ICC ODI World Cup 2023

বিশ্বকাপ খেলতে আসা ক্রিকেটারের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভারতীয় রাঁধুনি!

দেশের হয়ে দীর্ঘ দিন খেলতে চান। ফিটনেস বজায় রাখতে অস্ট্রেলিয়ার এক ক্রিকেটার বিশ্বকাপে সঙ্গে রেখেছেন ব্যক্তিগত রাঁধুনি। প্রয়োজনে সঙ্গে রাখেন ব্যক্তিগত ব্যাটিং কোচ এবং মনোবিদও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৩ ২০:২০
Share:

(বাঁদিকে) প্যাট কামিন্স, স্টিভ স্মিথদের এক সতীর্থ সঙ্গে রেখেছেন ব্যক্তিগত রাঁধুনি। —ফাইল চিত্র।

ফিটনেস নিয়ে প্রায় বিরাট কোহলির মতোই সচেতন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোইনিস। বিশ্বকাপের সময় খাবার নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক তিনি। তাই সঙ্গে রেখেছেন ব্যক্তিগত রাঁধুনি। বিশ্বকাপের সময় সেই রাঁধুনির রান্না ছাড়া মুখে তুলছেন না তিনি। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেই এ কথা জানিয়েছেন স্টোইনিস।

Advertisement

কার্বোহাইড্রেট কম রয়েছে, এমন খাবার পছন্দ করেন স্টোইনিস। কেটোজেনিক ডায়েটে অভ্যস্থ অসি অলরাউন্ডারের পাতে অবশ্য থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন। তেল, মশলা এড়িয়ে চলেন সম্পূর্ণ ভাবে। ৩৪ বছরের অলরাউন্ডার তাই বিশ্বকাপের সময় সঙ্গে রেখেছেন ব্যক্তিগত রাঁধুনী। তিনিই তৈরি করছেন স্টোইনিসের চার বেলার খাবার। অসি অলরাউন্ডারের ব্যক্তিগত রাঁধুনি অবশ্য এক জন ভারতীয়। গত আইপিএলের সময় যাঁর খোঁজ দিয়েছিলেন লোকেশ রাহুল। রাঁধুনি ছাড়াও প্রয়োজনে স্টোইনিস আরও কয়েক জনকে সঙ্গে রাখেন সুবিধার জন্য।

স্টোইনিসের ব্যক্তিগত রাঁধুনির নাম ভেলটন সালদানহা মুম্বইয়ের বাসিন্দা। ফরাসি রান্নায় দক্ষতা রয়েছে তাঁর। অস্ট্রেলিয়া দল যখন যে হোটেলে থাকছে, তখন সেই হোটেলের রান্না ঘরে স্টোইনিসের পছন্দ এবং চাহিদা মতো খাবার তৈরি করছেন সালদানহা। কখনও সংশ্লিষ্ট হোটেলের রাঁধুনিদের নির্দেশ দিয়ে রান্না করাচ্ছেন। আবার কখনও নিজে হাতেই রান্না করছেন।

Advertisement

স্টোইনিস বলেছেন, ‘‘ভারতীয় দলের কয়েক জন ক্রিকেটার খাবার নিয়ে খুব সতর্ক। ওদের দেখেই বিষয়টা প্রথমে মাথায় আসে। খাওয়া নিয়ে আমিও নির্দিষ্ট তালিকা মেনে চলি। অনিয়ম করার পক্ষে নই। কোনও প্রতিযোগিতার সময় তো নয়ই।’’ অস্ট্রেলিয়া দল যে কোনও সফরেই নিজেদের শেফ নিয়ে যায়। গত কয়েক বছর ধরেই দলের সঙ্গে থাকেন এক জন শেফ। ভারতেও এসেছেন প্যাট কামিন্সদের দলের রাঁধুনি। তাঁর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে রয়েছেন স্টোইনিসের ব্যক্তিগত শেফও।

কেমন খাবার খাচ্ছেন স্টোইনিস? অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘গার্লিক নান খাচ্ছি না। গ্লুটেন ফ্রি বিশেষ রুটি খাচ্ছি। রোস্টেড কলিফ্লাওয়ার দেওয়া পাই খাচ্ছি। রোস্টেড বাটার চিকেন থাকছে। মূলত ফরাসি এবং ভারতীয় হালকা খাবার খাচ্ছি। নিয়মিত বেকড ওটস খাচ্ছি। ওটসে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে।’’ এর পর মজা করে অসি অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর সালদানহা চাইলে স্টোইনিস ওটস বিক্রি করতে পারবে।’’

কোথা থেকে পেলেন সালদানহাকে? স্টোইনিস বলেছেন, ‘‘নিউইয়র্ক, চিকাগোর রেস্তোরাঁয় দীর্ঘ দিন কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে সালদানহার। গত আইপিএলের সময় রাহুল আমাকে সালদানহার কথা বলেছিল। সালদানহা এখন মুম্বইয়ে নিজের রেস্তোরাঁ চালান। সালদানহার তৈরি খাবার সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর। সব কিছু খেয়াল রেখে আমার জন্য বিভিন্ন পদ তৈরি করে দিচ্ছেন।’’

কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন দলের সঙ্গে রাঁধুনি থাকার পরেও? স্টোইনিস বলেছেন, ‘‘আমি চাই যত বেশি দিন সম্ভব খেলতে। তাই ফিটনেস ঠিক রাখা দরকার। যা যা আমার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। বিশ্বকাপে আমাদের প্রচুর সফর করতে হচ্ছে। আমাদের স্বাচ্ছন্দের পরিবেশের বাইরে থাকতে হচ্ছে। দেশের সঙ্গে এখানকার সময়ের পার্থক্য অনেক। হোটেল, শোয়ার বিছানা সব কিছু ঘন ঘন বদলে যাচ্ছে। দেখুন আমরা তো পার্থের সমুদ্র সৈকতে সময় কাটাচ্ছি না। যে এক কাপ কফি আর সঙ্গে যা হোক কিছু খেলেই হবে। তাই কিছু ব্যবস্থা নিতেই হয় নিজেকে ভাল এবং সুস্থ রাখার জন্য।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমি নিজের জন্য এবং পছন্দের পরিবেশের জন্য বিনিয়োগ করতে চাই। অনেকে ভাবতেই পারেন, আমি টাকা নষ্ট করছি। আমি সে ভাবে দেখি না। আমি নিজস্ব রাঁধুনি, ব্যাটিং কোচ, মনোবিদ সঙ্গে রাখার চেষ্টা করি। কখনও মনে হয় না এটা বাজে খরচ।’’

স্টোইনিস চান, সব রকম সমস্যা এড়িয়ে চলতে। সমস্যা হলেও যাতে দ্রুত এবং পর্যাপ্ত সময় নিয়ে তার সমাধান করতে পারেন। তাই ব্যক্তিগত কোচ, মনোবিদ এবং রাঁধুনিদের সঙ্গে রাখার চেষ্টা করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন