ফেড জিতেও গোল বাতিল নিয়ে ক্ষোভ বেঙ্গালুরুর

উৎকণ্ঠায় পুরো ম্যাচে একবারের জন্যও বসতে পারেননি তিনি। অতিরিক্ত সময়ে সি কে বিনীতের প্রথম গোলটার পরেও আশ্বস্ত হতে পারছিলেন না জয়ের ব্যাপারে। কিন্তু সি কে বিনীতের দ্বিতীয় গোলের পরে চোট উপেক্ষা করেই দৌড়ে ঢুকে পড়লেন মাঠে।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কটক শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০৩:৪৪
Share:

ভারতসেরা: ফেডারেশন কাপ জেতার পর বেঙ্গালুরুর ফুটবলারদের উচ্ছ্বাস। রবিবার কটকে। নিজস্ব চিত্র

উৎকণ্ঠায় পুরো ম্যাচে একবারের জন্যও বসতে পারেননি তিনি।

Advertisement

অতিরিক্ত সময়ে সি কে বিনীতের প্রথম গোলটার পরেও আশ্বস্ত হতে পারছিলেন না জয়ের ব্যাপারে। কিন্তু সি কে বিনীতের দ্বিতীয় গোলের পরে চোট উপেক্ষা করেই দৌড়ে ঢুকে পড়লেন মাঠে। তিনি— সুনীল ছেত্রী। চোটের কারণে ফাইনাল খেলতে না পারার যন্ত্রণা ভুললেন ট্রফি হাতে নিয়ে। কিন্তু কোচ আলবের্তো রোকা-র মতো তাঁরও ক্ষোভ কমছে না অফসাইডের কারণে দু’টো গোল বাতিল হওয়ায়।

সুনীল বললেন, ‘‘টিভিতে বারবার রিপ্লে দেখে কিন্তু মনে হয়নি দু’টোর একটাও অফসাইড ছিল। যা-ই হোক শেষ পর্যন্ত তো আমরাই চ্যাম্পিয়ন হলাম।’’ রোকা বলছেন, ‘‘রেফারি ও লাইন্সম্যানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, কী কারণে অফসাইড দেওয়া হল। ওঁরা কোনও উত্তরই দিতে পারলেন না। গোল দু’টো হয়ে গেলে আমাদের ১২০ মিনিট খেলতে হতো না। ফুটবলাররাও একটু বিশ্রাম পেত।’’

Advertisement

বেঙ্গালুরু এফসি-র দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের রহস্য কী? সুনীল বললেন, ‘‘ফাইনালের আগে ফুটবলাররা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেয়েছে। কটক থেকে কলকাতার দূরত্ব খুব বেশি না হওয়া সত্ত্বেও ওদের এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তা-ই ওরা তরতাজা ছিল।’’

আরও পড়ুন: সুনীল না থাকার ফাইনালে বেঙ্গালুরুর নায়ক বিনীত

বিনীতদের উজ্জীবিত ফুটবল খেলার আরও একটা কারণ হচ্ছে সুনীলের ক্লাস! রবিবার সকালেই কটকে টিম হোটেলে পৌঁছে গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। প্রাতঃরাশের পরে সতীর্থদের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেন তিনি। বরাবাটি স্টেডিয়ামের মাঠে দাঁড়িয়েই সুনীল বললেন, ‘‘সকালে টিম হোটেলে পৌঁছেই আমি ওদের ডেকে নিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আগামী মরসুমে এএফসি কাপে খেলার শেষ সুযোগ এই ম্যাচটা। তা-ই যে ভাবেই হোক মোহনবাগানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। ওদের জন্য নিজের না খেলার দুঃখটা ভুলতে পেরেছি।’’ সুনীলের মতোই উচ্ছ্বসিত আর এক তারকা হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরা। ২০১০ সালে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে এই কটকেই প্রথম বার ফেডারেশন কাপ জিতেছিলেন মোহনবাগানকে হারিয়ে। এ বার জিতলেন বেঙ্গালুরুর হয়ে। খাবরা বলছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলে যখন খেলতাম, আমার উপরেই দায়িত্ব থাকত সনি-কে আটকানোর। আমি জানি ওর খেলার ধরন। এ দিনও সনি-কে খেলতে দিইনি।’’

মোহনবাগান বধ সেরে বেঙ্গালুরু ফুটবলাররা উৎসব করছেন মাঠের মধ্যে। কিন্তু দেখা নেই আসল নায়কের।

বিনীত কোথায় গেলেন? বাঁ পায়ের গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন বেঙ্গালুরু স্ট্রাইকার। যন্ত্রণায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না বলে মাঠেই বসে পড়েছিলেন।

কেরলের কন্নুড়ে জন্ম বিনীতের। তাঁর ফুটবলার হওয়ার কাহিনি চমকে দেওয়ার মতো। বাবা ডাক্তার। দাদা ইঞ্জিনিয়র। পরিবারে এর আগে কেউ কখনও ফুটবল খেলেননি সেভাবে। হাসতে হাসতে বিনীত বললেন, ‘‘বাবা-মা নবোদয় বিদ্যালয়ের হস্টেলে আমাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ভাল পড়াশোনা করার জন্য। কিন্তু আমি ফুটবলার হয়ে বেরোলাম ওখান থেকে।’’

উৎসবের রাতে চোট ছাড়াও বিনীতের উদ্বেগের আরও একটা কারণ হচ্ছে, চাকরি সংক্রান্ত সমস্যা। কম উপস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্টেন্ট জেনারেল অফিসের চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন সপ্তাহখানেক আগেই। যা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ান্ত্রী বিজয় গয়াল স্বয়ং। বিনীত বললেন, ‘‘মরসুম শেষ হওয়ার পরে আমার প্রথম কাজ হচ্ছে চাকরি সংক্রান্ত সমস্যা মেটানো। তার পরে অন্য কিছু নিয়ে ভাবব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন