যুবভারতী পরিদর্শনে ফিফা প্রতিনিধি দল। সঙ্গে দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও লক্ষ্মীরতন শুক্ল। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
ফুটবল বিশ্বকাপ পেল কলকাতাও।
ভারতের এখনও সৌভাগ্য হয়নি বিশ্বকাপ খেলার। তাতে কী? বিশ্বকাপ আয়োজনের ছাড়পত্র পাওয়াও কী কম কৃতিত্বের? আর যে ছ’টা শহর বাছা হল ২০১৭ অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য, তাতে সবার শেষে ছাড়পত্র পেয়ে সবার উপরে নাম কলকাতার!
মঙ্গলবার ফিফার তেইশ জনের প্রতিনিধি দল যুবভারতী পরিদর্শনে এসেছিলেন। সেখানেই শহরকে বিশ্বকাপ আয়োজন করার ছাড়পত্র দেওয়ার সঙ্গে একটা সার্টিফিকেটও তুলে দিল ফিফা। টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান মারিয়ন মায়ের-ভরফেল্ডার বললেন, ‘‘যে ভেনুগুলো আমরা দেখেছি, তাতে কলকাতাই সবচেয়ে ভাল। আর যুবভারতী ভারতের সেরা স্টেডিয়াম।’’ যা শুনে তাঁর পাশেই বসা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলে উঠলেন, ‘‘শুধু দেশের নয় বিশ্বের সেরা স্টেডিয়াম বানানোর কাজ শুরু করে দিয়েছি আমরা।’’
প্রাপ্তির ঝুলি অবশ্য এখানেই শেষ নয়। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফাইনালও হতে পারে যুবভারতীতে। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, তাতে উদ্বোধন এবং ফাইনালের মধ্যে যে কোনও একটা বড় ইভেন্ট শহর পাচ্ছে। তবে ফিফা প্রতিনিধিরা এ দিন যা ইঙ্গিত দিলেন, তাতে শহরে কাপ ফাইনাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ দিনই টুর্নামেন্টের তারিখ ঘোষণা করে দিলেন তাঁরা। মারিয়নের কথায়, ‘‘পরের বছর ছয় থেকে আঠাশ অক্টোবর হবে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ। যে টুর্নামেন্টে চব্বিশ দেশ ভারতের ছ’টা শহরে খেলবে।’’ কলকাতা ছাড়া বাকি ভেনু কোচি, গোয়া, দিল্লি, মুম্বই ও গুয়াহাটি।
তবে কলকাতার হাতে বিশ্বকাপ আয়োজনের ছাড়পত্র চলে এলেও যুবভারতীতে এখনও অনেক কাজ বাকি। মূলত স্টেডিয়ামের দু’টো কাজের ভিত্তিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। মাঠ ও ড্রেসিংরুম। প্লেয়ারদের জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি জরুরি। ফিফা প্রতিনিধি দলের প্রধান এ দিন বললেন, ‘‘আমরা চারটে ড্রেসিংরুম তৈরির কথা বলেছিলাম। সঙ্গে টার্ফের চেহারা কেমন হচ্ছে, সেটাও নজরে রেখেছিলাম। এ দিন সেই দু’টো দেখেই আমরা দারুণ খুশি। যে গতিতে কাজ এগোচ্ছে, তাতেও আমরা সন্তুষ্ট।’’
ক্রীড়ামন্ত্রী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। যেটাকে ‘ফাইনাল ডেডলাইন’ ধরে এগোচ্ছেন ফিফা প্রতিনিধিরাও। এবং যে ভাবে দ্রুত কাজ হচ্ছে, তার জন্য রাজ্য সরকারের প্রশংসা করলেন মারিয়ন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আইএসএলের বিরোধী নই। কিন্তু যুবভারতীতে আইএসএল হলে এই কাজ কখনই শেষ হত না। আমরা এ রাজ্যের সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’
এখনও পর্যন্ত যা ঠিক, তাতে কলকাতাকেই যুব বিশ্বকাপের সদর দফতর করার কথা। এমনকী টুর্নামেন্টের রেফারিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হওয়ার কথাও যুবভারতীতে। যার জন্য দু’টো আলাদা মাঠ তৈরি করা হচ্ছে। ফুটবলারদের চারটে প্র্যাকটিস মাঠ ছাড়াও। যুবভারতীর দর্শকাসন কমে হচ্ছে পঁচাশি হাজার। যা শুনে ফিফার প্রতিনিধিরা আরও একটা ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন এ দিন, ‘‘যুবভারতীতে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ যদি সফল হয়, তা হলে এখানে ভবিষ্যতে ফিফা আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচ দেওয়ার কথাও ভাবা হবে।’’