অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ: ডিফেন্ডার বরিস সিংহ থাংজেইম

বাবার আপত্তি উপেক্ষা করেই ফুটবলে মণিপুরের নয়া তারকা

এক দিন বরিসকে ডেকে তার বাবা খোলাখুলি বললেন, ‘‘ফুটবল খেলে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কিন্তু সহজ নয়। তাই ভেবে দেখো, ফুটবল খেলবে না লেখাপড়া করবে?’’ বছর এগারোর বরিস অবশ্য দু’বার ভাবেনি।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৫
Share:

বছর ছয়েক আগে অদ্ভুত সমস্যায় পড়েছিল বরিস সিংহ থাংজেইম। বাবা চাইতেন ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য আনুক। কিন্তু বরিস স্বপ্ন দেখত ফুটবলার হওয়ার। ইম্ফলের রাস্তায় বন্ধুদের সঙ্গে টেনিস বল দিয়েই চলত ফুটবল।

Advertisement

এক দিন বরিসকে ডেকে তার বাবা খোলাখুলি বললেন, ‘‘ফুটবল খেলে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কিন্তু সহজ নয়। তাই ভেবে দেখো, ফুটবল খেলবে না লেখাপড়া করবে?’’ বছর এগারোর বরিস অবশ্য দু’বার ভাবেনি। সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দেয়, ফুটবলার হওয়াই তার একমাত্র লক্ষ্য। বাবা আপত্তি করলেও অনূর্ধ্ব-১৭ ভারতীয় দলের ডিফেন্ডার অবশ্য সেই সময় পাশে পেয়েছিল ঠাকুমা ও কাকা-কে।

যুব বিশ্বকাপের প্রস্তুতির ফাঁকে আনন্দবাজার-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বরিস শোনাল তার উত্থানের কাহিনি, ‘‘ইম্ফলে আমাদের ছোটাখাটো মুদি দোকান ছিল। বাবা ও মা দু’জনেই দোকান চালাতেন। কিন্তু হঠাৎই ব্যবসায় মন্দা দেখা দেওয়ায় দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন ওঁরা। দিন মজুরের কাজ করে কোনও মতে সংসার চালাতেন বাবা। সেই কারণেই আমাকে ইঞ্জিনিয়ার বানাতে চেয়েছিলেন।’’

Advertisement

• বরিস সিংহ থাংজেইম

• জন্ম: ৩ জানুয়ারি ২০০০, মণিপুর

• পজিশন: সাইডব্যাক

• আদর্শ: ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও উদান্ত সিংহ

ফুটবলার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে অবশ্য বাবাকে পাশেই পেয়েছেন বরিস। শুধু তাই নয়। ছেলে ঠিকমতো প্র্যাকটিস করছে কি না নিয়মিত তার খোঁজও নিতেন। কোচকে জিজ্ঞেস করতেন, ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো প্রতিভা বরিসের আছে কি না।

ভারতীয় দলের রক্ষণের অন্যতম ভরসা হলেও বরিসের আদর্শ কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে কোনও ডিফেন্ডার নন। তার প্রিয় তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও উদান্ত সিংহ! কেন? তার কথায়, ‘‘ওঁদের হার না মানা মানসিকতা আমাকে সব সময় অনুপ্রাণিত করে। রোনাল্ডো ও উদান্ত, দু’জনেই উইং দিয়ে বল নিয়ে আক্রমণে উঠে। সাইডব্যাক হিসেবে আমিও উইং দিয়ে উঠে দলকে আক্রমণে সাহায্য করার চেষ্টা করি।’’

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে লক্ষ্য কী? আত্মবিশ্বাসী বরিসের উত্তর, ‘‘বিশ্বকাপ স্মরণীয় করে রাখতে মরিয়া আমি। তার জন্য বাড়তি পরিশ্রম করতেও আপত্তি নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন