chess

Chess Olympiad 2022: লাইনে হাজার হাজার দর্শক! দাবা অলিম্পিয়াড দেখে মুগ্ধ গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু

কেমন হল দাবা অলিম্পিয়াড? চেন্নাই থেকে ফিরে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন বাংলার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ১৭:৩১
Share:

ভারতীয় দাবাড়ু তানিয়া সচদেব। মহিলাদের ব্রোঞ্জজয়ী দলের সদস্য তিনি। ছবি: পিটিআই

চার মাস। মাত্র চার মাস সময় পেয়েছিল তামিলনাড়ু সরকার। আর এই চার মাসে অসাধ্যসাধন করেছে তারা। ১৮৬ দেশের ১৭০০-র বেশি দাবাড়ুকে নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা সহজ নয়। চেন্নাইয়ের কাছে মামাল্লাপুরমে ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াডের আয়োজন দেখে মুগ্ধ বাংলার প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া। প্রতিযোগিতা শেষে কলকাতায় ফিরে আনন্দবাজার অনলাইনকে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন দিব্যেন্দু।

Advertisement

ভারতে দাবার সব থেকে বড় প্রতিযোগিতার আয়োজনে কোনও কসুর রাখেনি এমকে স্টালিন সরকার। ১০০ কোটির বেশি টাকা খরচ করেছে তারা। ক্রিকেটের বাইরে কোনও খেলায় একটা রাজ্য এত টাকা খরচ করছে, সচরাচর দেখা যায় না। বিমানবন্দরে পা রাখার পর থেকেই দাবাড়ুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দিব্যেন্দু বললেন, ‘‘সবাইকে বাস বা গাড়িতে করে মামাল্লাপুরমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বাসগুলোকে দাবার ছকে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। বিমানবন্দর থেকে মামাল্লাপুরম দেড় থেকে দু’ঘণ্টার রাস্তা। সেই রাস্তার দু’দিক পোস্টার, ব্যানার, ফ্লেক্সে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। নেপিয়ার ব্রিজকেও সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল। দেখে বোঝা যাচ্ছিল এই প্রতিযোগিতাকে কতটা গুরুত্ব দিয়েছে ওরা।’’

শুধু আয়োজকরা নয়, এই প্রতিযোগিতা ঘিরে সাধারণ মানুষের উন্মাদনা দেখে অবাক হয়েছেন দিব্যেন্দু। দাবাকে ঘিরে ভারতে এতটা উৎসাহ হবে সেটা ভাবতে পারেননি তিনি। দিব্যেন্দু বললেন, ‘‘টিকিট কেটে প্রতি দিন কয়েক হাজার দর্শক খেলা দেখতে আসতেন। প্রতি দিন দুপুর ৩টেয় খেলা শুরু হত। তার প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে থেকে দর্শকরা এসে লাইন দিতেন। দাবাড়ুরা এসে পৌঁছলে ওদের সঙ্গে ছবি তুলতেন। দাবাড়ুদের হাততালি দিয়ে উৎসাহ দিতেন।’’

Advertisement

ভারতে দাবা নিয়ে উৎসাহ দেখে অবাক হয়েছেন বিদেশি প্রতিযোগীরাও। দিব্যেন্দু নিজে সাতটি অলিম্পিয়াডে খেলেছেন। এ বারের প্রতিযোগিতাকে সেরা বলছেন তিনি। দিব্যেন্দুর কথায়, ‘‘এটা আমার দেখা সেরা অলিম্পিয়াড। অনেক দাবাড়ু ১০, ১১টা অলিম্পিয়াডে খেলেছে। তারাও বলেছে, এ বারেরটাই সেরা। এত কম সময়ের মধ্যে এই আয়োজন দেখে সবাই অবাক। এই অলিম্পিয়াড ভারতীয় দাবাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’’

কেকের উপর চেরির কাজ করেছে ভারতীয় দাবাড়ুদের পারফরম্যান্স। পুরুষদের ‘বি’ দল ব্রোঞ্জ পেয়েছে। তৃতীয় স্থানে শেষ করেছে মহিলাদের ‘এ’ দলও। পুরুষদের বি দলে ছিলেন বি অধিবান, আর প্রজ্ঞানন্দ, ডি গুকেশ, নিহাল সারিন ও রৌনক সাধওয়ানি। অন্য দিকে মহিলাদের ‘এ’ দলে ছিলেন কোনেরু হাম্পি, আর বৈশালী, তানিয়া সচদেব, হরিকা দ্রোণাবল্লি ও ভক্তি কুলকার্নি।

ভারতীয় দাবাড়ুদের পারফরম্যান্সে খুশি দিব্যেন্দু। তবে তার মধ্যেই খানিক আক্ষেপ ঝরে পড়ল তাঁর গলায়। সোনা হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ। দিব্যেন্দু বললেন, ‘‘আমাদের দল খুব শক্তিশালী ছিল। দলে ভাল ভারসাম্য ছিল। আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়া উচিত ছিল। সবার চোখ ছিল পুরুষদের ‘বি’ দলে। কারণ ওখানে প্রজ্ঞা, গুকেশরা ছিল। গুকেশ অসাধারণ খেলেছে। প্রথম ৮ গেমে ৮টাই জিতেছিল। শেষে ১টা ড্র ও ১টা হেরেছে। ১০ নম্বর রাউন্ডটা হারায় সোনা হাতছাড়া হয়। কিন্তু প্রজ্ঞারা অনেক ছোট। আগামী দিনে ওরা নিশ্চয় আরও ভাল ফল করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন