Bengal

রাহুলদের জন্যও বাংলার অস্ত্র ঘাস

পিচের সঙ্গে মাঠের বাকি অংশের কোনও পার্থক্য নেই। একেবারে সবুজ গালিচায় ঢাকা।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৮
Share:

মহড়া: ইডেনে মনোজ, শাহবাজ। নজর কোচ অরুণের। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

পিচের সঙ্গে মাঠের বাকি অংশের কোনও পার্থক্য নেই। একেবারে সবুজ গালিচায় ঢাকা। আকাশে কালো মেঘ। পিচের আর্দ্রতা বজায় রাখতে যা সাহায্য করবে।

Advertisement

এই পেস সহায়ক পিচেই কে এল রাহুলের কর্নাটককে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে স্বাগত জানাতে চায় বাংলা। কারণ, অভিমন্যু ঈশ্বরনের দলের শক্তি তাদের পেস ব্যাটারি। বিপক্ষের দুর্বলতা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাংলার কোচ অরুণ লাল তাই বিপক্ষের কথা না ভেবে নিজেদের শক্তির উপর আস্থা রাখছেন।

অরুণ লাল বলছিলেন, ‘‘আমরা ভাল খেলছি। বেশির ভাগ ম্যাচ জিতেছি পেস বিভাগের জন্য। সেমিফাইনালে বিপক্ষ শিবিরের কথা ভেবে দল সাজাবো না। নিজেদের শক্তির উপরেই আস্থা রাখছি।’’

Advertisement

কর্নাটকের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে ফেরানো হবে আকাশ দীপকে। কুঁচকিতে চোটের কারণে কোয়ার্টার ফাইনালে বিশ্রামে ছিলেন। শেষ চারের ম্যাচে নামার আগে তিনি আরও ফুরফুরে। বেশ কয়েক বার পিচ দেখে এলেন। কোচের সঙ্গে আলোচনাও করলেন বাইশ গজের পাশে দাঁড়িয়ে।

সবুজ পিচ পেসারদের মুখে হাসি ফোটালেও কপালে ভাজ ফেলেছে ব্যাটসম্যানদের। এমনিতেই বাংলার উপরের সারির ব্যাটসম্যানেরা ব্যর্থ। অভিমন্যু ঈশ্বরন মরসুমে এখনও পর্যন্ত একটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। অভিষেক রামন দু’টি সেঞ্চুরি করলেও তাঁর ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ওপেনার কৌশিক ঘোষ প্রত্যেক ম্যাচে শুরুটা ভাল করেও বড় রানের ইনিংসে পরিণত করতে পারছেন না। বাংলার এই টপ অর্ডারকে পরীক্ষা দিতে হবে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, অভিমন্যু মিঠুন ও রনিত মোরেদের বিরুদ্ধে।

কর্নাটক পেস বিভাগের মূল তারকা প্রসিদ্ধ। কলকাতা নাইট রাইডার্সের সদস্যও তিনি। ইডেনের পিচ ও পরিবেশ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কোয়ার্টার ফাইনালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে লিড নিশ্চিত করেছিলেন। তাঁকে সঙ্গ দেবেন টেস্টের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মিঠুন। স্পিন বিভাগেও বাংলাকে টক্কর দিতে পারে কর্নাটক। কৃষ্ণাপ্পা গৌতম গত ম্যাচেই সাত উইকেট পেয়েছেন। রয়েছেন লেগস্পিনার শ্রেয়স গোপাল। তাঁদের তুলনায় বাংলার স্পিন বিভাগের অভিজ্ঞতা কম। শাহবাজ আহমেদ ও অর্ণব নন্দী দু’জনে বেশি ম্যাচ খেলেননি। বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিংয়েই বেশি সাবলীল।

ব্যাটিং বিভাগে দু’দলের তুলনাই চলে না। রাহুল, সামর্থ, করুণ নায়ার, মণীশ পাণ্ডেরা যে কোনও মুহূর্তে ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারেন। ব্যাটিং সহায়ক পিচে কর্নাটককে স্বাগত জানালে কত রানে তারা থামত জানা নেই। তা অনুমান করেই সবুজ পিচ চেয়েছে বাংলা। অরুণের ব্যাখ্যা, ‘‘ব্যাটিং উইকেটে ওদের বিরুদ্ধে আমাদের জেতা কঠিন। বুঝতে হবে, আমাদের শক্তি কিন্তু ব্যাটসম্যানেরা নয়। শুরুতেই তিনটি করে উইকেট হারিয়ে ফেলছি। হাল ধরছে আমার মিডল অর্ডার। কর্নাটকের বিরুদ্ধে ব্যাটিং পিচ দেওয়া হলে আমার টপ অর্ডার যে ব্যর্থ হবে না, সেই নিশ্চয়তা কে দিতে পারে?’’ যোগ করেন, ‘‘তার চেয়ে পিচ সবুজ থাকলে, মুকেশ, ঈশানদের বিরুদ্ধে সমস্যায় পড়তে পারে কর্নাটক।’’

সেমিফাইনালে তাই টস বড় ভূমিকা নেবে। বড় ভূমিকা নেবে আরও একটি বিষয়। ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম। রঞ্জি ট্রফিতে এই প্রথম ডিআরএস ব্যবহৃত হবে সেমিফাইনাল থেকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ডিআরএস-এর সঙ্গে অনেক তফাত। বলা যেতে পারে আংশিক ডিআরএস। না আছে স্নিকো। না আছে হটস্পট। এমনকি বল ট্র্যাকিংও আন্তর্জাতিক মানের হবে না। ‘ভার্চুয়াল পিচ ম্যাপ’ দেখে এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। কিন্তু বল ব্যাট ছুঁয়েছে কি না তা পরীক্ষা করার যথেষ্ট সরঞ্জাম নেই।

ইনিংস প্রতি চারটি করে রিভিউ পাবে প্রত্যেক দল। বাংলায় মনোজ তিওয়ারি ও শ্রীবৎস গোস্বামী ছাড়া ডিআরএস ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা কারও নেই। তার উপর শ্রীবৎস উইকেটকিপার। তাঁর উপরেই মূল দায়িত্ব থাকবে ডিআরএস নেওয়ার। বলছিলেন, ‘‘যতটা সম্ভব চেষ্টা করব সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। আগেও রিভিউ ব্যবহার করেছি। কিন্তু রঞ্জিতে এই প্রথম। দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব।’’ মনোজ যদিও বলে গেলেন, ‘‘রঞ্জিতে ডিআরএস কার্যকরী হচ্ছে কি না তা ম্যাচের পরেই বলতে পারব। তবে চেষ্টা করব, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে দলকে সাহায্য করতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন