বিরাট কোহলি। —ফাইল চিত্র
প্রথম দিনের শেষে তিনি যখন মাঠ থেকে সাজঘরের দিকে যাচ্ছেন তখন তাঁর চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কতটা প্রত্যয়ী তিনি। নিজের ৫০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখতে চাইছিলেন বিরাট কোহলি। রাখলেনও। প্রথম ইনিংসে শতরান করলেন বিরাট। টেস্টে ২৯তম। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৭৬তম। আরও একটি নজির গড়লেন বিরাট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানের নিরিখে পাঁচ নম্বরে উঠলেন বিরাট। টপকে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ক্রিকেটার জ্যাক কালিসকে।
প্রথম দিনের শেষে ৮৭ রানে অপরাজিত ছিলেন বিরাট। দ্বিতীয় দিন শতরান করতে বেশি সময় নিলেন না। শতরান করে ব্যাট তুললেন আকাশে। চলতি বছর টেস্টে নিজের দ্বিতীয় শতরান করলেন বিরাট। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে আমদাবাদে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৮৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টেও শতরানের সুযোগ ছিল। ৭৬ রান করে আউট হয়ে যান বিরাট। দ্বিতীয় টেস্টে আর সুযোগ ফস্কালেন না তিনি।
দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে বিরাট যখন ব্যাট করতে নামেন তখন উল্টো দিক রোহিত। একে একে রোহিত ও রাহানের উইকেট পড়তে দেখেন তিনি। পর পর চার উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব ছিল বিরাটের কাঁধে। সেটাই করেন তিনি। শুরুটা ধীরে করেন বিরাট। ২২তম বলে তাঁর প্রথম রান আসে। অযথা তাড়াহুড়ো করেননি। অফ স্টাম্পের বাইরের বল অনেক সাবধানে খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বাঁহাতি স্পিনার জোমিল ওয়ারিকান ভাল বল করছিলেন। তাই তাঁকে ধরে খেলছিলেন বিরাট।
বড় শটের বদলে দৌড়ে রান নেওয়ার দিকে বেশি নজর দিয়েছিলেন বিরাট। অপর প্রান্তে রবীন্দ্র জাডেজা থাকায় উইকেটের মধ্যে দৌড়তে সুবিধা হচ্ছিল তাঁর। ওয়ারিকানকে কভার অঞ্চলে চার মেরে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন বিরাট। দিনের শেষ বল পর্যন্ত একই রকম একাগ্রতা নিয়ে ব্যাট করেন কোহলি। ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন বিরাট। শতরান পূর্ণ করেন দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে।
এই ইনিংসের ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানের নিরিখে পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছেন বিরাট। ১০০ রান করার ফলে বিরাটের রান ৫০০ ম্যাচে ২৫,৫৬১। এত দিন পাঁচ নম্বরে ছিলেন কালিস। তাঁর রান ৫১৯ ম্যাচে ২৫,৫৩৪। তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬৬৪ ম্যাচে ৩৪,৩৫৭ রান করেছেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অধিনায়ক কুমার সঙ্গকারা। ৫৯৪ ম্যাচে তাঁর রান ২৮,০১৬। তিন নম্বরে থাকা অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের রান ৫৬০ ম্যাচে ২৭,৪৮৩। চার নম্বরে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক মাহেলা জয়বর্ধনে। ৬৫২ ম্যাচে ২৫,৯৫৭ রান করেছেন তিনি। অর্থাৎ, আর ৪০০ রান করলেই জয়বর্ধনেকে টপকে চার নম্বরে উঠে আসবেন বিরাট।