রাবাদাকে চুম্বন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক দু’প্লেসির। সোমবার ওয়াকায় মিচেল স্টার্ক আউট হওয়ার পরে। ছবি: রয়টার্স
প্রথম টেস্টের শেষ দিন ওয়াকায় অস্ট্রেলিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দিলেন কাগিসো রাবাদা। একুশ বছরের পেসার দ্বিতীয় ইনিংসে আহত ডেল স্টেইনের অভাব ঢেকে দিয়ে শেষ করলেন ৫-৯২ নিয়ে। রাবাদাদের দাপটে ৫৩৯ রানের দুঃসাধ্য টার্গেট তাড়ায় নামা অস্ট্রেলিয়ার লড়াই থেমে গেল ৩৬১ রানে। এ দিকে, ওয়াকায় জেতার হ্যাটট্রিক করে ফেলল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৮ ও ২০১২-র পর এটা তাদের টানা তৃতীয় জয়। ১৭৭ রানে জিতে এই মাঠে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটাও ধরে রাখল তারা।
এ দিন সকালে উসমান খোয়াজা-মিচেল মার্শ জুটি ৫০ তোলার পর মার্শকে সরিয়ে প্রথম ধাক্কাটা রাবাদাই দেন। রাবাদার ইয়র্কার মার্শের প্যাডে লেগেছিল। আম্পায়ার আলিম দার প্রথমে নট আউট দেন। রিভিউ চেয়ে সফল হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। গতকাল তিন উইকেট নেওয়া রাবাদার এ দিনের শেষ শিকার মিচেল স্টার্ক। মাত্র ন’টা টেস্টে চতুর্থ বার পাঁচ উইকেট নিলেন রাবাদা। যাঁর মধ্যে ডেল স্টেইনের উত্তরসুরীকে দেখতে পাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। খোয়াজা (৯৭) আর পিটার নেভিল (অপরাজিত ৬০) মাঝে প্রতিরোধ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। দুমিনির বলে খোয়াজা এলবিডব্লিউ হওয়ায় সেটাও ভেঙে যায়। এর পর ফিল্যান্ডার ও বাভুমা একটি করে উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারের দিকে ঠেলে দেওয়ার পর অভিষেকেই নাথান লায়নকে ফিরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় নিশ্চিত করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্পিনার কেশব মহারাজ। চা বিরতির আগেই।
ওয়াকার এই বিপর্যয় কিছুটা দুশ্চিন্তায় ফেলতে বাধ্য অস্ট্রেলিয়াকে। স্টিভ স্মিথরা টানা চতুর্থ টেস্ট হারলেন। জুলাই-অগস্টে শ্রীলঙ্কার মাটিতে তিন টেস্টের সিরিজ ০-৩ হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। এ বার ঘরোয়া সিরিজেও উদ্বোধনী টেস্ট হারল। যা ১৯৮৮-র পর আর কখনও ঘটেনি। হোবার্টে শনিবার থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্টে শন মার্শকে পাবে না অস্ট্রেলিয়া। তাঁর আঙুল ভেঙেছে। তাঁর পরবর্তে দলে এসেছেন জো বার্নস। নবাগত ক্যালাম ফার্গুসনকেও স্কোয়াডে রাখা হয়েছে।
দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫৪০ তুলে ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করার পর স্মিথ বলেছিলেন, ‘‘যে কোনও টার্গেটই তাড়া করা সম্ভব।’’ এ দিন অবশ্য স্বীকার করেন, প্রথম ইনিংসে ১৫৮-১ থেকে ২৪৪ রানে গুটিয়ে যাওয়াটাই তাঁদের আসল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বলেন, ‘‘প্রথম ইনিংসে ওদের ২৪২ রানে শেষ করার পর উইকেট না হারিয়ে ১৫০ তোলা পর্যন্ত আমরা চালকের আসনে ছিলাম। কিন্তু ওপেনাররা যে জমি তৈরি করেছিল, সেটা কাজে লাগাতে পারিনি আমরা।’’
দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্য কোনও ভুলই করেনি নিজেদের পয়া মাঠে। প্রথম ইনিংসে বেশি রান তুলতে না পারার খামতি দ্বিতীয় ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরিতে ঢেকে দেন দুমিনি ও এলগার। বাকিটা করে দেন রাবাদা।
মাঠেই যাঁর গালে আদরের চুম্বন করে বিজয়োৎসব শুরু করলেন দক্ষিণ আফ্রিকা ক্যাপ্টেন ফাফ দু’প্লেসি!