ডিন্ডার উপরে চাপ কমাতে বার্তা অরুণের

মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র এক ওভার বল করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল অশোক ডিন্ডাকে। ম্যাচ চলাকালীনই বাঁ হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র এক ওভার বল করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল অশোক ডিন্ডাকে। ম্যাচ চলাকালীনই বাঁ হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করেন। মাঠ ছেড়ে তাঁর চলে যাওয়ার পরে বিপক্ষের একটি উইকেটও আর তুলতে পারেননি বাংলার বাকি বোলারেরা। দেখে মনে হচ্ছিল, বাংলার বোলিং বিভাগে ডিন্ডা ছাড়া আর কোনও গতি নেই। রবিবার বাংলার অনুশীলন শেষে মেন্টর অরুণ লালও সে দিকেই ইঙ্গিত করলেন। তিনি জানিয়েছেন, ডিন্ডার উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে দল। যা কমাতে এগিয়ে আসতে হবে বাংলার বাকি বোলারদের।

Advertisement

অরুণ বলেন, ‘‘একটা বোলার নিয়ে রঞ্জি ট্রফি জেতা সম্ভব নয়। গত আট বছর ধরে বাংলার সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহাকারীর নাম ডিন্ডা। ও আর কত করবে? বাকিদেরও তো এগিয়ে আসতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওর উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে দল। যেটা একেবারেই ঠিক নয়।’’ কিন্তু এখনই ঈশান পোড়েলের উপর চাপ দিতে চান না অরুণ। বলেন, ‘‘ঈশান তরুণ ক্রিকেটার। ওর দক্ষতা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতের হয়ে খেলা সোজা নয়। ওর প্রতিভা আছে বলেই খেলেছে। এখনও প্রচুর ম্যাচ খেলে তৈরি হতে হবে ওকে।’’

গত ম্যাচে চোট পাওয়ায় এ দিন নেটে বল করেননি ডিন্ডা। সকালে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করার পরে বেশ কিছুক্ষণ ফিল্ডিং করেন। তার পরে দলের ফিজিক্যাল ট্রেনারের সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ‘রিকভারি সেশন’-এ। মঙ্গলবার কেরলের বিরুদ্ধে ডিন্ডার সঙ্গে খেলার কথা মহম্মদ শামির। অথচ দু’দিন ধরে অনুশীলনেই দেখা গেল না তাঁকে। দলীয় সূত্রে খবর, রবিবার দিল্লিতেই ছিলেন শামি। সোমবার শহরে পৌঁছনোর কথা তাঁর।

Advertisement

বোলারদের ফিটনেসও উদ্বেগের অন্যতম কারণ বাংলার মেন্টরের। কিন্তু মরসুমের মাঝে ফিটনেস বাড়ানোর থেকেও তা ধরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন অরুণ। বলেন, ‘‘মরসুমের মাঝে ফিটনেসে উন্নতি করা কঠিন কাজ। কিন্তু ফিটনেস বজায় রাখা কঠিন নয়। সবাই নিজেদের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। সেটা বুঝেই কাজ করা উচিত।’’

বোলারদের পারফরম্যান্স ও ফিটনেসের পাশাপাশি সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের ফর্মও বাংলা শিবিরের অন্যতম উদ্বেগের কারণ। রবিবার বাংলার নেটে নিজের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার জন্য আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন সুদীপ। সাধারণত আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেললে, সহজে রান করার উপায় খোঁজার চেষ্টা করেন ব্যাটসম্যানেরা। নেটে সে ভাবেই ব্যাট করছিলেন বাংলার সহ-অধিনায়ক। যেমন স্টেপ আউট করে স্পিনারকে সোজা ছয় মারার অনুশীলন করলেন। তেমনই পেসারদের বিরুদ্ধে হুক, পুলের মতো শট খেলারও অনুশীলন করেন সুদীপ।

বাংলার মেন্টরের বিশ্বাস, সুদীপের প্রচেষ্টাই ওকে বড় রান করতে সাহায্য করবে। ‘‘সুদীপ আমাদের ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ। কিছু ক্রিকেটার থাকে যারা দলের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেয়। তারা রান না পেলেও দলেরই উচিত তাকে আত্মবিশ্বাস যোগানো। সুদীপ সে রকমই ক্রিকেটার,’’ মত অরুণের। তিনি আরও বলেন, ‘‘ও এমন একজন ব্যাটসম্যান যে হয়তো অনেক দিন রান পেল না, কিন্তু বড় ম্যাচে দু’শো করে দিল।’’ তবুও দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য পারফরম্যান্সই যে শেষ কথা, তা আরও এক বার মনে করিয়ে দিলেন মেন্টর। অরুণের কথায়, ‘‘আমি কোনও দিনও পারফরম্যান্সের সঙ্গে আপস করিনি, করবও না। মনোজ গত ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করে নিজের যোগ্যতা আরও এক বার প্রমাণ করে দিয়েছে। বাকিদেরও সেটা করে দেখাতে হবে।’’

গত ম্যাচে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে যে চরিত্রের পিচে খেলা হয়েছে, সেখানে ছয় পয়েন্ট পাওয়া কঠিন বললেও কম বলা হবে। তাই আসন্ন ম্যাচে সবুজ পিচে খেলার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন বাংলা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। কিন্তু ভারতীয় বোর্ড অনুমোদিত পিচ প্রস্তুতকারক থাকায় নিজেদের সুবিধা মতো পিচ বানানো সম্ভব নয়। তাই পিচ নিয়ে ভাবতেই বারণ করে দেওয়া হয়েছে ক্রিকেটারদের। অরুণের কথায়, ‘‘এক বার ইয়ান চ্যাপেলকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আপনি পিচ দেখবেন না! তখন ইয়ান বলেছিল, ‘কেন? পিচের দৈর্ঘ্য ২২ গজের কম নাকি?’ আমিও সে ভাবেই দেখি। যে পিচে বোলারেরা সুবিধা পায়, সেখানেই নেমে দু’শো করে বেরিয়ে আসব।’’ কিন্তু পেস সহায়ক পিচ না পেলে শামির ইনিংসে ১৫ ওভার যথেষ্ট কি না, সেটাই প্রশ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন