আনন্দের সামনে আবির্ভাব বিস্ময়-বালক প্রজ্ঞানন্দের

শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে খেলতে বসে বিন্দুমাত্র চাপে আছে বলে মনে হয়নি প্রজ্ঞানন্দকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:২১
Share:

আকর্ষণ: সাংবাদিক বৈঠকে আনন্দ-প্রজ্ঞানন্দ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

পাঁচটা দাবার বোর্ডে গম্ভীর ভাবে বসে থাকা বিশ্বের নামী দাবাড়ুদের মধ্যে বার বার চোখ চলে যাচ্ছিল ছটফটে ছেলেটার দিকে। বয়স মাত্র ১৩। এর মধ্যেই দাবা বিশ্বের কাছে সে বিস্ময়। ১২ বছর ১০ মাস ১৩ দিন বয়েসে বিশ্বের দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার রেকর্ডও করে ফেলেছে গত বছর। সেই প্রজ্ঞানন্দ রমেশবাবু কলকাতায় টাটা স্টিল দাবা প্রতিযোগিতার অন্যতম আকর্ষণ ছিল মঙ্গলবার।

Advertisement

এত শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে খেলতে বসে বিন্দুমাত্র চাপে আছে বলে মনে হয়নি প্রজ্ঞানন্দকে। উল্টে দিনে শেষে বিশ্বনাথন আনন্দ বলে দিলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে খেলতে বসে প্রথমে তো বেশ বিপদেই ফেলে দিয়েছিল প্রজ্ঞানন্দ। শেষ পর্যন্ত যে পরিস্থিতিটা সামলে যে জিততে পেরেছি তাতে খুশি।’’ শুধু তাই নয়, ২০০৩ সালে বিশ্বের কনিষ্ঠতম গ্র্যান্ডমাস্টারের রেকর্ড গড়া (১২ বছর ৭ মাস) রাশিয়ার সের্গেই কারইয়াকিনকে হারিয়ে দিয়েছে এ দিন প্রজ্ঞানন্দ। পাশাপাশি তাঁর কাছে হার মেনেছেন কলকাতার গ্র্যান্ডমাস্টার সূর্যশেখর গঙ্গোপাধ্যায়ও।

এ দিন ব্লিৎজ বিভাগের প্রথম ৯টি রাউন্ডের খেলা ছিল। তাতে দিনের শেষে সাড়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে চেন্নাইয়ের বিস্ময়-প্রতিভা। আনন্দ পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে যুগ্ম ভাবে পঞ্চম স্থানে। শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের হিকারু নাকামুরা। তাঁর পয়েন্ট সাড়ে ছয়। নাকামুরার ব্লিৎজ বিশ্বর‌্যাঙ্কিং ৩। ফলে অনেকেই তাঁকে ব্লিৎজ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়েও এগিয়ে রাখছে। নবম রাউন্ডে নাকামুরার বিরুদ্ধে এক সময় প্রবল চাপে পড়ে যায় খুদে প্রতিভা। কিন্তু হার মানেনি সে। নাকামুরাকে জিততে দেয়নি। শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ড্র করতে বাধ্য করেন মার্কিন দাবাড়ুকে।

Advertisement

আরও পড়ুন
ট্রফির সঙ্গে জীবনযুদ্ধেও জয়ী পদ্মাপারের মেয়েরা

এই ভয়ডরহীন থাকাটাই কি তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি? প্রজ্ঞানন্দের কোচ এবং দেশের অন্যতম সেরা দাবা প্রশিক্ষক আর বি রমেশ ছাত্রের সঙ্গে এই প্রতিযোগিতায় এসেছেন। তাঁর অ্যাকাডেমিতেই খেলেন এখন প্রজ্ঞানন্দ। তিনি বললেন, ‘‘চার বছর ওকে কোচিং করাচ্ছি। ওর দিদি বৈশালীও খুব ভাল দাবাড়ু। প্রচণ্ড টিভি দেখার অভ্যাস ছিল দু’জনের। তাই ওদের বাবা-মা সেই অভ্যাস ছাড়াতে দাবা খেলতে উৎসাহিত করে। ব্যাস তার পর থেকে ও দাবাই ওর ধ্যান-জ্ঞান। হার-জিত নিয়ে অতটা ভাবে না। গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পরের দিনই তো ও অ্যাকাডেমিতে চলে এসেছিল।’’

আরও পড়ুন
প্রীতমদের হুগলিতে নেই মেয়েদের লিগ

বোঝা গেল কেন বলা হয়, এই বয়সে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনের চেয়েও এগিয়ে আছে প্রজ্ঞানন্দ। তার জগৎ জুড়ে যে শুধু একটাই জিনিস— দাবা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন