চুনীদা শুধরে নিন আর বলুন পীঠস্থান মোহনবাগানই

‘ইস্টবেঙ্গলই ফুটবলের পীঠস্থান’ আনন্দবাজারে চুনীদার এই মন্তব্য দেখে আমি বিস্মিত। চমকে গিয়েছি। প্রথমে তো বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, ওনার মতো মানুষ এ রকম কথা বলতে পারেন। এটা কী করলেন উনি? আমার তো মনে হয়, কাউকে নয়, চুনীদা নিজেকেই অপমান করেছেন। উনি আমাদের সমর্থকদের কাছে এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবেন কি না সেটা ওনার ব্যাপার। আমি অগ্রজ সম্পর্কে এটা বলতেও পারি না।

Advertisement

সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৫ ০৩:০০
Share:

‘ইস্টবেঙ্গলই ফুটবলের পীঠস্থান’ আনন্দবাজারে চুনীদার এই মন্তব্য দেখে আমি বিস্মিত। চমকে গিয়েছি। প্রথমে তো বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, ওনার মতো মানুষ এ রকম কথা বলতে পারেন। এটা কী করলেন উনি? আমার তো মনে হয়, কাউকে নয়, চুনীদা নিজেকেই অপমান করেছেন।
উনি আমাদের সমর্থকদের কাছে এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবেন কি না সেটা ওনার ব্যাপার। আমি অগ্রজ সম্পর্কে এটা বলতেও পারি না। তবে আমার মনে হয়, ওনার প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করে নেওয়া উচিত। বলা উচিত, আমি যা বলেছি, ঠিক বলিনি। উল্টোটাই বললে ঠিক হত।
রাস্তা-ঘাটে যেখানে যাচ্ছি সবাই এটা নিয়ে প্রশ্ন করছে। সবাই জানতে চাইছে, যে মানুষটা জীবনের সব কিছুই পেলেন মোহনবাগান থেকে, তিনিই এভাবে ক্লাবকে আঘাত করলেন। উত্তর দিতে পারছি না। ক্লাব নির্বাচনে ফুটবল সচিব পদে দাঁড়িয়ে যখন বাবলুদার (সুব্রত ভট্টাচার্য) বিরুদ্ধে লড়ছিলাম, তখন ক্লাবকে প্রতিদিন আক্রমণ করতেন বাবলুদা। ছোট করতেন। খুব খারাপ লাগত। আমি বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় গিয়ে তাই বলতাম, ‘‘শৈলেন মান্না এবং চুনীদাও আজীবন মোহনবাগানী। আমারই মতো। ওঁরা কিন্তু কখনও ক্লাবকে ছোট করেননি। রাস্তায় নামিয়েও আনেননি।’’ শনিবারের পর মনে হচ্ছে, সেই বলাটা ভুল ছিল। প্রয়াত মান্নাদার সঙ্গে চুনীদাকে রাখাটা ঠিক হয়নি।
ইস্টবেঙ্গল ডেকেছে। চুনীদা গিয়েছেন। এতে আমি দোষের কিছু দেখছি না। উনি ইস্টবেঙ্গলের প্রশংসা করতেই পারতেন। ওরাও তো অনেক ট্রফি পেয়েছে। কিন্তু মোহনবাগানকে টানলেন কেন? আমার যেটা মনে হচ্ছে তা হল, বয়সের জন্যই সম্ভবত এখন আর কথা বলতে গিয়ে খেই রাখতে পারেননা উনি। ফলে অনেক কথাই বলে ফেলেন, যা বলা উচিত নয়।

Advertisement

আমি শুধু ভাবছি। চুনীদা তো চুনী গোস্বামী হয়েছেন মোহনবাগানের জন্যই। কী পাননি! অর্জুন, পদ্মশ্রী, মোহনবাগান রত্ন পেয়েছেন। মোহন-ভূষণও পাচ্ছেন। কিছুই তো অধরা নেই। তা সত্ত্বেও ক্লাবকে কেন খাটো করতে গেলেন উনি! চুনীদা আর কিছু প্রত্যাশা করেন ক্লাব থেকে?

ইস্টবেঙ্গল অনেক ট্রফি পেয়েছে। ইতিহাস গড়েছে। সবই ঠিক। কিন্তু আমাদের ক্লাবের তুলনায় সেটা কিছুই নয়। স্বাধীনতা আন্দোলনে আমাদের ক্লাবের অবদান আছে। পেলে থেকে রজার মিল্লা, দিয়েগো মারাদোনা কে আসেননি বাগানে? ঐতিহ্যে মোহনবাগানের ধারে-কাছে ভারতের কোনও ক্লাব নেই। দেশকে কত ফুটবলার দিয়েছে আমার ক্লাব! দেশের হয়ে বাগানের ফুটবলাররা যত উজ্জ্বল, আর কোনও ক্লাবে তা আছে? আমি বলছি, এ দেশের ফুটবলের পীঠস্থান যদি কোনও ক্লাব হয় সেটা মোহনবাগানই। অন্য কেউ নয়। আশা করব, চুনীদা এরপর কোথাও মাইক ধরে আগের মন্তব্য শুধরে নেবেন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন