ো খেলবেন, সেটা আমরা জেনেছিলাম সকালের টিম মিটিং-এ।’’

পরিস্থিতি যা তাতে আজ মঙ্গলবারের ম্যাচ ড্র করলেই কোচিতে ফাইনাল খেলার টিকিট পেয়ে যাবেন দ্যুতি-বোরহারা। তাঁর টিম ঘরের মাঠের প্রথম সেমিফাইনালে জিতে সামান্য অ্যাডভান্টেজ পজিশনে আছে মানলেও তা যাতে টিমের উপর প্রভাব না ফেলতে পারে সে জন্য মলিনা সতর্ক করেছেন পুরো টিমকে। দলের ফোকাস ঠিক রাখতে। সাংবাদিকদের সামনে এসেও বলে দিয়েছেন, ‘‘কলকাতার হোম ম্যাচ আর মুম্বইয়ের অ্যাওয়ে ম্যাচের মধ্যে কোনও পার্থক্য দেখছি না। দু’টো ম্যাচ জিতেই ফাইনালে যেতে চাই আমরা। এই ম্যাচ না জিতলে ছিটকে যেতে হবে, ভেবে মাঠে নামতে হবে আমাদের। সেটা সবাইকে বলেওছি।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে রক্ষণকে আরও পোক্ত করার কথা মাথায় রাখছেন কী না? প্রশ্ন শুনে হাবাসের উত্তরসূরী বলে দেন, ‘‘ম্যাচটা আমরা জিততে চাই। আমরা ফাইনালে যেতে চাই ড্র করে নয়, জিতেই। আগের ম্যাচ আমরা যে মনোভাব নিয়ে খেলেছি। সেটার তাই কোনও পরিবর্তন হবে না।’’

ফোরলানের জায়গায় সনি নর্ডিকে খেলাতে পারে মুম্বই। সে রকম ইঙ্গিত দিয়েছেন সুনীল ছেত্রীদের কোস্টারিকান কোচ। যা শুনে মলিনার মন্তব্য, ‘‘আমরা টিম হিসাবে খেলি। ফোরলানের জায়গায় কে খেলবে সেটা নিয়ে ভাববেন ওদের কোচ। আমি ভাবছি আমার টিম নিয়ে।’’ এটিকে গত দু’বার সেমিফাইনালের অ্যাওয়ে ম্যাচে গোল করতে পারেনি।

এ বার কী তার পুনরাবৃত্তি হবে? পস্টিগা-জাভিলারাদের কোচ বলে দেন, ‘‘ইতিহাস নিয়ে আমি কখনও মাথা ঘামাই না। যা হবার হয়ে গেছে। কাল নতুন ম্যাচ। নতুন লড়াই। আমরা যে কলকাতায় ম্যাচ জিতে এসেছি সেটা তাই মাথায় রাখতে চাই না। শূন্য থেকেই শুরু করব আমরা।’’

রবিবার রাতে পুরো কোচিং টিমকে নিয়ে কেরল-দিল্লি ম্যাচ দেখতে বসেছিলেন মলিনা। ফুটবলারদের উপরও নির্দেশ ছিল ম্যাচটা দেখার। তাঁকে প্রশ্ন করা হল, দু’টো টিমের মধ্যে ফাইনালে কাকে চান? মলিনা বলে দেন, ‘‘আমি ফাইনালে উঠতে চাই। কিন্তু ফাইনাল নিয়ে এখনই ভাবতে রাজি নই। আমাদের এখন একমাত্র লক্ষ্য মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আবার জেতা। মঙ্গলবারই ঠিক হবে আমরা ফাইনালে যাব কি না। এই হার্ডলটা পেরোনোর পর পরের প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবব। যে-ই পড়ুক সমস্যা নেই।’’

বোঝাই যায়, মুখে না বললেও কোচি-র দরজায় কড়া নাড়ার মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন মলিনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন