করোনার জেরে বন্ধ ময়দান থেকে যুবভারতীর প্র্যাক্টিস
Coronavirus

ঝাঁপ পড়ল বাগানের ক্যান্টিনে, ব্যতিক্রম ইস্টবেঙ্গল

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কোথাও জমায়েত করা যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২০ ০৭:০২
Share:

জনশূন্য: বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বুধবার থেকে বন্ধ করা হল মোহনবাগান ক্যান্টিন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

করোনাভাইরাস জের। ময়দানের তাঁবুতে সদস্য-সমর্থকদের জমায়েত বন্ধ করতে ক্লাবের ক্যান্টিনও এ বার বন্ধ করে দিল মোহনবাগান ও মহমেডান স্পোর্টিং। সিএবি-র অফিস বন্ধের সঙ্গে ঝাঁপ পড়েছে ইডেনের ক্যান্টিনেও। ব্যতিক্রম শুধু ইস্টবেঙ্গল। সেখানে রমরমিয়ে চলছে কাফেটেরিয়া। বুধবার সন্ধ্যায় লাল-হলুদ তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, টেবিলে জনা পনেরো ছেলে-মেয়ে বসে রয়েছেন। খাওয়া-দাওয়াও করছেন। বাইরেও দাঁড়িয়ে আছেন অনেকেই।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কোথাও জমায়েত করা যাবে না। ময়দানের সব মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল-সহ সব খেলা বন্ধ। কিন্তু সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করে দু’দিন আগেই ইস্টবেঙ্গল মাঠে ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল। ট্রায়ালে ডাকা হয়েছিল বিভিন্ন রাজ্যের ফুটবলারদের। ম্যাচ খেলতে এবং দেখতে হাজির ছিলেন প্রায় কুড়ি জন ফুটবলার। তাঁবুতে জমায়েত আটকাতেও কোনও ব্যবস্থা যে নেওয়া হয়নি, কাফেটোরিয়া খুলে রাখা তারই প্রমাণ। তবে টিমটিম করে চলছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে যাওয়ার রাস্তায় সেন্ট্রাল এক্সাইজের ক্যান্টিন।

চমকপ্রদ ব্যাপার হল, রাজ্য সরকারের নির্দেশ না মানলেও ইন্ডিয়ান সুপার লিগে খেলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য চেয়ে মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে নবান্নে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন লাল-হলুদ কর্তারা। ময়দানে প্রবল গুঞ্জন, এটিকের পরিচালক গোষ্ঠীর অধীনে থাকা একটি বিপণন সংস্থা ইস্টবেঙ্গলকে আর্থিক সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসতে পারে। কিন্তু আইএসএল খেলতে হলে দরকার ৪৫-৫০ কোটি টাকা। সেই টাকার কত অংশ ওই সংস্থা দেবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ক্লাবের অন্দরেই।

Advertisement

রাজ্য সরকারের নির্দেশে যুবভারতীতে অনুশীলনের মাঠ বন্ধ করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সেটা জানার পরেই মোহনবাগান কর্তারা এ দিন আলোচনায় বসেছিলেন কোচ কিবু ভিকুনার সঙ্গে। আগে ঠিক ছিল, ২৩ মার্চ থেকে অনুশীলন শুরু হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে স্পেনীয় কোচ মাঠে নেমে অনুশীলন করাতে চান না। তিনি জোসেবা বেইতিয়া থেকে ফ্রান গঞ্জালেস, শঙ্কর রায় থেকে লালরাম চুলোভা— সকলের জন্য আলাদা করে সকাল এবং বিকেলে কী অনুশীলন করতে হবে, তা লিখে পাঠিয়ে দিয়েছেন। মোহনবাগানের এক কর্তা বললেন, ‘‘কবে আই লিগ শুরু হবে সেটা জানি না। তবে কোচ চাইছেন পুরো দলকে তৈরি রাখতে। একসঙ্গে অনুশীলন যখন করা যাচ্ছে না, তখন অন্য রাস্তা নেওয়ার পক্ষপাতী কিবু।’’ জানা গিয়েছে, কিবু কর্তাদের জানিয়েছেন হোটেলে থাকা ফুটবলারদের কাছে গিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসবেন তিনি।

বেইতিয়া, পাপা বাবাকর জিয়োহারারা সল্টলেক বা রাজারহাটের যে বহুতলগুলিতে থাকেন, তার জিম বন্ধ করে দিয়েছে সেখানকার নাগরিক কমিটি জমায়েত আটকাতে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন ফুটবলারেরা। সে জন্য কিবু স্বদেশী-বিদেশি সব ফুটবলারকে বলে দিয়েছেন, সকালে উঠে রাস্তায় দৌড়তে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলে এখনও এ রকম কিছু নির্দেশ কোচেরা দিয়েছেন বলে শোনা যায়নি। বুধবার থেকে অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা ছিল কাশিম আইদারাদের। কিন্তু তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে দু’দিন। শনিবার স্পেনীয় কোচ মারিয়ো রিভেরো ঠিক করবেন পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে। ক্লাবের কোচিং-এর সঙ্গে যুক্ত এক সদস্য বললেন, ‘‘আপাতত ফুটবলারেরা বিশ্রামে আছেন। শনিবার ঠিক হবে কবে থেকে অনুশীলন শুরু হবে।’’ আপাতত ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুবভারতীর সব মাঠ বন্ধ। অনুশীলন শুরুর সিদ্ধান্ত হলে তা হবে কোথায়? ইস্টবেঙ্গল মাঠে? কিন্তু সরকারি নির্দেশে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে, এই আশঙ্কায় তো ঘেরা মাঠে জমায়েত বা খেলাও এখন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন