সূর্যকুমার যাদব। —ফাইল চিত্র।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দামামা বেজে গেল। ভারত ফাইনালে উঠবে কিনা, স্বাভাবিক ভাবেই কারও জানা নেই। তবু স্বপ্ন তো দেখাই যায়। সেই স্বপ্ন নিয়েই সঞ্চালক প্রশ্ন করেছিলেন সূর্যকুমার যাদবকে। ভারত অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন, ফাইনালে উঠলে কোথায় সেই ম্যাচ খেলতে চান, প্রতিপক্ষ হিসাবেই বা কাকে চান।
মুম্বইয়ে বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণার অনুষ্ঠানে প্রশ্ন শুনে সূর্য প্রথমে চুপ থাকেন। ১০-১৫ সেকেন্ড ভাবেন। তার পর বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলতে চাই। আর ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসাবে অবশ্যই চাই অস্ট্রেলিয়াকে।’’ সূর্যের উত্তরের পর আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর রোহিত শর্মা বলেন, ‘‘আমি চাই ভারত ফাইনাল খেলুক। প্রতিপক্ষ হিসাবে নির্দিষ্ট কোনও দলের কথা বলতে চাই না। যে কোনও দলের সঙ্গে ফাইনাল হতে পারে। প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবতে চাই না। শুধু চাই, ভারত ফাইনাল খেলুক এবং ট্রফি জিতুক।’’ পাশেই ছিলেন ভারতের মহিলা দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর। তিনি বলেন, ‘‘আমি চাইব সূর্যেরা একটা চাপহীন ফাইনাল খেলার সুযোগ পাক।’’
২০২৩ সালে এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে রোহিতের দলের হার এখনও দগদগে হয়ে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মনে। হরমনপ্রীতদের ঘরের মাঠে বিশ্বজয় সূর্যদের জেদ বাড়িয়ে দিয়েছে। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ২০২৩ সালের দুঃখ ভুলতে চান সূ্র্য। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই ট্রফি জিততে চান ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক।
ট্রফি জিততে না পারার হতাশার কথাও শোনা গিয়েছে। হরমনপ্রীত বলেছেন, ‘‘রোহিত আমাকে দীর্ঘদিন আইসিসি ট্রফি জিততে না পারার হতাশার কথা বলেছিল। এই হতাশা আমাদেরও ছিল। আমরাও আগে কখনও জিততে পারিনি। এ বার সেই হতাশা আমরা কাটিয়ে উঠেছি।’’ রোহিত বলেছেন, ‘‘২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে অহমদাবাদে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর আমরা সকলেই খুব হতাশ ছিলাম। সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে কয়েক মাস পর একটা আইসিসি ট্রফি (২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) জয় অবিশ্বাস্য।’’
গত বারের বিশ্বজয়ী অধিনায়ক এ বার নতুন ভূমিকায়। তা নিয়ে রোহিত বলেছেন, ‘‘এটা বড় সম্মান। আমি অত্যন্ত সম্মানিত। আইসিসি আমাকে এই সম্মান দেওয়ায় জয় শাহকে ধন্যবাদ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি আটটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছি। এখন আমার ভূমিকা অন্য। অবসর নেওয়ার পর সাধারণত বাড়িতে বসেই খেলা দেখি। উপভোগ করি। আমরা যে জাদুটা করেছিলাম, সেটা আবার দেখতে চাই। আগামী বিশ্বকাপে ২০টা দেশ থেলবে। এটা দারুণ ব্যাপার। চাইব ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়ার আরও নতুন নতুন দেশ ক্রিকেট খেলুক।’’
বাড়িতে বসে উপভোগ করার কথা বললেও মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখতে রোহিত গিয়েছিলেন ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে। হরমনপ্রীতদের বিশ্বজয় দেখতে যাওয়া নিয়ে রোহিত বলেছেন, ‘‘ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ খুব কম হয়। আমরা পারিনি। ওরা সুযোগ তৈরি করেছিল। মাঠে গিয়ে উপভোগ করতে চেয়েছিলাম বিশ্বজয়ের আনন্দটা। সেটা পেরেছি। দুর্দান্ত একটা অভিজ্ঞতা।’’ রোহিত আরও বলেন, ‘‘অমল মুজুমদার আমার প্রথম মুম্বই অধিনায়ক। হরমনপ্রীতকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, বিশ্বকাপের সময় কোচ অমলের মেজাজ কেমন ছিল। ও যে উত্তরটা দিয়েছে, তাতে অবাক হইনি একটুও।’’
এই অনুষ্ঠানেই আইসিসির সিইও সঞ্জয় গুপ্ত বলেন, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের মাধ্যমেই ক্রিকেটের বিশ্বায়ন করতে উদ্যোগী তাঁরা। তিনি বলেছেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। নতুন নতুন দেশ বিনিয়োগ করছে। আমরাও এই ফরম্যাটের মাধ্যমে বিশ্বের সর্বত্র ক্রিকেটকে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। মজার তথ্য হল, ক্রমতালিকায় নীচের দিকে থাকা দেশগুলো ৫০ শতাংশ ম্যাচে উপরের দিকের দেশগুলোকে হারিয়েছে এই ফরম্যাটে।’’