ফাইনালে উঠলেও স্বপ্নপূরণ হল না সবুজ-মেরুনের। সি কে বিনিথের জোড়া গোলে মোহনবাগানকে ২-০ গোলে উড়িয়ে দিল বেঙ্গালুরু এফ সি। রবিবারের মেগা ফাইনালে মোহনবাগানকে দেখে এক বারের জন্যও মনে হয়নি কিছু দিন আগে ডার্বি জয় করেছে এই দলই। ময়দানের প্রাচীন প্রবাদ, ‘ডার্বি জেতা দল সব সময়ই পরের ম্যাচে হোঁচট খায়। সে প্রবাদ যে এ ভাবে ফাইনাল ম্যাচেই ফলে যাবে তা হয়ত টেরও পাননি তাবড় ফুটবল ব্যক্তিত্ব।
ম্যাচের প্রথম থেকেই আধিপত্যের সঙ্গে খেলতে থাকে বেঙ্গালুরু এফ সি। কার্যত দাপট দেখিয়ে মাঝমাঠকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন উদান্ত সিংহ-জুয়ান গঞ্জালেসরা। আর এখানেই সমস্ত জাড়িজুড়ি শেষ হয়ে যায় সঞ্জয় ব্রিগেডের। একের পর এক আক্রমণ তুলে এনে প্রথমার্ধে মোহন-রক্ষণকে কার্যত ভাঙা হাটে পরিণত করেন অ্যালবার্ট রোকার ছেলেরা। ম্যাচের ২০ মিনিটে জোর রক্ষা পায় মোহনবাগান। উদান্ত সিংহের কর্নার থেকে লিংগডো গোল করলে অফ সাইডের জন্য তা বাতিল করে দেন রেফারি। এই উদান্ত সিংহ-ই শেষ করে দেন গঙ্গাপাড়ের বাগানকে। বেঙ্গালুরু আক্রমণ ভাগের এই প্লেয়ারকে সামলাতে কার্যত নাভিশ্বাস উঠে যায় রাজু গায়কোয়াড়-এডুয়ার্ডো ফেরেরাদের। প্রথমার্ধের শেষে ম্যাচের ফলাফল ছিল ০-০।
প্রথমার্ধের শেষে মোহন-সমর্থকেরা আশা করেছিলেন চেতলার সঞ্জয়ের ভোকাল টনিকে ম্যাচে ফিরবে তাঁদের প্রিয় দল। কিন্তু, তাঁদের সেই আশা আর পূরণ হয়নি। প্রথমার্ধে যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু করেন ইউজিনসন লিংগডোরা। অন্য দিকে, বদল ঘটেনি বাগানের খেলাতেও। প্রথমার্ধের থেকেও জঘন্য ফুটবল খেলতে থাকেন কাতসুমি-ডাফিরা। বেঙ্গালুরুর আক্রমণে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাগান রক্ষণ। এরই মাঝে আরও এক বার রেফারির সাহায্য পায় মোহনবাগান। ৪৯ মিনিটে জুয়ানের ন্যায্য গোলকে অফ সাইডের জন্য বাতিল করেন দেশের অন্যতম সেরা রেফারি সি আর শ্রীকৃষ্ণ। তবে ন্যায্য গোল বাতিল হলেও হতাশ হননি গার্ডেন সিটির ফুটবলাররা। একের পর এক আক্রমণের ঝড় তুলে মোহন সমর্থকদের সাধের বাগানকে তছনছ করে তোলে বেঙ্গালুরু। কিন্তু, কাঙ্খিত গোল তুলতে ব্যর্থ হয় তারা।
বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে কার্যত ব্যর্থ হয় মোহনবাগান। নির্ধারিত সময়ে খেলা শেষ হয় গোলশূন্য ভাবে। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর এখানেই বাজিমাত করে নেন বেঙ্গালুরুর ফুটবলাররা। ১০৭ মিনিটে বিশ্বমানের গোল করে রোকা ব্রিগেডকে কাঙ্খিত গোল এনে দেন সুপারসাব সি কে বিনিথ। এর পর আর ম্যাচে ফেরা হয়নি কলকাতার দলটির। সকলেই যখন ধরে নিয়েছেন একমাত্র গোলেই ভাগ্য নির্ধারণ হবে এই মেগা ফাইনালের তখন আরও একটি গোল আসে ‘ওয়ান্ডার বয়’ বিনিথের পা থেকে। চাকরি খোয়ানোর জ্বালা মোহনবাগানের উপর যে এই ভাবে মেটাবেন দেবেন তা হয়ত ভাবতেও পারেননি মোহন-সমর্থকেরা।