অঙ্ক কষেই ইতিহাসের সাক্ষী হতে চায় চেন্নাই

এরকম অনুকূল আবহেও কোয়ম্বত্তূরে চেন্নাই সিটি এফ সি-র সমর্থকরা দলের স্বার্থে অত্যন্ত সংযত। কলকাতার কোনও দল হলে এই অবস্থায় সদস্য-সমর্থকরা উত্তেজনার তুফান তুলতেন। তামিলনাড়ুর এই ফুটবল শহরে আই লিগ ফাইনালের আগের দিন কিন্তু ফুটবলপ্রেমীরা সংযত।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০৪:৫১
Share:

একটা জয় চেন্নাই সিটি এফ সি-কে পৌঁছে দেবে ইতিহাসের পাতায়।

আই লিগ টেবলে তারা এখনও শীর্ষে। আর মাত্র একটা জয় তাদের ক্লাবকে পৌঁছে দেবে ইতিহাসের পাতায়। নতুন চ্যাম্পিয়ন পাবে আই লিগ। ১৯ ম্যাচে ৪৫ গোল করে অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো এগিয়েছে তারা। দলে রয়েছেন পেদ্রো মানজ়ির মতো এমন স্প্যানিশ ফুটবলার, যিনি কুড়ি গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার লড়াইয়ে রয়েছেন।

Advertisement

এরকম অনুকূল আবহেও কোয়ম্বত্তূরে চেন্নাই সিটি এফ সি-র সমর্থকরা দলের স্বার্থে অত্যন্ত সংযত। কলকাতার কোনও দল হলে এই অবস্থায় সদস্য-সমর্থকরা উত্তেজনার তুফান তুলতেন। তামিলনাড়ুর এই ফুটবল শহরে আই লিগ ফাইনালের আগের দিন কিন্তু ফুটবলপ্রেমীরা সংযত। কেন? চেন্নাইতে ফোন করে জানা গেল, দল চাপে পড়ে যেতে পারে বলে সেখানকার ‘ফ্যানস অ্যাসোসিয়েশন’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা উৎসব হবে তা ট্রফি হাতে আসার পর। দলের এক কর্তা বললেন, ‘‘ম্যাচের আগে উৎসব শুরু করলে দল চাপে পড়ে যেতে পারে। ম্যাচ জেতার পর হবে উৎসব।’’

গতবারের চ্যাম্পিয়ন মিনার্ভা পঞ্জাবের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগের দিন চেন্নাই কোচ আকবর নাওয়াসের গলা অদ্ভুত রকমের শান্ত। ‘‘আমরা তো আশাই করিনি শেষ ম্যাচের আগের দিন পর্যন্ত লিগ শীর্ষে থাকব। গত বার লিগ টেবলের তলার দিকে ছিলাম। ছেলেরা যা করেছে সেটাই তো প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। এখন আমরা সত্যিই খেতাব জয়ের স্বপ্ন দেখছি। ঘরের মাঠে ট্রফি জেতার আনন্দই আলাদা।’’ ফোনে বলে দিয়েছেন সিঙ্গাপুরজাত কোচ আকবর। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আমরা জানি কোঝিকোড়ে ইস্টবেঙ্গল চার বা পাঁচ গোলে জিতবে গোকুলমের বিরুদ্ধে। সেটা মাথায় রেখেই এই ম্যাচে খেলতে নামব আমরা। লক্ষ্য ম্যাচ জেতা।’’

Advertisement

দলের মাঝমাঠের স্তম্ভ নেস্তর গর্দিয়ো কার্ডের জন্য খেলতে পারছেন না এই ম্যাচে। তবে মানজ়ি-সহ বাকি তিন স্প্যানিশ ফুটবলারই খেলবেন। ৮ গোল করা গর্দিয়ো খেলতে পারবেন না বলে হাহুতাশ করতে রাজি নন চেন্নাই কোচ। বললেন, ‘‘আমার দলে সব ফুটবলারই সমান। যে ১১ জন খেলবে তারাই সেরা।’’ প্রচুর গোল করলেও চেন্নাইয়ের সমস্যা তাদের রক্ষণ। ২৭ গোল খেয়েছে তাঁরা।

আগাম কোনও উৎসবের আয়োজন না রাখলেও সমর্থকদের জন্য চেন্নাই কর্তারা স্টেডিয়ামের সব দরজা হাট করে খুলে দিচ্ছেন। কোনও টিকিট বিক্রি করছেন না। কর্তারা চাইছেন, শহরের সব ফুটবলপ্রেমী এসে খেতাব জয়ের সাক্ষী থাকুন। রটনা ছিল, ‘বন্ধু’-র দল বলে চেন্নাইকে ম্যাচ ছেড়ে দেবে মিনার্ভার মালিক রঞ্জিত বাজাজ। আজ শনিবার মাঠে যাই হোক মিনার্ভার কোচ সচিন বাধাদে কিন্তু ফোনে বললেন, ‘‘প্রথম পর্বে চেন্নাই আমাদের হারাতে পারেনি। আমাদের উপর কোনও চাপ নেই। ওরা চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। চাপ তো ওদেরই।’’ এই ম্যাচে মিনার্ভার বড় ভরসা ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী আল আমনা। যা অঙ্ক তাতে আমনার দল পয়েন্ট পেলে লাভ এনরিকে এসকুয়েদাদের। যা শুনে হাসছেন আমনা। বললেন, ‘‘বহু ইস্টবেঙ্গল সমর্থক আমাকে অনুরোধ করছেন যে করেই হোক, চেন্নাইকে হারাতে।’’

আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসদের বাতিল করা আমনাই যে এখন তাঁর খেতাব জয়ের পথে বড় ভরসা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন