বোয়ার চোট। ভরসা সেই সনিই।
মোহনবাগান ফুটবলাররা এই মুহূর্তে নিজেদের সামনে একটা অদৃশ্য বোর্ড ঝুলিয়ে রাখছেন— পরের তিন ম্যাচ থেকে চাই ৯ পয়েন্ট। সনি নর্ডিরা যদি পরের আড়াই সপ্তাহে তিনটে অ্যাওয়ে ম্যাচই জেতেন, তা হলে তাঁরা ১৭ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে আই লিগের বাকি দশ দলের অনেকটাই ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবেন। এই মুহূর্তে লিগের পয়েন্ট টেবলের যা অবস্থা তাতে বেঙ্গালুরু এফসি যদি তাদের বাকি পাঁচটা ম্যাচই জেতে, তা হলেও ৪৩ পয়েন্টের বেশি পৌঁছতে পারবে না। ইস্টবেঙ্গলও বাকি পাঁচ ম্যাচের প্রতিটা জিতলেও সর্বাধিক ৪১ পয়েন্টে শেষ করবে। তবে সেটাও অঙ্কের বিচারে সম্ভব নয়। কারণ বেঙ্গালুরু-ইস্টবেঙ্গল নিজেদের মধ্যে খেলা বাকি আছে। বাকি আছে মোহনবাগান-বেঙ্গালুরু ম্যাচও।
এই অবস্থায় সঞ্জয় সেনের বাগান সামনের মুম্বই, পুণে আর গোয়ার মাটি থেকে পুরো ৯ পয়েন্ট তুলে আনলে সেক্ষেত্রে তাদের খেতাবের জন্য আর চার পয়েন্ট পেলেই খুব সম্ভবত চলবে। এবং সবুজ-মেরুন শিবির মনে করছে, পশ্চিম ভারত সফর শেষে মধ্য মে-তে পরপর দু’টো হোম ম্যাচ থেকে তারা সেই বাকি চার পয়েন্টও তুলে নিতে পারবে।
আর তাই এখন মুম্বই এফসি, ভারত এফসি এবং স্পোর্টিং ক্লুবের বিরুদ্ধে তিনটে অ্যাওয়ে ম্যাচের প্রস্তুতিতে কী বিশেষত্ব থাকছে বাগান কোচের?
‘‘একবারে বাকি সব ম্যাচ নিয়ে ভাবতে গেলে ফোকাস নষ্ট হয়ে যেতেই পারে। তাই আমি এই মুহূর্তে শুধু মুম্বইকে হারানোর স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছি,’’ এ দিন বললেন সঞ্জয়। সঙ্গে বাগান কোচ আরও যোগ করলেন, ‘‘ওরা পুরোটাই নেগেটিভ ফুটবল খেলে। বিপক্ষ টিমকে খেলতে দেয় না। মানে আলট্রা ডিফেন্সিভ খেলার সঙ্গে সঙ্গে বিপক্ষ ফুটবলারদের খারাপ ভাবে মারতেও থাকে। খেলাটাকে এত স্লো করে দেয় যে, বিপক্ষ অধৈর্য হয়ে মাঝেমধ্যে কিছু একটা ভুল করে বসে। আর সেটার সুবিধে নিয়ে ওরা কাউন্টার অ্যাটাক করে। আমার ছেলেদের এই সব ক’টা ব্যাপার নিয়েই সতর্ক করে চলেছি। বিপক্ষের ফাঁদে পা না দিয়ে মাঠে মাথা ঠান্ডা রাখতে বলেছি।’’
চোটের জন্য মুম্বই ম্যাচেও বোয়াকে সম্ভবত পাওয়া যাবে না। লাল কার্ড-জনিত সাসপেনশনে পাওয়া যাবে না আর এক ফরোয়ার্ড বলবন্তকেও। আই লিগ যখন বিজনেস এন্ডে ঢুকে পড়েছে, তখন খেতাবের এক নম্বর দাবিদার টিমের কাছে যেন প্রধান প্রতিপক্ষের নাম ফুটবলারদের চোট আর কার্ড সমস্যা! যদিও কোচ তা পুরোপুরি মানতে চাইছেন না। ‘‘ফুটবলে প্লেয়ারের চোট হবেই। তা ছাড়া আমাদের টিমে কেউ অপরিহার্য নয়। সনিকে ছাড়াও তো জিতেছি। বলবন্ত আর বোয়াকে ছাড়াও আগের পুণে ম্যাচ জিতলাম। আমরা টিম গেম খেলছি। সেটা দিয়েই সব সামলে নিতে হবে’’
তবে তাঁর টিমের তিন সিংহের (শেহনাজ-বিক্রমজিৎ-বলবন্ত) মাঠে মাথা গরম করে কার্ড দেখা নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট সঞ্জয়। বললেন, ‘‘টিম যখন ভাল জায়গায় রয়েছে তখন কার্ড দেখাটা বোকামি। ওদের তাই বারবার বলছি মাথা ঠাণ্ডা রাখো।’’
তা হলে কি ঠান্ডা মাথায় টিম গেমের সৌজন্যে গোয়াতেই আই লিগ খেতাব কার্যত পকেটে পুরে ফেলবে বাগান? ভারতের যে ভূখণ্ডে আই লিগ খেতাব সবচেয়ে বেশি গিয়েছে!