চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
Sport News

নাপোলির রক্ষণ জঙ্গলে দিশাহীন মেসিদের বার্সা

গাত্তুসো ফুটবল জীবনে বারবার খবরে আসতেন মাথা গরম করে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:০৪
Share:

গোলের পরে উল্লাস নাপোলির মার্তেন্সের। ছবি: এএফপি।

নাপোলি ১ • বার্সেলোনা ১

Advertisement

কী ভাবে আটকানো সম্ভব লিয়োনেল মেসিকে? জেন্নারো গাত্তুসো বলেছিলেন নানা রকম কথা। এক বার বলেন, ‘‘ওকে আটকানো যায় না। অসম্ভব।’’ পর মুহূর্তে যোগ করেন, ‘‘হ্যাঁ যায়। লাথি মেরে ফেলে দিয়ে।’’

অনেক ধাপ এগিয়ে গাত্তুসো এমনকি ‘মারাদোনার থেকেও মেসি বড়’ বলে বসেন!

Advertisement

ফুটবল বিশ্লেষকেরা অবশ্য গাত্তুসোর এ হেন কথার অন্য মানেও খুঁজেছিলেন। সেটা নাকি আসলে ছিল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় বার্সেলোনার বিরুদ্ধে যতটা সম্ভব নিজেদের আন্ডারডগ দেখিয়ে বিপক্ষকে চাপে ফেলে দেওয়ার কৌশল।

গাত্তুসো নিজে বড় মাপের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ছিলেন। দেখার বিষয় ছিল, সান পাওলো স্টেডিয়ামে তাঁর কোচিংয়ে নাপোলি কী ভাবে শান্ত রাখেন কিংবদন্তি আর্জেন্টিনীয়কে। এবং ১-১ ড্র ম্যাচ শেষে ফুটবল পণ্ডিতেরা তাঁকে একশোর মধ্যে একশো নম্বরই দিচ্ছেন। শুধ মেসি নন, গোটা বার্সা আক্রমণকেই নাপোলির সুবিন্যস্ত ও হিসেবি রক্ষণের সামনে অসহায় দেখিয়েছে। ৬৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ রেখেও সারা ম্যাচে বার্সার মাত্র দু’টি শট বিপক্ষের গোলে ছিল। আট বারের চেষ্টায়।

হার বাঁচালেন গ্রিজ়ম্যান। ছবি: এএফপি।

এতটা ভাল খেলেও ম্যাচ থেকে পুরো পয়েন্ট না পেয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে গাত্তুসো বলতে গেলে রাগে গজগজ করছিলেন। ‘‘আমার মনে হয় আজ রাতে ওরা আমাদের ডিফেন্সে কোনও আঁচড় কাটতে পারেনি। আপনারাই বলুন, একটা শটও কি ওরা ঠিকঠাক আমাদের গোলে মারতে পেরেছে?’’ বলছিলেন নাপোলি ম্যানেজার। এক ধাপ এগিয়ে তাঁর আরও কথা, ‘‘আমার তো মনে হয়, আজ সারা রাত খেললেও আমাদের বিরুদ্ধে ওরা গোল করতে পারত না। কিন্তু মাত্র একবার আমাদের একটা ভুলের জন্য খেলা ড্র করে দিল। অথচ ওরা কোনও আঘাতই করতে পারেনি। যেটা করেছে তাকে আলতো ভাবে স্পর্শ করা ছাড়া কিছু বলা যায় না।’’

গাত্তুসো ফুটবল জীবনে বারবার খবরে আসতেন মাথা গরম করে। হয়তো ফিরতি ম্যাচটা ক্যাম্প ন্যুতে খেলতে হবে বলেই নাপোলি ম্যানেজারের মেজাজ খারাপ ছিল। বাইরের মাঠে গোল করার সুবিধেটা তো কিকে সেতিয়ানের ক্লাব পাবেই। যদিও অনেক প্রশ্নচিহ্নও রয়ে যাচ্ছে।

সব চেয়ে বড় যেটা, তা ইটালিতে মেসিকে বেশ খানিকটা নিষ্প্রভ দেখানো। ফুটবল পণ্ডিতেরা বলছেন, কিংবদন্তি তারকাকে মাঝেমাঝেই ম্যাচে বড় ক্লান্ত দেখাচ্ছে। তার উপরে পর পর দু’টি ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখায় সের্খিয়ো বুস্কেৎসকে ফিরতি ম্যাচে পাবে না বার্সা। আবার ম্যাচের মধ্যেই গোড়ালি ঘুরে যাওয়ায় বেরিয়ে যেতে হয়েছে জেরার পিকেকে। তাঁর চোট কতটা গুরুতর বোঝা যাচ্ছে না। সঙ্গে লাল কার্ড দেখেছেন আর্তুরো ভিদালও। তাই ইটালির অনেকে বার্সায় অঘটনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এবং কে না জানে, মেসি স্বয়ং সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমরা এই মুহূর্তে যে ফুটবলটা খেলছি, তা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা যায় না।’’

মঙ্গলবার ম্যাচের তিরিশ মিনিটে চমকে দেন নাপোলির বেলজিয়ান ফুটবলার দ্রিস মার্তেন্স। বক্সের মাথা থেকে বাঁক খাওয়ানো শটে ১-০ করে। নাপোলি ভুল না করলে গ্রিজ়ম্যানের গোল শোধ করাও হত না। গোটা ম্যাচে একবারই বিপক্ষ ডিফেন্সের দুর্বলতায় নেলসন সেমেডোর ক্রস থেকে ১-১ করেন বার্সার ফরাসি তারকা। ম্যাচের পরে বার্সা ম্যানেজারের গলাতেও উদ্বেগ, ‘‘গোলের সুযোগ তৈরি করতে না পারলে ভাল খেলেছি কী ভাবে বলি? আশা করি, দ্রুত ছেলেরা ছন্দে ফিরবে। সামনেই এল ক্লাসিকো। পিকে-কে পাব কি না জানি না। নাপোলির সঙ্গে পরের ম্যাচে বুস্কেৎসকে ছাড়া খেলতে হবে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন