যোদ্ধা: নিজের ফার্মেসিতে টোনি ডোভাল। সেখানেও সঙ্গী ফুটবল।
২৮ মার্চ: গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা ছিলেন টোনি দোভাল। কিন্তু করোনা-অতিমারির জেরে আর ফুটবল নিয়ে ভাবছেন না তিনি। বেঙ্গালুরু এফসি ও লাল-হলুদ শিবিরের প্রাক্তন স্পেনীয় মিডফিল্ডার ব্যস্ত আর্তের সেবায়। সাদা কোট পরে ওষুধ তুলে দিচ্ছেন মানুষের হাতে।
তাইল্যান্ডের নেভি এফসির হয়ে গত মরসুমে খেলেছেন টোনি। পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে স্পেনে ফিরেছিলেন। কিন্তু ফের তাইল্যান্ড রওনা হওয়ার আগেই অতিমারির আকার নেয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে স্পেনেই থেকে যান বার্সেলোনার যুব দলের প্রাক্তন ফুটবলার। কাজ শুরু করেন মায়ের ওষুধের দোকানে। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টোনি বলেছেন, ‘‘তাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য ব্যাগও গোছানো হয়ে গিয়েছিল আমার। তখনই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে যায়।’’ আটলান্টিকের তীরে লা করুনা শহরে জন্ম টোনির। ফুটবলের সঙ্গে লেখাপড়াও চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। বছর চারেক আগেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসিতে ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কিন্তু কাজ করার কোনও সুযোগ পাননি। ২৯ বছর বয়সি স্পেনীয় মিডফিল্ডারের কথায়, ‘‘আমি এশিয়ার বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছি। ওখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা। ফার্মেসির ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও কাজ করার কোনও সুযোগ হয়নি।’’ তিনি যোগ করছেন, ‘‘শুধু ফুটবল নয়, এখন যাতায়াতও বন্ধ। তাই হাতেকলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ আর হাতছাড়া করলাম না।’’ আরও বলেছেন, ‘‘সকাল সাতটা থেকে আমার কাজ শুরু হয়। বোতলে জল ভরা থেকে শুরু করে সব কিছুই করছি। তার পরে ফার্মেসিতে যাচ্ছি।’’
করোনাভাইরাস সংক্রমণে ইতিমধ্যেই স্পেনে ৪৮০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নথিভুক্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪ হাজার। এর মধ্যে একটাই কিছুটা স্বস্তি প্রায় হাজার দশেক মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। উদ্বিগ্ন টোনি বলেছেন, ‘‘স্পেনের পরিস্থিতি ভাল নয়। আমরা যারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করছি, প্রচণ্ড আতঙ্কে রয়েছি। একই অবস্থা যারা আমাদের কাছে আসছে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ নিতে। প্রত্যেকেই উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘এই দুঃসময়ে আমাদের একসঙ্গে লড়াই করতে হবে।’’ টোনি উদ্বিগ্ন ওষুধ সরবরাহ ঠিক না থাকায়, ‘‘থার্মোমিটার, প্যারাসিটামল, গ্লাভস, স্যানিটাইজারের মতো অতি প্রয়োজনীয় জিনিসও ঠিক মতো আমরা পাচ্ছি না।’’ টোনির আশঙ্কা, করোনা-অতিমারির জেরে ইউরোপের ফুটবলারদের ক্লাব পেতে সমস্যা হবে। টোনি বলেছেন, ‘‘ইউরোপের ফুটবলারদের এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। এর ফলে ইউরোপের ফুটবলারদের ক্লাব পেতে সমস্যা হবে।’’