আবেগের ম্যাচেও ৫ গোল মেসিদের

সোমবার তাই ক্যাম্প ন্যু-তে যতটা ছিল ম্যাচ জয়ের উল্লাস, তার চেয়েও বেশি ছিল শ্রদ্ধা, স্মরণ, উৎসাহ ও চোখের জল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০৩:১৬
Share:

শ্রদ্ধা, স্মরণ, উৎসাহ ও চোখের জলের মধ্যে দিয়েই ম্যাচ শুরু হল।

শ্রদ্ধা, সম্মান, ফুটবল—এই তিনের উপর ভর করেই নতুন মরসুমের যাত্রা শুরু করল বার্সেলোনা।

Advertisement

ক্যাম্প ন্যু-তে মরসুম শুরুর সেই প্রথামাফিক প্রদর্শনী ম্যাচ! যা কাতালান ক্লাব প্রতি বছর উদযাপন করে জোয়ান গ্রাম্পার ট্রফি দিয়ে। এ বারও সেই ম্যাচ ৫-০ জিতেই শুরু করলেন মেসি-সুয়ারেজরা। তবে সোমবার রাতে বার্সেলোনার বিপক্ষ যতটা প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল, তার চেয়েও বেশি ছিল শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর জায়গায়। কারণ জোয়ান গ্রাম্পার ট্রফিতে এ বার বার্সেলোনার প্রতিপক্ষের নাম ছিল শাপেকোয়েন্সে। ব্রাজিলের সেই অভিশপ্ত ফুটবল ক্লাব। আট মাস আগেই কলম্বিয়ায় কোপা সুদেমেরিকানা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে গিয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ছ’জন বাদে যাদের পুরো ফুটবল দলটাই মারা গিয়েছিল।

সোমবার তাই ক্যাম্প ন্যু-তে যতটা ছিল ম্যাচ জয়ের উল্লাস, তার চেয়েও বেশি ছিল শ্রদ্ধা, স্মরণ, উৎসাহ ও চোখের জল। ওই ভয়াবহ ঘটনার পর বার্সার বিরুদ্ধেই সোমবার মাঠে নামলেন শাপেকোয়েন্সের সেই অভিশপ্ত দলের সদস্য অ্যালান রাসেল। তাঁর অধিনায়কত্বেই ক্যাম্প ন্যু-তে এ দিন নেমেছিল শাপেকোয়েন্সে। ব্রাজিলের ক্লাবটির জার্সি গায়ে তিনি মাঠে ছিলেন ৩৬ মিনিট। যখন মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন গোটা স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানায় রাসেলকে।

Advertisement

যে সম্মান পেয়ে আপ্লুত শাপেকোয়েন্সে অধিনায়ক সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে লিখেছেন, ‘‘ফের পেশাদার ফুটবলারের জীবন শুরু করলাম। বার্সেলোনা যে সম্মান জানাল তা ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা নেই।’’ অশ্রুসজল চোখে তিনি এটাও বলে দিয়ে যান, ‘‘এই প্রথম ম্যাচটা তাঁদের উৎসর্গ করলাম যাঁরা আমাকে ফের ফুটবলার জীবনে ফিরতে সাহায্য করেছেন। এই ম্যাচ সেই বন্ধুদের জন্যও যারা রিয়ে গিয়েছে আট মাস আগে।’’

শাপেকোয়েন্সে ফুটবলারদের উৎসাহ দিতে কাপর্ণ্য করেননি বার্সেলোনা সমর্থকরা। ম্যাচ শুরুর আগে আয়োজকরা মাইক্রোফেন তুলে দেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার হাতে। তিনি শুরুতেই বলেন, ‘‘আজকের রাতটা একটা বিশেষ রাত। এটা যতটা না আনন্দের, তার চেয়েও বেশি বন্ধুত্ব, সহমর্মিতার।’’

এর পরেই শাপেকোয়েন্সে ফুটবলারদের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রতিটি নাম ঘোষণার সঙ্গেই বার্সা সমর্থকরা চিৎকার ও হাততালি দিয়ে উৎসাহ উজাড় করে দেন। এর পরেই মাঠে আসেন জ্যাকসন ফোলম্যান এবং হেলিও জ্যাম্পিয়ের নেটো। এই দু’জনেও রাসেলের মতো প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে দুর্ঘটনায় নিজের ডান পা হারিয়ে এখন কৃত্রিম পা ব্যবহার করেন ফোলম্যান। এই দু’জনেই প্রতীকী কিক-অফ করে ম্যাচের সূচনা করেন।

ম্যাচে মেসি-সুয়ারেজের পাশে এ দিন খেললেন বার্সা অ্যাকাডেমির ফসল জেরার দিউলোফিউ। ছ’মিনিটে তার গোলেই এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। প্রথমার্ধে কাতালান ক্লাবটির হয়ে আরও দু’গোল করেন বুস্কেতস এবং লিওনেল মেসি। দ্বিতীয়ার্ধে বার্সার হয়ে ব্যবধান বাড়ান লুই সুয়ারেজ ও ডেনিস সুয়ারেজ।

এরই মাঝে ‘ডাই নেমার’ বলে হাঁক পেড়েছিল গ্যালারির একটা অংশ। এক বালতি দুধে তা এক ফোটা চোনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন