দেবদত্ত পাড়িক্কল এবং বিরাট কোহলি। ছবি: পিটিআই।
ঘরের মাঠে দেবদত্ত পাড়িক্কলকে খেলায়নি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। সেই সিদ্ধান্ত যে কতটা ভুল ছিল, রবিবার তা দেখিয়ে দিলেন তিনি। যে ম্যাচে বিরাট কোহলি রান করেছেন, সেই ম্যাচেও আলোচনার কেন্দ্রে রয়ে গেলেন পাড়িক্কল। নেপথ্যে তাঁর ৩৫ বলে ৬১ রানের ইনিংস। যা পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুকে ৭ উইকেট জিততে সাহায্য করল।
রবিবার কোহলি খেলেছেন নিজের ছন্দে। কোনও ঝুঁকি নেননি। তিনি যে ভাবে দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস গড়েন, সেটাই করেছেন। শেষ দিকে যুজবেন্দ্র চহলকে চার, ছক্কা মারতে শুরু করার আগে কোহলি ধীরে সুস্থেই খেলছিলেন। কারণ সেই সময় সব ঝুঁকি নিচ্ছিলেন পাড়িক্কল। দ্বিতীয় ওভারেই মাঠে নামতে হয়েছিল তাঁকে। খেললেন ১৩তম ওভার পর্যন্ত। এই ১২ ওভারে পাড়িক্কল গোটা মাঠ জুড়ে খেললেন। পেসার, স্পিনার কাউকেই রেয়াত করলেন না। সেই সঙ্গে বার বার বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, গত ম্যাচে তাঁকে বাদ দিয়ে কত বড় ভুল করেছিল বেঙ্গালুরু।
মুল্লানপুরের মাঠে গত মঙ্গলবার ১১১ রানে পঞ্জাবকে আটকে দিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। তার পরেও হেরে গিয়েছিল কেকেআর। সেই মাঠে রবিবার ১৫৭ রান তোলে পঞ্জাব। যা উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছিল না। সেখানে বেঙ্গালুরু ৭ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল। এই সহজ জয়ের কারণ অবশ্যই পাড়িক্কলের ইনিংস।
একটা সময় শারীরিক ভাবে পিছিয়ে পড়েছিলেন পাড়িক্কল। তিন বছর আগে আর ক্রিকেট খেলতে পারবেন কি না, সেটা নিয়েই ভাবতে বসেছিলেন। পাকস্থলীর সমস্যায় ভুগছিলেন কর্নাটকের ক্রিকেটার। ক্রিকেট খেলা পাকাপাকি ভাবে ছেড়ে দেওয়ার মুহূর্ত তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে শারীরিক উন্নতি করে, ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করে ভারতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন। গত বছর টেস্ট অভিষেক হওয়ার পর চোখে জল চলে এসেছিল তাঁর। যদিও সেই জায়গা এখনও পাকা করতে পারেননি। তার জন্য শুধু আইপিএল নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিয়মিত রান করতে হবে তাঁকে।
২০২০ সালে পাড়িক্কল প্রথম নজরে আসেন। সেই সময় তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৭৫। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য যা আদর্শ। সেই বছর আইপিএলে সেরা উদীয়মান ক্রিকেটার হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। এ বারের আইপিএলেই যেমন এটাই তাঁর প্রথম অর্ধশতরান। ৭টি ম্যাচে করেছেন ১৮০ রান। তবে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে বাদ পড়ার আগের ম্যাচে রাজস্থানের বিরুদ্ধে অপরাজিত ৪০ রানের ইনিংস ছিল তাঁর। সেটা ছিল ইঙ্গিত পাড়িক্কলের রানে ফেরার। রবিবার বুঝিয়ে দিলেন, আবার ফর্ম খুঁজে পেয়েছেন। যা বেঙ্গালুরুর জন্য অবশ্যই ইতিবাচক দিক।
ঘরের মাঠে পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে শুক্রবার হেরে গিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। রবিবার সেই হারের বদলা নিয়ে নিলেন বিরাট কোহলিরা। মুল্লানপুরে ম্যাচ জিতে কোহলিকে হাসি মুখে দেখা গেল শ্রেয়স আয়ারের সঙ্গে কথা বলতে। ঘরের মাঠে যে হাসি দেখা যায়নি। আরসিবি-র পরের ম্যাচ আবার বেঙ্গালুরুতে। ঘরের মাঠে এখনও পর্যন্ত সব ম্যাচ হেরেছে তারা। রাজস্থানের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে জয়ে ফিরতে চাইবে তারা। সেই ম্যাচেও দলের ভরসা হতে হবে পাড়িক্কলকে। না হলে কোহলির হাসি আবার উবে যাবে।