মিশন বিশ্বকাপে বেরোনোর আগে অধিনায়ক: চাপ সামলানোই বড় পরীক্ষা  

মাহি-মস্তিষ্কই মাতাবে কাপ, বলছেন শাস্ত্রী 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০৪:২০
Share:

প্রত্যয়ী: মঙ্গলবার মুম্বইয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী এবং অধিনায়ক বিরাট কোহালি। দুজনেই বলে দিলেন, বিশ্বকাপ জেতার জন্য দল সব দিক থেকে তৈরি। ছবি: পিটিআই

এ বার বিশ্বকাপে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করেন ভারতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী।

Advertisement

আজ, বুধবার ইংল্যান্ডে উড়ে যাচ্ছে ভারতীয় দল। তার আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় দলের কোচের মুখে শোনা গেল ধোনি-স্তুতি। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘বরাবরের মতো এ বারও ধোনির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ওর ক্রিকেটমস্তিষ্ক এ বার বিশ্বকাপ মাতাবে।’’

সেখানে না থেমে বিরাট কোহালিদের দলের হেড কোচ আরও বলেছেন, ‘‘মাঠে বাকিদের সঙ্গে ওর বোঝাপড়া এককথায় অসাধারণ। বছরের পর বছর ধরে উইকেটকিপার হিসেবে ধোনি এটা প্রমাণ করে দিয়েছে, এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে ওর চেয়ে ভাল আর কেউ হতে পারে না।’’ বরং এক ধাপ এগিয়ে উইকেটকিপার ধোনির আগের মতোই ক্ষিপ্রতা নিয়ে উচ্ছ্বসিত শাস্ত্রী।

Advertisement

আরও পড়ুন: কোহালি থেকে বুমরা, ভারতের বিশ্বকাপ দলের কোন বিভাগে সেরা কারা

তিনি বলেছেন, ‘‘শুধু ক্যাচ ধরার মধ্যেই ধোনির দক্ষতা সীমাবদ্ধ নয়। অকল্পনীয় সমস্ত রান আউট অথবা স্টাম্পিং—এই ব্যাপারগুলোই সেই মুহূর্ত যা নিমেষে ম্যাচের গতিপ্রকৃতি পালটে দেয়। আমি বিশ্বাস করি, ধোনির চেয়ে ভাল আর কেউ হতে পারে না।’’

এই নিয়ে চতুর্থ বিশ্বকাপে খেলতে নামা ধোনির এ বারের আইপিএলের পারফরম্যান্সেও রীতিমতো সন্তুষ্ট শাস্ত্রী। ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংস হেরে গেলেও এ বার আইপিএলে ধোনির মোট রান ছিল ৪১৬। গড় ৮৩.২। তিনি বলেছেন, ‘‘আইপিএলে ধোনি যে ভাবে খেলেছে তা অসাধারণ। বিশেষ করে, ওর ব্যাটিং ছিল দারুণ উপভোগ্য। দুর্দান্ত ফুটওয়ার্কের সঙ্গে যে শক্তি নিয়ে ও অনেক বড় বড় শট খেলেছে, তাতে একটা ব্যাপার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে যে, এ বারের বিশ্বকাপে ধোনি বড় ভূমিকা নিতে চলেছে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে ভারতীয় দলের হেড কোচ এও মেনে নিয়েছেন, এ বারের বিশ্বকাপ সমস্ত দলের কাছেই বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। প্রথমত ফর্ম্যাটে পরিবর্তন এবং তারই সঙ্গে প্রত্যেকটি দলের খেলার সার্বিক মান এতটাই উন্নত হয়ে গিয়েছে, যার ফলে লড়াই এ বার অনেক বেশি কঠিন হতে চলেছে। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘নিঃসন্দেহে এ বার লড়াই অনেক কঠিন হতে চলেছে। ২০১৪ থেকে ২০১৯—এই পাঁচ বছরের মধ্যে কিন্তু দলগুলির মধ্যে উৎকর্ষের ব্যবধান অনেক কমে এসেছে।’’ আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘২০১৪ সালে এই দুই দলকে আমরা যে জায়গায় দেখেছিলাম, তাদের সার্বিক খেলার মান অনেক উন্নত এবং পরিণত হয়ে গিয়েছে। ফলে এ বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক বেশি হাড্ডাহাড্ডি হবে। এমনকী, ওয়েস্ট ইন্ডিজও এ বার খাতায়-কলমে অন্য দলগুলির মতোই সমান শক্তিশালী।’’

প্রশ্ন উঠেছে ইংল্যান্ডের আবহাওয়া এবং উইকেট নিয়েও। সদ্যসমাপ্ত ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তান ওয়ান ডে সিরিজে প্রায় সমস্ত ম্যাচেই গড়ে সাড়ে তিনশো রান উঠেছে। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক অবশ্য সেই বিষয়ে অনেক বেশি নমনীয় মনোভাব নিয়েই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে চান। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমাদের মন্ত্র অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং স্পষ্ট। পরিস্থিতি বুঝে আমাদের রণকৌশল ঠিক করতে হবে। ফলে নমনীয় মানসিকতা নিয়ে চলতে হবে।’’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘এমন একটা দেশে এ বার আমরা খেলতে যাচ্ছি যেখানে আপাত ভাবে উইকেট পাটা হতে পারে। কিন্তু ভারী আবহাওয়াতে তার চরিত্র পাল্টে যায়। সেই পরিস্থিতির জন্যও তৈরি থাকতে হবে।’’

বরং ভারতীয় দলের হেড কোচ বুঝিয়ে দিয়েছেন, ইংল্যান্ডের মেঘলা আবহাওয়ায় কী ভাবে দল খেলবে, সেই ভাবনা তাঁর কাছে পরিষ্কার। তিনি বলেছেন, ‘‘অন্যান্য দেশে মেঘলা অথবা ভারী আবহাওয়ায় উইকেটের চরিত্র খুব একটা পাল্টায় না। কিন্তু ইংল্যান্ডে তার প্রভাব যথেষ্ট।’’ শাস্ত্রী আরও বলেছেন, ‘‘লন্ডনে হয়তো তার প্রভাব খুব বেশি ধরা পড়ে না। কিন্তু আপনি যখনই উত্তরের দিকে এগোতে থাকবেন, তখন ভারী আবহাওয়ার প্রভাবটা অনুভব করা যায়। আমরা তো সমস্ত ম্যাচ এক জায়গাতে খেলব না। ফলে সমস্ত সম্ভাবনার পথ খোলা রেখেই আমরা প্রস্তুত থাকব।’’

বিরাটদের গুরু এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বকাপে খেলতে হবে বলে তাঁর দলের ক্রিকেট-দর্শনে কোনও পরিবর্তন হবে না। শাস্ত্রীর কথায়, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে এই দলটা দারুণ ক্রিকেট খেলছে। ধারাবাহিকতা এই দলের সম্পদ। ফলে বিশ্বকাপ বলে অন্য কিছু করতে হবে, সেটা ভাবার দরকার নেই। উপভোগের মেজাজে ক্রিকেটারেরা যাতে নিজেদের কাজটা ঠিক মতো পালন করতে পারে, সেটার দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’’ বরং এ বারের ভারতীয় বোলিং ব্রিগেড নিয়ে অনেক বেশি আশাবাদী শাস্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘‘বোলাররা অনেক বেশি অভিজ্ঞ। কমপক্ষে চার-পাঁচ বছর এই বোলাররা একসঙ্গে খেলছে। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াও মসৃণ। একে অপরের সাফল্যে যেমন আনন্দ অনুভব করে, তেমনই সতীর্থের চাপ কমাতেও দক্ষ। ওরা এখনও পর্যন্ত যা করে এসেছে, সেটাই বজায় রাখবে বিশ্বকাপের মঞ্চে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন