ওয়াটার পোলোয় জিতে সোনার মেয়ে পূজা

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁতারপ্রিয় পূজা ছোট থেকেই জল পেলে আর কিছু চায় না। একটু বড় হয়ে ওয়াটার পোলোর দিকে ঝোঁক বাড়ল। কিন্তু প্র্যাকটিস? জেলায় ওয়াটার পোলো ক্লাবই তো নেই। অগত্যা শুরু হলো কলকাতায় যাতায়াত।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০৪:২৪
Share:

পদকজয়ী: পূজা দাশ।

জেলায় ওয়াটার পোলো ক্লাব নেই। কিন্তু তার পরোয়া না করেই পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার নিবেদিতা নগরের মেয়ে পূজা দাশ সম্মান এনে দিয়েছে জেলাকে। গত ৩ জুলাই থেকে ৬ জুলাই মহারাষ্ট্রের পুনেতে ন্যাশনাল অ্যাকোয়াটিক চ্যাম্পিয়নশিপে ৪৪তম জুনিয়ার ওয়াটার পোলোয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলার মেয়েরা। সেই দলেরই সদস্য পূজা প্রথমবারের সুযোগে রাজ্যকে সোনা এনে দেওযার পাশাপাশি গর্বিত করেছে জেলাকেও।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁতারপ্রিয় পূজা ছোট থেকেই জল পেলে আর কিছু চায় না। একটু বড় হয়ে ওয়াটার পোলোর দিকে ঝোঁক বাড়ল। কিন্তু প্র্যাকটিস? জেলায় ওয়াটার পোলো ক্লাবই তো নেই। অগত্যা শুরু হলো কলকাতায় যাতায়াত। চ্যাম্পিনশিপে যাওয়ার আগে হলদিয়া থেকে টানা তিন মাস রাত দুটায় উঠে মাকে সঙ্গে নিয়ে বাসে কলকাতায় গিয়ে চলত অনুশীলন। একদিনও বাদ যায়নি। মানিকতলায় বিদ্যাসাগর ওয়াটার পোলো ক্লাবে সকাল আটটা থেকে বেলা বারোটা আবার দুটো থেকে পাঁচটা পর্যন্ত চলত অনুশীলন। হলদিয়ার বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যেত মা-মেয়ের। আর বাড়িতে থাকলে পুকুরেই চলত অনুশীলন।

পূজার কথায়, ‘‘হলদিয়া থেকে কোলাঘাটে সাঁতারে যাওয়ার জন্য সমস্যা হওয়ায় সেখানে ঘর ভাড়া নিয়ে থেকেছে মা।’’ সেখানে অনুশীলনের পর বাস ধরে দু’ঘণ্টার পথ উজিয়ে হলদিয়ার স্কুলে। স্কুল সেরে ফের বাস ধরে কোলাঘাট। ফের ভোরে উঠে অনুশীলন।’’

Advertisement

মা রূপশ্রী দেবীর কথায়, ‘‘কলকাতায় ক্যাম্প চলার সময় রোজ রাত ২টোয় উঠে ওকে নিয়ে কলকাতায় যেতাম। টানা তিন মাস ওই ভাবে কেটেছে। প্রথম প্রথম কেউ আমাদের গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু মেয়ের জেদ আর পরিশ্রমের মানসিকতা দেখে ওকে সুযোগ দেন ওঁরা। ও যে শুধু আমাদের মুখ রেখেছে তাই নয়, রাজ্যকেও সম্মান এনে দিয়েছে।’’ বাবা পরমেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘ও দেশের হয়ে খেলতে চায়। অনুশীলনের সরঞ্জামই ঠিকমতো কিনে দিতে পারি না। তবুও মনের জোরে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে ও।’!

হলদিয়ার পুর পাঠভবনের ছাত্রী পূজাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক সঞ্জয় শোভন মান্না। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের ‘স্পোর্টস ডে’-তে ওকে আমরা ট্রফি দিয়ে উৎসাহিত করেছি। ওর আরও সাফল্য কামনা করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন