Ashes 2023

অ্যাশেজ শেষ হলেও বিতর্ক শেষ হচ্ছে না, মদ্যপান থেকে বল বদল, অভিযোগের পালা চলছেই

ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অ্যাশেজ সিরিজ় শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও বিতর্ক শেষ হয়নি। দু’দলের মধ্যে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের পালা চলছেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৩ ২২:০৭
Share:

প্যাট কামিন্স (বাঁ দিকে) ও বেন স্টোকস। —ফাইল চিত্র

ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অ্যাশেজ সিরিজ় শেষে হয়ে গিয়েছে। ২-২ ড্র হয়েছে সিরিজ়। ট্রফি ধরে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজ় শেষ হয়ে গেলেও বিতর্ক কিন্তু শেষ হচ্ছে না। প্রতিযোগিতা চলাকালীন অনেক বিতর্ক হয়েছে। লর্ডসের লং রুমে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গে ইংরেজ সমর্থকদের বিবাদ থেকে শুরু করে জনি বেয়ারস্টোর আউট হওয়ার ধরন নিয়ে বিতর্ক। সেই তালিকায় যোগ হয়েছে আরও দুই বিতর্ক। মদ্যপান ও বল বদল। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড, দু’দলই দায়ী করছে একে অপরকে।

Advertisement

বল বদল নিয়ে ক্ষুব্ধ অস্ট্রেলিয়া

রবিবার অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭তম ওভারে মার্ক উডের বাউন্সার উসমান খোয়াজার হেলমেটে গিয়ে লেগেছিল। মাঠের দুই আম্পায়ার জোয়েল উইলসন এবং কুমার ধর্মসেনা মনে করেছিলেন, হেলমেটে লেগে বলের আকৃতি পাল্টে গিয়েছে। তাই তাঁরা বলটিকে বদলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এর পরে বৃষ্টির জন্য চতুর্থ দিনে খুব বেশি ওভার খেলা হয়নি। পঞ্চম দিন সেই বলেই খেলা শুরু হয়। অস্ট্রেলিয়ার অভিযোগ, বলটি বেশি পুরনো ছিল না। তার সুবিধা পেয়েছেন ইংল্যান্ডের পেসারেরা। ম্যাচ শেষে বিরক্ত খোয়াজা বলেন, “বল পাল্টানোর সময় আমি আম্পায়ার ধর্মসেনার সঙ্গে কথা বলি। যে বলটা নেওয়া হল তাতে লেখাগুলো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। অথচ পুরনো বলে সে সব ছিল না। একেবারেই আলাদা দুটো বল। যে বলটা নেওয়া হয়েছিল, সেটা একেবারে নতুন বলের মতো শক্ত ছিল। আমি গোটা অ্যাশেজ়ে ওপেন করেছি। জানি, নতুন বল ব্যাটে এসে লাগলে কেমন আওয়াজ হয়। এটাতেও ঠিক সে রকমই আওয়াজ হচ্ছিল। মার্ক উডকে আমি আগেও খেলেছি। আমি ওকে বলি যে, তুমি তো রিভার্স সুইং করা পুরনো বল বদলে একেবারে নতুন বল পেয়ে গেলে। বলটা দেখে মনে হচ্ছিল খুব বেশি হলে আট ওভার পুরনো।”

Advertisement

আম্পায়ারদের সমালোচনা রিকি পন্টিংয়ের

খোয়াজার সুরে সুর মিলিয়ে আম্পায়ারদের সমালোচনা করেছেন পন্টিং। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মনে করেন, হয় আম্পায়ারেরা বল বদলে ঠিক কাজ করেননি, অথবা তাঁদের কাছে উপযুক্ত বিকল্প বলের বাক্স পাঠানো হয়নি। ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে পন্টিং বলেন, ‘‘আমার সব চেয়ে বড় আপত্তি হচ্ছে, দুটো বলের মধ্যে অনেক তফাত ছিল। যে বলটা সরানো হল আর যেটা আনা হল, দুটো পাশাপাশি রাখলে কেউ বলবে না একই রকম বল।’’ তাঁর আরও সওয়াল, ‘‘বল যদি পাল্টাতেই হয়, তা হলে নিশ্চিত করা দরকার যেন পুরনোটার মতো অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু বাক্সটার মধ্যে যদি ভাল করে তাকিয়ে দেখে কেউ, তা হলে দেখতে পাবে খুব বেশি পুরনো অবস্থায় থাকা বল ছিল না। কয়েকটা পুরনো বল ছিল। কিন্তু আম্পায়ারেরা সেগুলো নেড়েচেড়ে দেখে বাক্সেই রেখে দিয়েছিলেন।’’

মদ্যপান নিয়ে বিতর্ক

অ্যাশেজ সিরিজ় শেষে প্রথা মেনে দুই দলের ক্রিকেটারদের একসঙ্গে মদ্যপানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সোমবার সেই অনুষ্ঠানে যায়নি বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড দল। অস্ট্রেলিয়া দল অপেক্ষা করছিল তাঁদের জন্য। স্টিভ স্মিথ বেশ কয়েক বার ইংরেজদের সাজঘরে গিয়ে তাঁদের ডেকেও আসেন। কিন্তু ইংল্যান্ড দল দরজা বন্ধ করে রেখেছিল। অস্ট্রেলিয়ার অভিযোগ, সৌজন্য দেখাতে পারেনি ইংল্যান্ড।

পাল্টা টুইট বেন স্টোকসের

মদ্যপানের ঘটনা নিয়ে পাল্টা টুইট করেন ইংরেজ অধিনায়ক। কী হয়েছিল তা জানান স্টোকস। তিনি টুইটে লেখেন, “আমাদের দলের দু’জনের শেষ ম্যাচ ছিল। তাই সাজঘরে আমাদের নিজেদের বেশ কিছু অনুষ্ঠান ছিল। সে সব মিটিয়ে ড্রেসিংরুম থেকে বার হতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছে। তাই সাজঘরে নয়, আমরা ঠিক করেছিলাম নাইট ক্লাবে অস্ট্রেলিয়ার দলের সঙ্গে দেখা করব।” একটি অংশ আবার এর জন্য অস্ট্রেলিয়াকে দায়ী করছে। তাদের বক্তব্য, ইংল্যান্ডের দুই ক্রিকেটার অবসর নেওয়ার কারণে সাজঘর থেকে বেরোতে খানিকটা সময় লেগেছে তাদের। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গে ড্রিঙ্কসে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিলেন ইংরেজ ক্রিকেটারেরা। কিন্তু স্মিথেরাই বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে চাননি।

প্যাট কামিন্সের প্রশংসায় ব্রেন্ডন ম্যাকালাম

এই বিতর্কের মাঝেই অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক কামিন্সের প্রশংসা করেছেন ম্যাকালাম। লর্ডস টেস্টের পরে ম্যাকালাম জানিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসে মদ্যপান করবেন না তিনি। যদিও সিরিজ় শেষে জানিয়েছেন, একসঙ্গে মদ্যপান করতে কোনও সমস্যা নেই তাঁর। আইপিএলে ম্যাকালাম যখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ তখন দলের অধিনায়ক ছিলেন কামিন্স। সেই প্রসঙ্গ টেনে ম্যাকালাম বলেন, ‘‘কামিন্সকে আমি খুব ভাল ভাবে চিনি। আইপিএলে একই দলে ছিলাম আমরা। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিসাবে ও খুব ভাল কাজ করছে। ওকে নিজের দলেরই মনে করি আমি।’’ ম্যাকালামের মতে, দারুণ একটি সিরিজ় হয়েছে। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার দু’দলই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। খেলার মাঠে আবেগের জন্যই মাঝেমধ্যে বিতর্ক হয়েছে। ম্যাকালাম যাই বলুন না কেন, সিরিজ় শেষ হলেও বিতর্ক কিন্তু শেষ হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন