Chetan Sharma Sacked

ক্রিকেট সত্যিই ‘লেভেলার’! বিরাট ছাঁটাইয়ের বর্ষপূর্তিতে বরখাস্ত চেতন, তারিখ ১৮ নভেম্বর

২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর ভারতের এক দিনের দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল কোহলিকে। যে নির্বাচক কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এক বছর পরে একই তারিখে তাদের সরে যেতে হল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২২ ১১:০৪
Share:

এক বছর আগে যে তারিখে অধিনায়কত্ব গিয়েছিল কোহলির, এক বছর পরে সেই একই তারিখে বরখাস্ত হলেন চেতন শর্মা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

১৮ নভেম্বর, ২০২১। ভারতের এক দিনের দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিরাট কোহলিকে। কোনও সরকারি ঘোষণা নয়। আগে থেকে অধিনায়ককে জানানো নয়। সরাসরি সিদ্ধান্ত। বিরাট পরে জানিয়েছিলেন, তাঁকে ফোনে সেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন নির্বাচকরা। ১৮ নভেম্বর ২০২২। ঠিক এক বছর পরে সেই একই দিনে নির্বাচকদেরই সরিয়ে দিল বিসিসিআই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ব্যর্থতার জেরে প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা-সহ গোটা দলকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন একটা সময়ে, যখন নিজের ছন্দ ফিরে পেয়ে আবার দাপট দেখাচ্ছেন বিরাট।

Advertisement

২০২০ সালে ভারতের নির্বাচক প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন চেতন। সেই সময়ে কোহলির ব্যাটে খরা। একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ হচ্ছেন। পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যেতে হল ভারতকে। ব্যর্থতার দায় নিয়ে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেন কোহলি। নতুন অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হল রোহিত শর্মাকে।

তার পরেই এল ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম বিতর্কিত অধ্যায়। ভারতের এক দিনের অধিনায়কত্বও গেল কোহলির। তৎকালীন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিকদের জানালেন, তিনি নিজে ফোন করে বিরাটকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব ছাড়তে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু বিরাট সে কথা শোনেননি। সাদা বলের ক্রিকেটে তাঁরা দু’জন অধিনায়ক রাখতে পারবেন না। তাই বিরাটকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রোহিতকেই সাদা বলের ক্রিকেটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কয়েক দিন পরে সাংবাদিক বৈঠক ডাকলেন কোহলি। জানালেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দল নির্বাচনের পরে তাঁকে নির্বাচকরা জানিয়ে দিয়েছেন যে আর তিনি এক দিনের দলের অধিনায়ক নন। তাঁকে কেউ ফোন করেননি। তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। তবে কি সৌরভ সত্যি বলেননি? এই প্রশ্নের জবাবে তৎকালীন বোর্ড প্রধান জানিয়েছিলেন, যা বলার বিসিসিআই বলবে। সৌরভের হয়ে ব্যাট ধরেছিলেন চেতন। বলেছিলেন, বোর্ড কথা বলেছিল বিরাটের সঙ্গে। তাঁকে আগে থেকে জানানো হয়েছিল। হঠাৎ কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এই মন্তব্যের পরে অবশ্য আর বিতর্ক বাড়াননি কোহলি।

বিসিসিআইয়ের গঙ্গা দিয়ে তার পরে অনেক জল গড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি থাকলেও দ্বিতীয় বারের জন্য সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি সৌরভ। বিসিসিআইয়ের অন্দরে খবর, নির্বাচনে দাঁড়ালে হার নিশ্চিত জেনেই আর দাঁড়াননি তিনি। সর্বসম্মতিক্রমে বিসিসিআই সভাপতি হয়েছেন রজার বিন্নী। ঘটনাচক্রে তিনি যে রাজ্যের বাসিন্দা, সেই কর্নাটকে আইপিএলের দৌলতে এখন সব থেকে জনপ্রিয় ক্রিকেটারের নাম কোহলি।

২০১৩ সালের পর থেকে কোনও আইসিসি ট্রফি ঢোকেনি ভারতে। একের পর এক প্রতিযোগিতায় ব্যর্থতা। বার বার প্রশ্ন উঠেছে দল নির্বাচন নিয়ে। ২০২১ সালে কোহলির নেতৃত্বে ভারত ব্যর্থ হওয়ার পরেও দল নির্বাচনের দিকে আঙুল তুলেছিলেন অনেকে। অসুস্থ হার্দিক পাণ্ড্য, অচেনা বরুণ চক্রবর্তীদের দলে নেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন চেতনরা। কিন্তু চাকরি যায়নি। বোর্ডে নতুন কমিটি আসতেই পরিস্থিতি বদলে গেল। অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারত জিততে পারলে কিছু হত না। এই নির্বাচক কমিটিরই প্রশংসা হত। কিন্তু সেটা হল না। আবার দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। শাস্তির খাঁড়া থেকে এ বার আর বাঁচতে পারলেন না চেতনরা। যে ১৮ নভেম্বর তাঁরা কোহলিকে এক দিনের দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়েছিলেন সেই ১৮ নভেম্বরই সরে যেতে হল তাঁদের।

কর্মফল! তেমনই কিন্তু বলছেন কোহলি-ভক্তরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন