ফের ব্যাটিং ব্যর্থতা, ফের বিপন্ন বাংলা

দিনের শেষে অভিনব মুকুন্দরা ১২-১ তুলে ৮৬ রানে এগিয়ে যান। তিন পয়েন্টের আশা শেষ। মনোজরা ছ’পয়েন্ট পেলে সেটা হবে বড় অঘটন। আর খালি হাতে মাঠ ছাড়লে গতবারের সেমিফাইনালিস্টদের নক আউট পর্বে ওঠা অসম্ভব হয়ে উঠবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:০৮
Share:

পাঁচ উইকেট নিলেন ঈশান পোড়েল।—ছবি পিটিআই।

বাংলার রঞ্জি দলকে এই মরসুমে যে মারণ রোগে ধরেছে, তা আদৌ সারবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিল বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে। তামিলনাড়ুকে ২৬৩ রানে অল আউট করে দিয়ে যখন প্রথম ইনিংসে এগিয়ে এই ম্যাচ থেকে অন্তত তিন পয়েন্ট পাওয়ার ভাবনা চলছিল বাংলা শিবিরে, তখন সারা দিনও ব্যাট করতে পারলেন না মনোজ তিওয়ারি ও তাঁর দল। দু’শো রানও উঠল না বাংলার স্কোরবোর্ডে। ১৮৯ রানেই শেষ। তাও ওপেনার অভিষেক রামন একাই ৯৮। তাঁর পরে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ১৯! বাংলা এখন কার্যত কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রে বেঁচে।

Advertisement

দিনের শেষে অভিনব মুকুন্দরা ১২-১ তুলে ৮৬ রানে এগিয়ে যান। তিন পয়েন্টের আশা শেষ। মনোজরা ছ’পয়েন্ট পেলে সেটা হবে বড় অঘটন। আর খালি হাতে মাঠ ছাড়লে গতবারের সেমিফাইনালিস্টদের নক আউট পর্বে ওঠা অসম্ভব হয়ে উঠবে। বাংলাকে এখন ভেন্টিলেশন থেকে বার করে আনতে পারেন শুধু বোলাররা। শুক্রবার তৃতীয় দিন তাঁরা বিপক্ষকে ১২৫ রানের মধ্যে বেঁধে রাখতে না পারলে ছ’পয়েন্টের ভাবনা ভুলতে হবে।

আত্মবিশ্বাসহীন ব্যাটিং, খারাপ শট বাছাই, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা— এই উপসর্গগুলো এখনও যে বাংলা দলের শরীরে আগের মতোই রয়ে গিয়েছে, তা বৃহস্পতিবার মেনে নিলেন দলের মেন্টর অরুণ লাল। চেন্নাই থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘কেরলের বিরুদ্ধে যা যা সমস্যা ছিল, সব রয়ে গিয়েছে। কোনও দিক থেকেই উন্নতি করতে পারেনি আমাদের ছেলেরা। বোলাররা অস্বাভাবিক ভাল বোলিং না করলে এই ম্যাচ জেতা অসম্ভব। তবে শেষ ইনিংসে আমরা আড়াইশোও তুলতে পারব কি না, জানি না।’’ দলের ওপর থেকে যে ক্রমশ আস্থা হারাচ্ছেন মেন্টর, এই কথায় তার ইঙ্গিত স্পষ্ট।

Advertisement

বাংলা শিবিরে ফোন করে জানা গেল, তাদের ব্যাটিংয়ে এমন ধস নামানোর মতো বিধ্বংসী বোলিং তামিল বোলাররা করেননি এ দিন। দুই ব্যাটসম্যান কভারে, একজন মিড উইকেটে ও একজন লং অফে ক্যাচ দেন। দু’জন কট অ্যান্ড বোল্ড। সুদীপ চট্টোপাধ্যায় ফের শূন্য। এই নিয়ে টানা ১৪ ইনিংসে বড় রান নেই তাঁর। অধিনায়ক মনোজ অবাক। এক রান করেছেন তিনিও। ফোনে বলেন, ‘‘বলটা হঠাৎ লাফিয়ে ওঠায় আউট হলাম। বেশির ভাগই খুব খারাপ আউট হয়েছে। এ ভাবে জেতা কঠিন।’’

স্কোরকার্ড
তামিলনাড়ু ২৬৩ ও ১২-১
বাংলা ১৮৯

তামিলনাড়ু (প্রথম ইনিংস ২১৮-৭-এর পর)
বি অপরাজিত ক মনোজ বো প্রদীপ্ত ১০৩
এম মহম্মদ ক শ্রীবৎস বো ঈশান ২৪
রাহিল শাহ ক শ্রীবৎস বো ঈশান ৮
টি নটরাজন ন.আ. ৪
অতিরিক্ত ৮
মোট ২৬৩
পতন: ১-২১ (মুকুন্দ, ১০.১), ২-৯৪ (গাঁধী, ৩৯.১), ৩-৯৫ (ইন্দ্রজিৎ, ৪২.১), ৪-১৫৫ (জগদীশন, ৬৫.৪), ৫-১৬৭ (অনিরুদ্ধ, ৬৮.২), ৬-১৭০ (কৌশিক, ৭১.৪), ৭-১৮৬ (কিশোর, ৭৭.৩), ৮-২৫০ (এম মহম্মদ, ১০১.২), ৯-২৫১ (অপরাজিত, ১০২.২), ১০-২৬৩ (রাহিল, ১০৫.৬)।
বোলিং: অশোক ডিন্ডা ১৮-৭-২৮-০, আমির গনি ২৩-২-৬৬-২, ঈশান পোড়েল ২৭-১২-৪৮-৫, প্রদীপ্ত প্রামাণিক ২৭-৬-৮২-৩, ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় ৭-২-১১-০, অনুষ্টুপ মজুমদার ৪-০-২৩-০।

বাংলা (প্রথম ইনিংস)
রামন ক কৌশিক বো রাহিল ৯৮
কৌশিক ক অনিরুদ্ধ বো এম মহম্মদ ২
সুদীপ ক ইন্দ্রজিৎ বো এম মহম্মদ ০
মনোজ ক মুকুন্দ বো এম মহম্মদ ১
অনুষ্টুপ ক ইন্দ্রজিৎ বো রাহিল ১৬
ঋত্বিক ক অপরাজিত বো রাহিল ১১
শ্রীবৎস ক ও বো এম মহম্মদ ১৯
আমির গনি ক ও বো সাই কিশোর ১৩
প্রদীপ্ত প্রামানিক বো রাহিল ১১
অশোক ডিন্ডা বো রাহিল ১
ঈশান পোড়েল ন.আ. ০
অতিরিক্ত ১৭
মোট ১৮৯
পতন: ১-৬ (কৌশিক, ১.৪), ২-৮ (সুদীপ, ৩.৩), ৩-১১ (মনোজ, ৫.২), ৪-৩৮ (অনুষ্টুপ, ১৮.১), ৫-৭০ (ঋত্বিক, ৩২.২), ৬-১১৯ (শ্রীবৎস, ৪৬.৫), ৭-১৪২ (গনি, ৫১.৫), ৮-১৭৮ (প্রদীপ্ত, ৬১.৪), ৯-১৮৯ (রামন, ৬৩.৪), ১০-১৮৯ (ডিন্ডা, ৬৩.৫)।
বোলিং: টি নটরাজন ১৪-২-২৬-০, এম মহম্মদ ১৪-৫-৩৯-৪, রাহিল শাহ ১৮.৫-৫-৪৬-৫, সাই কিশোর ১৪-০-৫৯-১, বি অপরাজিত ৩-০-১২-০।

তামিলনাড়ু (দ্বিতীয় ইনিংস)
কৌশিক গাঁধী ব্যাটিং ১
অভিনব মুকুন্দ বো ডিন্ডা ২
সাই কিশোর ব্যাটিং ১
অতিরিক্ত ৮
মোট ১২
পতন: ১-৭ (মুকুন্দ, ০.৫)।
বোলিং: অশোক ডিন্ডা ২-১-৪-১, আমির গনি ১-১-০-০।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন