কেরল-চেন্নাই ম্যাচের একটি দৃশ্য। ছবি সৌজন্যে আইএসএল।
চেন্নাইয়ান এফসি – ১ কেরালা ব্লাস্টার্স – ১
(মিহেলিচ পে. ৮৯) ((বিনীত ৯০+৪)
চতুর্থ হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগের শীর্ষে এখন এককভাবে চেন্নাইয়ান এফসি। ঘরের মাঠ মেরিনা এরিনা-য় ‘দক্ষিণী ডার্বি’ তাঁরা জিততে পারেনি ঠিকই। শেষ মুহূর্তে গোল করে কেরালা ব্লাস্টার্সের জন্য এক পয়েন্ট নিয়ে এলেন সিকে বিনীত। তবুও ৭ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এই মরসুমে প্রথমবার শীর্ষে উঠে এল জন গ্রেগরির চেন্নাইয়ান এফসি।
ম্যাচের একটা সময় কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন অধিনায়ক সন্দেশ ঝিঙ্গন, যাঁর ভুলে পেনাল্টি পেয়েছিল চেন্নাইয়ান। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ের শেষে থ্রো ইন থেকে বল পেয়ে সেই ঝিঙ্গনই বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বক্সের মধ্যে আগুয়ান সিকে বিনীতের জন্য। সমতা ফেরাতে কোনও ভুল করেননি বিনীত। এক পয়েন্ট নিয়ে কেরল ৬ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে থেকে গেল সপ্তম স্থানেই।
ম্যাচের প্রথম গোল ৮৯ মিনিটে, পেনাল্টি থেকে গোল পায় চেন্নাইয়ান। ম্যাচ যেভাবে এগোচ্ছিল, পেনাল্টি ছাড়া গোল হওয়া ক্রমশ কঠিনই মনে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সিসের শট আটকাতে গিয়ে কেরল ব্লাস্টার্সের অধিনায়ক সন্দেশ ঝিঙ্গনের ছড়ানো হাতে লেগে গিয়েছিল বল। সামনেই ছিলেন রেফারি। ঝিঙ্গনকে হলুদ কার্ড দেখাতে আর পেনাল্টির সিদ্ধান্ত জানাতে দেরি করেননি। স্লোভেনীয় ফুটবলার রেনে মিহেলিচ পেনাল্টি নিতে এসে রাচুবকাকে উল্টোদিকে ফেলে গোল করে সহজেই এগিয়ে দিয়েছিলেন চেন্নাইকে।যে-ম্যাচে প্রথম ৮৮ মিনিট গোল হয়নি একটিও, শেষ ছয় মিনিটে দুই দলের দু-গোল।
আরও পড়ুন: হিউমের পরামর্শেই এটিকে-তে টেলর
২৩ মিনিটে কেরালা ব্লাস্টার্সকে এগিয়ে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন জ্যাকিচাঁদ সিং। ফলে বক্সের ডানদিকে একেবারে ফাঁকায় ছিলেন জ্যাকিচাঁদ। যখন তাঁর পায়ে বল, সামনে শুধু চেন্নাইয়ানের গোলরক্ষক করণজিৎ সিং। কিন্তু জ্যাকিচাঁদ সেখান থেকে গোলরক্ষককেও পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। তাঁর ডানপায়ের শট বারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।
কেরল ব্লাস্টার্সের জন্য আরও খারাপ খবর। প্রথমার্ধের ৩৮ মিনিটে যখন নির্ভরযোগ্য ফুটবলার রিনো আন্তো পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে। দু-মিনিট পর তাঁকে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন ডাচ কোচ রেনে মিউলেনস্টিন।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য পেকুসন নিজেই পরীক্ষা নিয়েছিলেন ম্যাচের নায়ক করণজিতের। ৭১ মিনিটে ব্রাউনের পাস থেকে বল পেয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে দূর থেকে দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন ঘানার পেকুসন। কিন্তু করণজিৎ তৈরি ছিলেন। বলটা শুরু থেকেই দেখতে পেয়েছিলেন বলে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে বল বের করে দিতে অসুবিধা হয়নি। ঠিক দশ মিনিট পর, চেন্নাইয়ানের পক্ষে পরিবর্ত হিসাবে মাঠে এসে গ্রেগরি নেলসনও ডানপায়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: আইএসএল মূল স্রোতে ফেরাচ্ছে পঞ্জাবের ফুটবলারদের
প্রথমার্ধে চেন্নাইয়ান এফসি-র প্রাধান্যই ছিল। কিন্তু এবারের আইএসএল-এ যা বারবারই দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ দলই অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে বিপক্ষের গোলমুখ খুলে ফেলা বা নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছে না সেভাবে। প্রায় ৬৫ শতাংশ বলের দখল রেখেও কেরলের গোলে মাত্র একটিই শট নিতে পেরেছিল অভিষেক বচ্চনের দল। এই একটি পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, ‘পজেশন’ থাকলেও ‘পেনিট্রেশন’ ছিল না চেন্নাইয়ের।
দুই দলই কিন্তু এই ম্যাচ খেলতে এসেছিল আগের ম্যাচে জিতে। চেন্নাইয়ান তো বেঙ্গালুরু এফসি-কে হারিয়ে এসেছিল, বেঙ্গালুরু থেকে। আর কেরলের কাছে হেরেছিল নর্থইস্ট ইউনাইটেড। মিউলেনস্টিনের দল শুরু করেছিল প্রথম তিনটি ম্যাচ ড্র রেখে। শুক্রবার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম থেকে তুলে নিয়ে গেল আরও এক পয়েন্ট যা ‘দক্ষিণী ডার্বি’-র কথা মাথায় রাখলে, বেশ গুরুত্বপূর্ণ।