—ফাইল চিত্র।
রাজ্য হকি সংস্থায় বন্ধ দরজার তালা শনিবার বিকেলে খুললেও সংস্থার অন্ধকার অবস্থা তাতে বদলায়নি। বরং কী ভাবে গতবারের লিগ চ্যাম্পিয়নদের দেওয়া চেকের টাকা এবং অফিসের বিদ্যুৎ ও ফোনের বিল দেওয়া হবে তা নিয়েই চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন কর্তারা। কারণ সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকাই প্রায় নেই।
দীর্ঘদিন হকি সংস্থার নির্বাচন বন্ধ হয়ে রয়েছে। প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, চার সহসচিবের মধ্যে দু’জন এবং কর্মসমিতির বেশির ভাগ সদস্যই পদত্যাগ করে বসে আছেন। যাঁরা পদত্যাগ করেননি তাঁদের মধ্যে একজন সহসচিব খালিদ হোসেন শনিবার দুপুরে এসে তালা খোলেন সংস্থার দরজার। বিকেলে ডেকার্স লেনের অন্ধকার সিঁড়ি ভেঙে তিন তলায় বিএইচএ অফিসে গিয়ে দেখা গেল সবই শুনশান এবং আধো অন্ধকারে বসে আছেন তিনি। দু’একজন এ দিক-ওদিক ঘোরাফেরা করছেন। টেবলের উপর ধুলো পড়েছে। আলমারি খোলা। বন্ধ কম্পিউটরের সামনে বসে খালিদ দাবি করলেন, ‘‘এ বার বেটন কাপ হবে সাইয়ের নতুন তৈরি নীল কৃত্রিম ঘাসে। বেটন শুরু হবে ২০ ডিসেম্বর থেকে। তিনটি তেল কোম্পানিসহ আটটি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আসবে বলে কথা দিয়েছে। কুড়ি লাখ টাকা বাজেট।’’ কিন্তু যেখানে ব্যাঙ্কে পড়ে রয়েছে মাত্র ছয় হাজার টাকা, সেখানে কুড়ি লাখ টাকা আসবে কোথা থেকে? ‘‘সচিব কাশ্মীর থেকে ফিরে এসে স্পনসর জোগাড় করে দেবেন,’’ বলে হেসে ফেলেন অফিস আগলে বসে থাকা হকির সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ওই কর্তা। তারপর যোগ করেন, ‘‘সচিবকে বারবার বলছি নির্বাচন করুন। সব ঝামেলা মেটান। না হলে হকি বন্ধ হয়ে যাবে। কিছুই তিনি করছেন না।’’
কিন্তু ঢাল-তলোয়ারহীন খালিদের কথা শুনবে কে? সংস্থায় অচলাবস্থা, ব্যাঙ্কে টাকা নেই, রাজ্য জুড়ে হকির এই বেহাল অবস্থা নিয়ে তীব্র আলোড়ন— এ সবকে তোয়াক্কা না করে বিএইচও সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় চলে গিয়েছেন কাশ্মীরে। মোহনবাগান দলের সঙ্গে। রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে আই লিগ ম্যাচের ম্যানেজার হয়ে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে। যাওয়ার আগে হকি সংস্থার কারও সঙ্গে আলোচনাও করেননি অচলাবস্থা কাটানো নিয়ে। অন্তত সে রকমই জানালেন খালিদ। ফলে দরজার তালা খুললেও হকি সংস্থায় আলোর দিশা নেই। এ দিকে রাজ্য হকির হাল ফেরানোর জন্য এবং দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে তিরিশটি ক্লাবের কর্তা ও খেলোয়াড়রা রাস্তায় নামতে চলেছেন বলে খবর। আগামী সপ্তাহে কিছু অলিম্পিয়ান ও জাতীয় দলের খেলোয়াড়কে সামনে রেখে ময়দানে মিছিল ও রাজ্য সংস্থার দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।