বুম বুম সার্ভিস ফাইনালে এগিয়ে ফেডেরারই

মানসিকতায় এগিয়ে রজার

গত এগারো বছরের মধ্যে এই প্রথম বার উইম্বলডন ফাইনালে উঠেছে মারিন চিলিচ। রবিবার ফাইনালে চিলিচের উল্টো দিকে যে থাকবে তার আবার এটা এগারো নম্বর উইম্বলডন ফাইনাল। এটা ঠিক যে ফাইনালে মারিন চিলিচ-এর ওঠাটা অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত।

Advertisement

বরিস বেকার

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০৪:৩৮
Share:

রজার ফেডেরার।ছবি: সংগৃহীত

এক কথায়, এ বারের উইম্বলডনে পুরুষদের ফাইনাল হতে চলেছে ফর্মে থাকা এক চূড়ান্ত প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের সঙ্গে একজন কিংবদন্তির মধ্যে।

Advertisement

গত এগারো বছরের মধ্যে এই প্রথম বার উইম্বলডন ফাইনালে উঠেছে মারিন চিলিচ। রবিবার ফাইনালে চিলিচের উল্টো দিকে যে থাকবে তার আবার এটা এগারো নম্বর উইম্বলডন ফাইনাল। এটা ঠিক যে ফাইনালে মারিন চিলিচ-এর ওঠাটা অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত। কিন্তু তার মানে এই নয় যে টেনিস পণ্ডিতরা ওকে সম্ভাব্য ফাইনালিস্টদের তালিকায় রাখেননি। বরং পণ্ডিতদের অনেকের মতেই মারিন হল উইম্বলডনের কালো ঘোড়া যে ফেডেরারকেও কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।

অন্য দিকে রজার ফেডেরারকে দেখে মনে হচ্ছে টেনিসটাকে ও দারুণ ভাবে উপভোগ করেছে। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই সবাই ওকে ফেভারিট বলেছে। আর টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে ততই ওকে অপরাজেয় লাগছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: আমি তৈরি, হুঙ্কার চিলিচের

প্রশ্ন— ২০১৭-তে এসে রজার ফেডেরারের মধ্যে নতুন কী দেখছি? আমার মতে এই ফেডেরারের মানসিকতা-টাই আলাদা। ও জানে যে কোর্টে অবিশ্বাস্য ফর্মে খেললেও সার্কিটে ওর সময় কমে আসছে। এটাই বড় টুর্নামেন্টগুলিতে ওকে নতুন করে প্রেরণা জোগাচ্ছে।

শুক্রবার বার্ডিচের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে টেনিসের প্রায় সব রকমের পরীক্ষাই দিতে হয়েছে ফেডেরারকে। কারণ ঘাসের কোর্টে বার্ডিচও বেশ ভাল খেলোয়াড়। কিন্তু খেলা দেখে মনে হল বার্ডিচ যে স্ট্র্যাটেজি নিয়ে মাঠে নেমেছে তার উত্তর জানা রয়েছে ফেডেরারের। সার্ভিসটা ও এখন এতটাই ভাল করছে যে রিটার্ন ও ফোরহ্যান্ডে মন দিতে পারছে। বার্ডিচের বিরুদ্ধে ফেডেরার যে কড়া পরীক্ষার সামনে পড়েছিল তা ফেডেরার হয়তো স্বীকার করবে না। কিন্তু ফেডেরার যে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তা ওর শরীরী-ভাষাই বলে দিচ্ছিল। আমি খুব কমই সুইস-জার্মান ভাষায় বিড়বিড় করতে দেখেছি ফেডেরারকে। কিন্তু ওকে নিজের মাতৃভাষায় নিজেকেই তিরস্কার করতে দেখলাম। যা কিন্তু সচরাচর ও করে না।

আমার মতে ফেডেরার যদি এই ফর্ম ফাইনালেও ধরে রাখতে পারে, তা হলে কিন্তু ওকে হারানো বেশ শক্ত। কারণ ও জানে কী ভাবে ম্যাচ বার করতে হয়। আর এ কাজে ফেডেরারকে সাহায্য করে ওর ঝকঝকে ফিটনেস। এই উইম্বলডনে ফেডেরারকে ফাইনালে উঠতে খুব বেশি ঘাম ঝরাতে হয়নি।। ফলে ও কিন্তু মোটেই ক্লান্ত হয়ে ফাইনালে নামবে না। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে ও যে রকম সার্ভ করে গিয়েছে তা যদি রবিবারও ধরে রাখতে পারে, তা হলে চিলিচের সমস্যা বাড়বেই।

তবে চিলিচও জানে ফেডেরারকে কী ভাবে হারাতে হয়। এক বছর আগে ও ফেডেরারের বিরুদ্ধে ম্যাচ পয়েন্ট পেয়েছিল, ফাইনালে সে রকম ফর্ম ফিরে পেতে ও নিশ্চয়ই মরিয়া চেষ্টা চালাবে। চিলিচের উচ্চতা বেশি না হলেও কোর্টে ওর ছটফটানি দেখার মতো। ক্ষিপ্রতার সঙ্গে কোর্টের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যায়। যা ফেডেরারকে মুশকিলে ফেলতেই পারে। তা ছাড়া ওর সার্ভিসও বেশ ভাল।

চিলিচ নিজেও জানে সেটা ওর একটা বড় অস্ত্র। ফলে ফেডেরারকে হারিয়ে অঘটন ও ঘটাতেই পারে। তবে ফেডেরারকে এগিয়ে রাখতে হচ্ছে ওর মানসিকতার জন্য। শুক্রবার ম্যাচ চলাকালীন চিলিচকে কখনও কখনও মানসিক ভাবে বেশ অস্থির লাগছিল। এই জায়গাতেই এগিয়ে রজার।

সেমিফাইনালে চিলিচ যাকে হারিয়েছে সেই স্যাম কুয়েরির প্রশংসাও করতে হবে। গত এক বছর ধরেই কিন্তু ও বেশ ভাল খেলছে। আমার অনুমান হার্ড কোর্ট টুর্নামেন্টগুলোতে আগামী দিনে ও ভাল করবে।

আবার উইম্বলডন ফাইনালে ফিরে আসি। আমার মতে একটা দুর্দান্ত একটা ম্যাচ হতে চলেছে ফাইনালে। যেখানে আমি এগিয়ে রাখছি রজার ফেডেরারকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন