শুধুই প্রতিবাদ নয়, জাপানে চলছিল অলিম্পিক্স-উন্মাদনাও
Coronavirus

সুনামির শহরে শিখা দেখতে জনস্রোত

করোনা-প্রতিরোধ নিশ্চিত করতে ফুকিশিমাতেও আয়োজকেরা শিখা দেখতে ভিড় না করার আবেদন করেন বারবার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০৫:১৫
Share:

সমাবেশ: করোনা-আতঙ্ক দূরে সরিয়ে ফুকুশিমায় অলিম্পিক্স শিখা দেখতে এ ভাবেই মুখাবরণ পরে রাস্তায় নেমেছিল মানুষের ঢল। যদিও পরে এক বছরের জন্য পিছিয়ে যায় অলিম্পিক্স। এপি

২৪ মার্চ: তখনও চূড়ান্ত হয়নি টোকিয়ো অলিম্পিক্স নির্ধারিত সময়েই হবে, না পিছিয়ে যাবে। আয়োজকদের নিষেধ উপেক্ষা করে উত্তর জাপানের শহর ফুকুশিমায় অলিম্পিক্স মশাল পৌঁছতেই দেখা গেল কম করে এক হাজার মানুষ তা দেখতে মুখাবরণ পরে দাঁড়িয়ে আছেন।

Advertisement

চিরাচরিত প্রথা মেনে মশালের শিখা আধুনিক অলিম্পিক্সের ধাত্রীভূমি আথেন্স থেকে জাপানে পৌঁছয় গত সপ্তাহে। ছ’দিন ধরে শিখা ঘোরানো হয় ভূমিকম্প ও সুনামি বিধ্বস্ত শহরগুলিতে। আয়োজকেরা শিখার নামকরণ করেন, ‘পুনঃপ্রাপ্তির আগুন’। টোকিয়োর উত্তরে অবস্থিত সেনদাইয়ে যে দিন মশাল এল, সে দিন অবশ্য ভিড় ছিল আরও অনেক বেশি। স্থানীয় কাগজে লেখা হয়েছিল, সেনদাই স্টেশনে রাখা শিখা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কোনও ভাবে ৫৫ হাজারের কম ছিল না!

করোনা-প্রতিরোধ নিশ্চিত করতে ফুকিশিমাতেও আয়োজকেরা শিখা দেখতে ভিড় না করার আবেদন করেন বারবার। কিন্তু কে কার কথা শোনে। এমনই এক দর্শক ৬৪ বছরের রিতসুকো তাকানো-কে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার তো মনে হয় না, করোনার জন্য কেউ আতঙ্কে আছে। আমি অন্তত উদ্বেগে ছিলাম না।’’ কে বলবে অতিমারিতে শুধু জাপানেই আক্রান্তের সংখ্যা ১,৮৫২! মৃত ৫২ জন। তবু কোন সাহসে এত মানুষ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এলেন? কোনও কিছুকে পরোয়া না করা ৪৫ বছরের তাতসুয়া আরাইয়ের মন্তব্য, ‘‘জানতাম সুযোগ পেলে অনেকেই আসবেন। ভিড় হবে জেনেও। এমন সুযোগ তো জীবনে একবারই আসে।’’

Advertisement

অনেকেই অনুমান করেছিলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে স্বয়ং আইওসি-কে অলিম্পিক্স পিছিয়ে দিতে বলবেন। শেষ পর্যন্ত সেটাই হল। এ দিকে ফুকুশিমা থেকে বৃহস্পতিবার অলিম্পিক্স শিখার ধারক মশালের টোকিয়োর উদ্দেশে যাত্রা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু নতুন পরিস্থিতিতে ঠিক হয়, শিখা নিয়ে যাওয়া হবে লন্ঠনে ধরে। কেউ মশাল নিয়ে ছুটবেন না। লন্ঠন যাবে গাড়িতে। আয়োজকেরা ধরে নিয়েছেন, ফাঁকা রাস্তায় শিখার শকট-যাত্রা দেখতে বিশেষ লোকজন থাকবেন না।

যাত্রাপথের পূর্ণ বিবরণী দিয়েছেন অলিম্পিক্স কমিটির সিইও আকিয়ো আগুচি। তা অবশ্য পছন্দ হয়নি অনেকেরই। নাগানো এলাকায় মশাল নিয়ে দৌড়নোর কথা ছিল আকিয়ো ওগুচির। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের ইচ্ছে ছিল অন্তত একজন রানারকে গাড়িতে রাখার। নাগানো এলাকায় সে কিছুটা রাস্তা শিখা নিয়ে দৌড়বেন।’’ কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঘটনাক্রম যে দিকে গড়াল, তাতে সে রকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এক বছর পিছিয়ে অলিম্পিক্স হলে তখন হয়তো মশাল যাত্রার নতুন পরিকল্পনা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন