ইংল্যান্ড কাঠগড়ায় তুলছে তার প্রিয় অধিনায়ককে

অভিষেক থেকে মাস দেড়েক আগে পর্যন্তও তিনি ছিলেন ব্রিটিশ মিডিয়ার প্রিয়পাত্র। ভারতীয় উপমহাদেশে অবশ্য সময়টা যা যাচ্ছে অ্যালিস্টার কুকের, তাতে তাঁর দেশজ মিডিয়া আর ইংল্যান্ড অধিনায়কের সম্পর্কটা এখন শীতল বললেও কম বলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:১১
Share:

অভিষেক থেকে মাস দেড়েক আগে পর্যন্তও তিনি ছিলেন ব্রিটিশ মিডিয়ার প্রিয়পাত্র। ভারতীয় উপমহাদেশে অবশ্য সময়টা যা যাচ্ছে অ্যালিস্টার কুকের, তাতে তাঁর দেশজ মিডিয়া আর ইংল্যান্ড অধিনায়কের সম্পর্কটা এখন শীতল বললেও কম বলা হয়।

Advertisement

ওয়াংখেড়ে টেস্ট শুরুর আগে শিল্ড বেরি লিখেছিলেন, এই টেস্ট হারলে সঙ্গে সঙ্গে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া উচিত কুকের। মুম্বইয়ে ইনিংস হারের পরে কুক জানিয়েছেন, ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছেন। ‘‘বছরশেষে আমি অ্যান্ড্রু স্ট্রসের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করব। তবে আমার জায়গা বদলায়নি। এই টেস্টের ফলাফলের উপর সেটা নির্ভর করে ছিল না,’’ এ দিন বলেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘জো রুট কিন্তু নেতৃত্ব দিতে তৈরি। ড্রেসিংরুমে সবাই ওকে সম্মানও করে।’’

কুক আরও বলেছেন, ভারতীয় উপমহাদেশে যে কোনও সফর খুব কঠিন। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, তাঁর এ সব অজুহাত শুনতে তৈরি নয় ইংল্যান্ডের ক্রিকেটমহল। সেখানে জোর গুঞ্জন যে, কুকের অধিনায়কত্ব বাড়াবাড়ি রকমের রক্ষণশীল, গোঁড়া। বলাবলি হচ্ছে যে, পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে নিজের নেতৃত্ব বদলাতে পারছেন না কুক। জিওফ বয়কট তো তাঁর কলামে লিখেই দিয়েছেন, ‘কুকের ক্যাপ্টেন্সি সময় সময় মাথার উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। অ্যান্ডারসন আমাদের দেশের অন্যতম সেরা পেসার। তাকে কিনা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হল, নিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা একটা বাচ্চা তৃতীয় আর চতুর্থ দিন সকালে বোলিং ওপেন করছে! ১২৯ ওভার অপেক্ষার পরে ও নতুন বলটা পেল। ততক্ষণে স্পিনাররা স্পঞ্জ দিয়ে বল করছে।’

Advertisement

এখানেই শেষ নয়। স্পিনারদের ব্যবহার নিয়েও কুককে তুলোধোনা করা হচ্ছে তাঁর দেশে। প্রশ্ন উঠছে, ভারত যেখানে দুই সিমার আর তিন স্পিনার খেলাল, সেখানে কেন চার সিমার-দুই স্পিনারে গেলেন কুক? যারা নিজেদের ঘরের মাঠে খেলছে, তাদের টিম কম্বিনেশন দেখে কেন শিখলেন না তিনি? আর কত দিন স্লিপ আর গালি রেখে তিনি অপেক্ষা করে থাকবেন, কখন তাঁর পেসাররা উইকেট তুলবেন? কেন শুধু সুইং আর সিম সহায়ক উইকেটেই ইংল্যান্ডের বোলিং ভাল করবে?

সমালোচনার তির থেকে রেহাই পাননি অ্যান্ড্রু স্ট্রসও। যাঁকে ইংরেজ ক্রিকেটের দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছে বোর্ড। প্রশ্ন উঠছে, ইংল্যান্ড ব্যাটিং লাইন আপের এমন অবস্থা কেন হবে, যেখানে চার আর পাঁচ নম্বরে ব্যাট করবেন দলের এক নম্বর অফস্পিনার আর উইকেটকিপার? কেন নির্বাচকরা তরুণ ব্যাটসম্যান তুলে আনার চেষ্টা করবেন না?

ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়ার্স মর্গ্যান আবার টুইট করে প্রশ্ন করেছেন, কুক কি তা হলে নেতৃত্ব ছাড়ছেন? জো রুট কি অবশেষে অধিনায়ক হচ্ছেন? এই মর্গ্যানই বিশাখাপত্তনম টেস্ট হারের পর দাবি তুলেছিলেন যে, কেভিন পিটারসেনকে অবিলম্বে দলে ফেরানো উচিত। কেপির হয়ে সওয়াল করছে ব্রিটিশ মিডিয়াও। বলা হচ্ছে, কুকের নেতৃত্বের উপর প্রকাশ্য আস্থা দেখাতে গিয়ে কেপিকে বাদ দিয়েছিলেন স্ট্রস। সারের হয়ে সে দিনই দুর্দান্ত ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন পিটারসেন। এ বার স্ট্রসের নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করা উচিত যে, কেপি-হীন ইংরেজ ক্রিকেট কি আদৌ সুখে আছে? সুস্থ আছে?

সোমবার টিমের হার যখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, তখন ইংরেজ ক্রিকেট-ভক্তদের আবার অদ্ভুত একটা কাজ করতে দেখা গেল। টিমের পাশি আছি, এই মর্মে ভক্তদের টুইট মাঠের ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডে তুলে ধরা হচ্ছিল। সেখানে হঠাৎই দেখা যায়, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে যৌন নির্যাতনে জড়িত বিভিন্ন নাম ভেসে উঠছে।

শাসনে অভ্যস্ত প্রজাতি চরম ভাবে শাসিত হলে সেই যন্ত্রণা বোধহয় এ ভাবেই ফুটে ওঠে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন