জয়ের গোল করে শরণ। বৃহস্পতিবার।
মোহনবাগান ১ (শরণ)
ভবানীপুর ০
মুড়ি মাখা, লজেন্স, লেবু চা, বাদামের সঙ্গে টিম গোল দিলে সমর্থকদের উন্মাদনা, আবার খারাপ খেললে গালাগাল— ম্যাচ চলাকালীন ময়দানের ঘেরা মাঠে এই সব ছবির কোলাজ বড় পরিচিত। যা এ বার ফ্রেমবন্দি হচ্ছে একমাত্র সবুজ-মেরুনে। কলকাতা লিগ হয়তো দিনে দিনে কৌলীন্য হারাচ্ছে। ঘেরা মাঠে লিগের ম্যাচে উত্তেজনা কিন্তু ষোলো আনা রয়ে গিয়েছে। যে উন্মাদনায় গা ভাসিয়ে দিতে বৃহস্পতিবার মোহনবাগান মাঠে হাজির এক বিশিষ্ট ব্যক্তি। যাঁকে দেখা গেল, কর্তাদের সঙ্গে বসে মুড়ি-তেলে ভাজা খেতে খেতে ম্যাচ আর ময়দানের পুরনো উত্তাপটা জমিয়ে উপভোগ করতে। তিনি বাগানের ঘরের ছেলে চুনী গোস্বামী।
মোহনবাগান মাঠে শেষ কবে ম্যাচ দেখেছিলেন, মনে করতে পারছেন না। তবে এ বছর ঘরের মাঠে টিম ভাল খেলছে বলেই বৃহস্পতিবার মাঠে এসেছিলেন চুনী। ফিরলেন একরাশ হতাশা নিয়ে। ভবানীপুরের বিরুদ্ধে মোহনবাগান জিতেছে ঠিকই, তবে ড্যারেল ডাফিদের এ দিনের পারফরম্যান্সে নিরাশ একা চুনী নন, গ্যালারি ভর্ত্তি সবুজ-মেরুন সমর্থকও। কোথায় বাগানের খামতি দেখলেন? চুনীর ব্যাখ্যা, ‘‘পুরো টিমের খেলা দেখেই আমি হতাশ। শরণের গোলটা বাদ দিলে, ম্যাচ থেকে প্রাপ্তি কিছুই নেই। বড় অগোছালো লাগছিল টিমটাকে।’’
মুড়ির ঠোঙা আর ফুটবলে মজে চুনী গোস্বামী। বৃহস্পতিবার মোহনবাগান মাঠে।
ম্যাচের একেবারে শুরুতে শরণ সিংহের অসাধারণ গোল ছাড়া বাদবাকি সময়ে বড় বেশি ম্যাড়ম্যাড়ে বাগান। তারা ১-০ এগিয়ে থাকার পরও, দ্বিতীয়ার্ধে ময়দানের তথাকথিত ছোট টিমের বিরুদ্ধে কেন দিশেহারা হয়ে পড়ল, সেটাই ধাঁধা! বরং দেবজিৎ ঘোষের টিম পিছিয়ে থেকেও অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলল। লিগের চার ম্যাচ খেলে মাত্র এক গোল খেয়ে দশ গোল করে ফেলা টিমটার এ হেন পারফরম্যান্সের কারণ কি? বাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘টানা ম্যাচ খেলার ক্লান্তি রয়েছে। পাশাপাশি বর্ষার মাঠ। কাদায় ছেলেদের একটু সমস্যা তো হচ্ছেই।’’
এই কাদা মাঠেই আবার ২৯ বছরের শরণ দাপিয়ে খেলছেন। কলকাতা লিগে ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন মণিপুরের মিডিও। এ দিন তাঁর একমাত্র গোলেই তো মান বাঁচল বাগানের।
মোহনবাগান: অর্ণব, তন্ময়, রাজু, সঞ্জয়, সার্থক, তপন (অজয়), (বিক্রমজিৎ), রবিনসন, শরণ, প্রবীর (আমিরি), ডাফি, আজহারউদ্দিন।
ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।