ক্রিকেট ফিরল প্রতিবাদের বার্তা নিয়ে
Cricket

ইংল্যান্ডের সেই পরিচিত সুইং দেখতে পেলাম না

প্রথম দিন মোট ১৭.৪ ওভার খেলা হয়। এক উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের রান ৩৫।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০ ০৭:৫০
Share:

প্রত্যাবর্তন: সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্টে বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে প্রতিবাদে সামিল দু’দলের ক্রিকেটারেরা, আম্পায়ারও। গেটি ইমেজেস

সকাল থেকেই খুব মনটা উসখুস করছিল। ১১৭ দিন পরে করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে ফিরছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তাও আবার ইংল্যান্ডের পরিবেশে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্টের হাত ধরে। আইসিসি-র নতুন নিয়মে কী ভাবে টেস্ট খেলা যায়? কী ভাবে থুতুর ব্যবহার ছাড়া সুইং করানো যায়? তা নিয়ে কৌতূহল ছিলই। কিন্তু বৃষ্টি ও আলো কমে যাওয়ার প্রবণতা ম্যাচে বেশ কয়েক বার বিঘ্ন ঘটায়। কিন্তু এমন কয়েকটি দৃশ্য ফুটে উঠল, যা একেবারে নতুন ও মন ভরিয়ে দেওয়ার মতো।

Advertisement

প্রথম দিন মোট ১৭.৪ ওভার খেলা হয়। এক উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের রান ৩৫। টসের সময় ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস ও ক্যারিবিয়ান নেতা জেসন হোল্ডার দূরত্ববিধি মেনেই দাঁড়াল। টস করতে দেওয়া হল না স্টোকসে। ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড নিজেই সেই দায়িত্ব নেন। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় স্টোকস। অভ্যাস মতো হোল্ডারের দিকে স্টোকস এগিয়ে যায় হাত মেলাতে। আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী হাত মেলানো নিষিদ্ধ। মুহূর্তের মধ্যে হাত সরিয়ে বিপক্ষ অধিনায়কের সঙ্গে কনুই ঠেকিয়ে অভিবাদন জানান স্টোকস।

দ্বিতীয় দৃশ্য আমার সব চেয়ে পছন্দের। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে হাঁটু মুড়ে বসে পড়ল দু’দলের ক্রিকেটারেরা। বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ দেখেছি লা লিগা, ইপিএল শুরু হওয়ার আগে। ক্রিকেটেও সেই প্রতিবাদ আমার মন ছুঁয়ে গেল। দু’দলের ক্রিকেটারদের কলারেও লেখা ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’। কিংবদন্তি এভার্টন উইকসের স্মরণে নীরবতা পালন করে ভারতীয় সময় সাড়ে ছ’টায় সাউদাম্পটনের আজিয়াস বোল-এ প্রত্যাবর্তন ঘটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের। বায়ো-সিকিয়োর পরিবেশ। স্টেডিয়মের লাগোয়া হোটেলেই থাকছেন আম্পায়ার, ক্রিকেটার থেকে ধারাভাষ্যকারেরা। বাইরে যাওয়ার কোনও প্রয়োজনই নেই। বাইরে থেকেও প্রবেশ নিষিদ্ধ।

Advertisement

সাউদাম্পটনেই বোলিং শুরু করার আগে কেমার রোচ নিজের টুপি ও সোয়েটার তুলে দিল দ্বাদশ ব্যক্তির হাতে। এত দিন যা থাকত আম্পায়ারের দায়িত্বে। কিন্তু করোনা আতঙ্কে এই নিয়ম পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে আইসিসি।

ম্যাচেও যার অনেক প্রভাব পড়েছে। ক্রিকেটের মধ্যে শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলা খুবই কঠিন। উইকেটকিপার শেন ডাউরিচ, জেসন হোল্ডাররা স্লিপে কিন্তু দূরত্ববিধি মেনে দাঁড়াতে পারল না। ম্যাচের দশ নম্বর বলে সাসেক্সে খেলে আসা ডম সিবলি (০) জাজমেন্ট দিয়ে বোল্ড হওয়ার পরে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলদের উৎসবেও মানা হয়নি দূরত্ববিধি। এত বছরের অভ্যাস হয়তো ত্যাগ করতে সময় লাগছে। সেটাই স্বাভাবিক। তৃতীয় ওভারে বন্ধ হয়ে যায় ম্যাচ। তখন ইংল্যান্ডের স্কোর ৩-১। সাত বল হওয়ার পরে ফের বিঘ্ন ঘটায় বৃষ্টি।

দিনের অষ্টম ওভারে প্রথম বার ঘামের সাহায্যে বলের এক দিক চকচকে রাখার চেষ্টা করতে দেখলাম রোচকে। ওভার শেষ করে বোলাররা আর থার্ডম্যান অঞ্চলে ফিরছেন না। পরিশ্রমের পরে যে ঘাম তৈরি হচ্ছে, তা ব্যবহার করে বল পালিশ করার জন্য। বোলারদের দাঁড় করানো হচ্ছে মিড-অফ, মিড-অন অঞ্চলে। কিন্তু এই মেঘলা আবহাওয়ায় বল কেন সে ভাবে সুইং করছে না সেটাও প্রশ্ন। সিবলিকে করা গ্যাব্রিয়েলের দুরন্ত ইনসুইং ছাড়া ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের সে ভাবে সমস্যায় পড়তে দেখা যায়নি। রানের গতি কম হলেও জো ডেনলি ও ররি বার্নসকে পরাস্তও করা যাচ্ছে না। আইসিসি-র নতুন নিয়ম অনুযায়ী, থুতুর ব্যবহারে বল পালিশ করা যাবে না। সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ার আতঙ্কেই এই নিষেধাজ্ঞা। থুতু ব্যবহার না করার ফলেই কি বল সুইং কম করছে? তা সময়ই বলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন