Shakib Al Hasan

বাংলাদেশের হয়ে আর খেলতে পারবেন না শাকিব! ইউনূস সরকারের ফতোয়া, তিন দিনের বাগ‌্‌যুদ্ধে শেষ হল ক্রিকেটজীবন

গত রবিবার বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান শাকিব আল হাসান। তার পর তাঁর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে বাগ্‌যুদ্ধ শুরু হয় বাংলাদেশের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৫৮
Share:

শাকিব আল হাসান। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের হয়ে আর কখনও খেলতে পারবেন না শাকিব আল আসান। প্রাক্তন অধিনায়কের বিরুদ্ধে এক রকম ফতোয়া জারি করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব। এক সাক্ষাৎকারে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন আসিফ।

Advertisement

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এখনও অবসর ঘোষণা করেননি শাকিব। তবু তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবন শেষ হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তে। গত কয়েক দিন ধরে সমাজমাধ্যমে শাকিবের সঙ্গে আসিফের বাগ্‌যুদ্ধ চলছিল। তার প্রেক্ষিতেই ক্রীড়া উপদেষ্টা জানিয়ে দিয়েছেন, দেশের হয়ে আর কখনও খেলতে পারবেন না বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।

আসিফ বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল ‘টোয়েন্টি ফোর’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘শাকিবকে আর কখনও বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়া হবে না। ওকে কখনও আর দেশের জার্সি পরতেও দেওয়া হবে না। আমার পক্ষে শাকিবকে এই সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে আগেই আমার মতামত জানিয়েছিলাম। এ বার নির্দেশ দিচ্ছি, ভবিষ্যতে কখনও শাকিবকে বাংলাদেশ দলের জন্য বিবেচনা করা যাবে না।’’

Advertisement

বিতর্কের শুরু গত রবিবার। সে দিন সমাজমাধ্যমে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি পোস্ট করে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান শাকিব। হাসিনাকে তিনি ‘আপা’ বা পিসি বলে সম্বোধন করেন। তার পরই হাসিনা ঘনিষ্ঠতা নিয়ে শাকিবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। শাকিবের সেই পোস্টের প্রেক্ষিতে আসিফ সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘‘এক জনকে পুনর্বাসন না করায় আপনারা আমাকে সহশ্র গালি দিয়েছেন। কিন্তু আমি ঠিক ছিলাম। একটা বিষয় অন্তত শেষ হল।’’

এর পর শাকিব আবার সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘যাক শেষমেশ কেউ একজন স্বীকার করে নিলেন যে, তাঁর জন্য আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হল না। বাংলাদেশের জন্য খেলতে পারলাম না।’’ এর পরও সমাজমাধ্যমে বাগ্‌যুদ্ধ শেষ হয়নি। আসিফ আবার লেখেন, ‘‘যার হাত ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত, তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বোর্ডের কর্তারা একাধিকবার রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে বললেও তা না করে বরং খুনিদের সমর্থন করা ছাড়াও শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, আর্থিক দুর্নীতি, আর্থিক প্রতারণা করা কাউকে কেন শুধু ভাল ক্রিকেটার বলেই পুনর্বাসন করতে হবে? আইন সবার জন্য সমান। মুখোমুখি হতেই হবে।’’

হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর মধ্যে রাজনৈতিক বিষয় নেই বলে দাবি করেছেন শাকিব। তিনি বাংলাদেশের এক টেলিভিশন চ্যানেল ফোনে বলেছেন, ‘‘উনি (হাসিনা) তো সব সময় খেলার খবর রাখতেন। ক্রিকেট নিয়ে খুব সিরিয়াস ছিলেন। খেলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন। ক্রিকেটার হিসাবেই তাঁর সঙ্গে একটা যোগাযোগ বা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সেটা রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার অনেক আগেই। সেই জায়গা থেকে আমি একজনকে শুভেচ্ছা জানাতেই পারি। এর বাইরে কোনও উদ্দেশ্য আমার ছিল না।’’

আওয়ামী লীগের সাংসদ হওয়া নিয়ে শাকিবের যুক্তির কথা তুলে ধরে তখনই আসিফ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সম্ভাবনা নেই প্রাক্তন অধিনায়কের। সাক্ষাৎকারে সে কথাই পরিষ্কার করে দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রীড়া উপদেষ্টা। যদিও তাঁর এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বাংলাদেশের ক্রিকেটে শাকিবের অবদানের কথা বলছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন, শাকিবের মতো খেলোয়াড়ের ক্রিকেটজীবন কি কেউ এ ভাবে শেষ করে দিতে পারেন?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement