৫ উইকেট নেওয়ার পর উল্লাস কাগিসো রাবাডার। ছবি: রয়টার্স।
চা বিরতির পর মাত্র ৬.৪ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ উইকেট ফেলল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের শুরুটা ভাল হল তাদের। প্রথম দিন মাত্র ৫৬.৪ ওভারে অল আউট হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ২১২ রান করল তারা। দাপট দেখালেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাডা। তিনি একাই নিলেন পাঁচ উইকেট।
মেঘলা পরিবেশে লর্ডসে টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিতে দু’বার ভাবেননি দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তাঁর সিদ্ধান্ত যে সঠিক তা প্রথম সেশনেই প্রমাণ করে দিলেন রাবাডা, মার্কো জানসেনরা। নতুন বল কাজে লাগালেন তাঁরা। ইংল্যান্ডের পরিবেশে লাল ডিউক এমনই সুইং করে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারেরা অনেক বেশি গুড ও ফুল লেংথে বল করলেন। তাতে বল আরও সুইং করল। ফলে সমস্যায় পড়লেন ব্যাটারেরা।
প্রথম দিন দক্ষিণ আফ্রিকার স্লিপ ক্যাচিং নজর কাড়ার মতো। সপ্তম ওভারে অস্ট্রেলিয়াকে জোড়া ধাক্কা দেন রাবাডা। প্রথমে শূন্য রানের মাথায় উসমান খোয়াজা ও পরে চার রানের মাথায় ক্যামেরন গ্রিনকে আউট করলেন তিনি। প্রথম ক্ষেত্রে ডেভিড বেডিংহ্যাম ও দ্বিতীয় ক্ষেত্রে এডেন মার্করাম ভাল ক্যাচ ধরলেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় ক্যাচের কথা বলতে হয়। তৃতীয় স্লিপে থাকা ফিল্ডারও ক্যাচের জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন। ফলে মার্করাম ভাল ভাবে বল দেখতে পাননি। তার পরেও ঠিক জায়গায় হাত ছিল তাঁর।
জোড়া ধাক্কার পর মার্নাশ লাবুশেন ও স্টিভ স্মিথ জুটি বাঁধেন। তাঁরা ধীরে ধীরে খেলছিলেন। কয়েকটা বল ব্যাটের পাশ দিয়ে গেলেও কানায় লাগেনি। দেখে মনে হচ্ছিল, অস্ট্রেলিয়ার দুই সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটার দলের রান সামলে নেবেন। তখনই নিজের উচ্চতা কাজে লাগালেন জানসেন। তাঁর একটা বাউন্সার লাবুশেনের কাঁধে লাগে। ফলে কিছুটা হলেও মনঃসংযোগে ধাক্কা লাগে। পরের বলটাই লেংথে করেন জানসেন। চেষ্টা করেও ব্যাট সরাতে পারেননি লাবুশেন। বল ব্যাট ছুঁয়ে কিপার কাইল ভেরেইনির কাছে যায়। ১৭ রান করে ফেরেন লাবুশেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ট্রেভিস হেডকে আউট করা। গত বার ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে হেডের শতরানেই জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচেও চার মেরে শুরু করেন হেড। কিন্তু ভাগ্য সঙ্গ দিল না তাঁর। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে শেষ ওভারে জানসেনের লেগ সাইডে করা বলে চার মারার চেষ্টা করেন হেড। বল ব্যাটে লেগে পিছন দিকে যায়। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে ক্যাচ ধরেন ভেরেইনি। ১১ রান করে আউট হন হেড।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে টানলেন স্মিথ ও বিউ ওয়েবস্টার। দু’জনেই অর্ধশতরান করলেন। ৬৬ রানের মাথায় স্মিথকে ফেরালেন মার্করাম। স্লিপে আবার ভাল ক্যাচ ধরলেন জানসেন। ওয়েসস্টারও তাড়াতাড়ি সাজঘরে ফিরতে পারতেন। ৮ রানের মাথায় রাবাডার বল তাঁর প্যাডে লাগে। আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউ নেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। নিলে আউট হতেন ওয়েবস্টার। সেই ব্যাটার করলেন ৭২ রান। টেস্টে নিজের সর্বাধিক রান করলেন তিনি। অ্যালেক্স ক্যারেও ২৩ রান করেন।
চা বিরতির সময় অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ৫ উইকেটে ১৮৯। সেখান থেকে ২১২ রানে শেষ হয়ে গেল দল। অর্থাৎ, শেষ ৫ উইকেট পড়ল মাত্র ২৩ রানে। মহারাজের বলে ক্যারের বোল্ড দিয়ে তা শুরু। ওয়েবস্টারকে আউট করে অস্ট্রেলিয়ার আশা শেষ করে দেন রাবাডা। ৫১ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি। ৩ উইকেট নেন জানসেন। মহারাজ ও মার্করাম ১ করে উইকেট নেন।