আইপিএল নাইনের শেষটাও ঠিক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের মতোই শেষ হল— দুরন্ত একটা লড়াই দিয়ে। ম্যাচটায় আগাগোড়া মোড়া ছিল নাটকীয় আর মোড় ঘোরানো মুহূর্তে। ডেভিড ওয়ার্নারের টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সাহসী সিদ্ধান্ত সম্ভবত ওর বোলারদের উপর বিশ্বাসেরই ইঙ্গিত। বা গত কয়েকটা ম্যাচে রান তাড়া করার সময় সানরাইজার্সকে খুব একটা স্বচ্ছন্দে লাগেনি, হয়তো সে জন্য। যাই হোক না কেন, হায়দরাবাদের ব্যাটসম্যানরা কিন্তু ওয়ার্নারের সিদ্ধান্তের মর্যাদা রেখেছে।
অনেকে রবিবারের ফাইনালকে বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যান বনাম হায়দরাবাদের বোলারদের লড়াই হিসেবে দেখছিলেন। আমার মতে, সেটা আসল পরিস্থিতিকে অসম্ভব বেশি সরল করে দেখা। হায়দরাবাদ ব্যাট করতে নেমে কিন্তু ২০টা ওভারই দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছিল। এবং এই তৃপ্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছিল যে ব্যাটিংয়ে নিজেদের সেরাটা ওরা মাঠে দিয়ে এসেছে। এই ব্যাপারটাই কিন্তু ওদের মধ্যে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করার আত্মবিশ্বাসটা তৈরি করে দেয়। যে কারণে শুরুতে মার খেলেও টিমটা এক বারের জন্যও হাল ছাড়েনি বরং সব সময় উইকেট তোলার জন্য চেষ্টা করে গিয়েছে। তাও এমন একটা অবস্থায় যখন মনে হচ্ছিল বিরাট কোহালি আর ক্রিস গেইল ম্যাচটা ছিনিয়ে নিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন টিমকে চেনা যায় স্নায়ু দৃঢ় রেখে টিমটা কী ভাবে চোখে চোখ রেখে চ্যালেঞ্জের মোকবিলা করছে তাতে। রবিবারের ম্যাচে হায়দরাবাদকে চ্যাম্পিয়নের মতোই লেগেছে। ওরা প্রমাণ করে দিয়েছে টসের উপর ম্যাচের হার-জিত নির্ভর করে না। নির্ভর করে টস থেকে তুমি কতটা সুবিধে নিতে পারছ তার উপর।
অবশ্যই হায়দরাবাদের বোলিং একটা বড় ব্যাপার ছিল। ওদের বোলিংয়ে কিন্তু আগাগোড়া দাপট দেখিয়ে গিয়েছে পেসাররা। তাও এমন একটা পরিবেশে, ঐতিহ্যগত ভাবে যে ভারতীয় কন্ডিশন থেকে পেস বোলিং সাহায্য পায় না। এই জন্যই ওদের এই সাফল্যটা অন্য মাত্রার। সঙ্গে হায়দরাবাদ কিন্তু আরও এক বার দেখাল রান রোখার সবচেয়ে নিশ্চিত উপায়, উইকেট তুলে যাওয়া। হায়দরাবাদের বোলিংয়ে অনেক তারকাই আছে। তার মধ্যে ভুবনেশ্বর কুমারের নাম করতেই হবে। ছেলেটার ডেথ ওভারে বোলিং গোটা টুর্নামেন্টেই কিন্তু অন্য দলের সঙ্গে হায়দরাবাদের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।