সমস্যা করল বাঁ-হাতি পেস

মঙ্গলবার গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে বাঁহাতি পেসারর জেসন বেহরেনডর্ফের প্রথম আটটা বলেই ভারতের এই ব্যাটিং-ধসের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০৪
Share:

এ কি সেই বাইশ গজ, যেখানে গত বছর রঞ্জি ট্রফিতে ৩৬ রানে হিমাচল প্রদেশকে অল আউট করে দিয়েছিল হায়দরাবাদ? ভারতের ১১৮ রানে শেষ হয়ে যাওয়া দেখতে দেখতে তেমনই মনে হচ্ছিল বটে। কিন্তু যখন অস্ট্রেলিয়া পাল্টা ব্যাট করতে নেমে অনায়াসে ম্যাচটা বার করে নিল, তখন কিন্তু তা মনে হচ্ছিল না। ব্যাটিংয়ে এই ধস নামার জন্য বিরাট কোহালি এই উইকেটকে দায়ী করবে না, আশা করি। বিরাটদের একটা করে উইকেট পড়ছিল, আর মনে হচ্ছিল আমাদের ব্যাটসম্যানদের পক্ষে এমন ভুল কী করে সম্ভব?

Advertisement

মঙ্গলবার গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে বাঁহাতি পেসারর জেসন বেহরেনডর্ফের প্রথম আটটা বলেই ভারতের এই ব্যাটিং-ধসের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। তিনটে বাউন্ডারির পর যে তিন-তিনটে উইকেট নেয় ও, তাতে ভারত শুরুতেই একটা জব্বর হোঁচট খায়। খেলাটা পঞ্চাশ ওভারের হলে কিছুটা ধরে খেলে এই ধাক্কাটা সামলে নেওয়া যেত হয়তো। কিন্তু এ টি-টোয়েন্টি। এখানে হোঁচট খেয়েছ, তো মরেছ। ভুল শোধরানোর সুযোগ এই ফর্ম্যাট কমই দেয়।

আরও পড়ুন: নজির গড়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয় শ্রীলঙ্কার

Advertisement

খেলার আগেই এ দিন বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় উইকেট স্যাঁতসেতে ছিল। আবহাওয়াও সে রকমই। এই কন্ডিশনই কাজে লাগিয়ে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের কয়েকজন ব্যাটসম্যানের আউট হওয়া দেখে মনে হল, টানা সাফল্যে ওদের শিবিরে বোধহয় আত্মতুষ্টি ঢুকে পড়েছে।

রোহিত শর্মার কথাই ধরুন। ও যে ভাবে আউট হল, তা দেখে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মহম্মদ আমিরের বলে ওর আউটটা মনে পড়ে গেল। প্রায় একই রকম বলে এলবিডব্লিউ হয় ও। বাঁহাতি পেসারের এই বলে রোহিতের আরও হোমওয়ার্ক দরকার বোধহয়। ক্রিকেটীয় ভাষায় এই বলটা ‘অফ দ্য সিম’ এমন ভিতরে ঢুকে আসে যে, ব্যাটসম্যান ধোঁকা খায়।

অ্যাডাম জাম্পার গুগলিতে কেদারের বোল্ড হওয়াটাও খুব খারাপ। ধোনিও আগে থেকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে জাম্পার ঘূর্ণিতে ধোঁকা খায়। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের ফলেই এমন হয়। ধোনিও সেই ভুলই করল! বিরাটের আউটটা দুর্ভাগ্যজনক। ডিফেন্স করতে গিয়ে ও ফাঁদে পড়ে যায়। ওর আউটটাই শেষ পর্যন্ত টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়।

তবে ডেভিড ওয়ার্নার শিখর ধবনের যে ক্যাচ নেয়, সেটাই দিনের সেরা মুহূর্ত। আকাশে ওঠা বলটা মিড অন থেকে প্রায় দশ-বারো গজ পিছিয়ে নিখুঁত আন্দাজ করে বলটা নেয় ওয়ার্নার। এই একটা ক্যাচেই বুঝিয়ে দেয় ও কেমন জাত ক্রিকেটার।

ফিঞ্চ, ওয়ার্নার ফিরে গেলেও বড় রানের চাপ না থাকায় ট্রাভিস হেড, মোয়েজেস এনরিকেদের হাল ধরতে অসুবিধা হয়নি। তা ছাড়া কুলদীপ যাদবকে ওরা আজ খুব ভাল ‘রিড’ করেছে, যা ওদের আগেই করা উচিত ছিল। বেশি সুইপ করতে যায়নি ওরা কুলদীপকে। সোজাই খেলার চেষ্টা করেছে। এটা ওদের হোমওয়ার্কের ফল। আর গুয়াহাটির এই কন্ডিশনে পরে বোলিং করা তো অসুবিধাজনক ছিলই। ঠিকমতো গ্রিপ করা বা স্পিন করানো, দুটোতেই সমস্যা হয়। এটা আন্দাজ করেই টস জিতে আগে ব্যাট করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওয়ার্নার। টস জেতা ওদের পক্ষে ভালই হয়েছে।

এই বোলিং-ফিল্ডিংয়ে চেনা সেই সাহসী অস্ট্রেলিয়াকে ফের দেখা গেল। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে এখন সন্ধিক্ষণ চলছে। তাই ওঠা পড়া চলবেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন