মহম্মদ শামি। — ফাইল চিত্র।
ভারতের কোনও ফরম্যাটের দলেই এখন আর সুযোগ পাচ্ছেন না। ফিটনেস নিয়ে সমস্যা তো রয়েছেই। আলোচনা হচ্ছে তাঁর অবসর নিয়েও। যাবতীয় আলোচনাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিলেন মহম্মদ শামি। জানালেন, তাঁর এখনই অবসর নেওয়ার ইচ্ছা নেই। এক দিনের বিশ্বকাপ জেতা এখনও তাঁর শেষ স্বপ্ন। সেটা পূরণ করতে চান। পাশাপাশি, বিরাট কোহলির দেওয়া একটি ডাকনাম নিয়েও কথা বলেছেন শামি।
‘নিউজ়২৪’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অবসরের প্রসঙ্গ উঠতেই শামি বলেন, “কারও যদি সমস্যা থাকে আমায় এসে বলুক। আমি অবসর নিলে কার জীবনে সুখ আসবে? যে দিন ভাল লাগবে না নিজেই খেলা ছেড়ে দেব। আমাকে দলে না নিলে বা না খেলালে কিছু যায় আসে না। তবু আমি পরিশ্রম করে যাব। কোথাও না কোথাও ঠিক খেলার সুযোগ পাব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না পারলে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলব। ভাল না লাগলে তবেই লোকে খেলা ছেড়ে দেয়। তখন আর টেস্ট খেলার জন্য সকাল ৭টায় উঠতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু আমি এখনও ভোর ৫টায় উঠতে রাজি।”
২০২৩-এর এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে জিততে পারেনি ভারত। শামিও সেই ম্যাচে ছাপ ফেলতে পারেননি। আপাতত ২০২৭ বিশ্বকাপকেই পাখির চোখ করেছেন তিনি। বলেন, “একটাই স্বপ্ন বাকি আছে, এক দিনের বিশ্বকাপ জেতা। আমি সেই দলের অংশ হয়ে দেশকে বিশ্বকাপ জেতাতে চাই। ২০২৩-এ খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম। সব ম্যাচ জিতে ফাইনাল খেলতে নেমেছিলাম। কোথাও না কোথাও সকলের মধ্যে একটা ভয় ছিল বলেই মনে হয়। তবে স্টেডিয়ামে অত দর্শক দেখে সকলের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। ভাগ্য ছিল না। না হলে দু’বছর আগেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে যেত।”
দলের মধ্যে অনেকেই শামিকে ‘লালা’ বলে ডাকেন। কোথা থেকে এই নাম এল, কে-ই বা দিলেন তা জানেন না শামি। তাঁর ধারণা, এটি নিশ্চয়ই বিরাট কোহলির কাজ। শামি বলেছেন, “জানি না কী করে নামটা এল। মনে হয় বিরাটের কাজ। ও-ই এ রকম কাজ করতে পারে। এক দিন ভাবছিলাম, লালা আবার কী ধরনের নাম। শাহিদ আফ্রিদিকে এই নামে ডাকা হত। আমায় কেন? আমি কি মোটা? যারা গয়নার কাজ করে তাদের লালা বলে ডাকা হয়। আমি তো করি না। মোটাও নই। দলে নতুন কেউ এলে তাকে বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়। আপনি প্রতিবাদ করতে গেলে আরও বেশি করে আপনার পিছনে লাগবে। তাই চুপ থাকাই ভাল।”
বৃহস্পতিবার থেকে দলীপে খেলতে নেমেছেন শামি। তিনি জানিয়েছেন, এখন পুরোপুরি ফিট। শামির কথায়, “আগের থেকে অনেক সুস্থ আমি। গত দু’মাস অনুশীলন করে নিজের দক্ষতা বাড়িয়েছি, ওজন কমিয়েছি। দেখা যাক এ বার কী হয়। আপাতত ছন্দে ফেরাই লক্ষ্য। দীর্ঘ স্পেলে বল করতে চাই। ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং অনুশীলনও করেছি।”
দেশের হয়ে খারাপ খেললে অতীতে বার বার শামিকে ধর্ম তুলে আক্রমণ করা হয়েছে। তাঁকে দেশদ্রোহী, প্রতারক তকমাও দিয়েছেন কেউ কেউ। বাংলার পেসার জানিয়েছেন, সে সবে আর পাত্তা দেন না। শামির কথায়, “আমি কোনও পাত্তা দিই না এ সবে। আমাকে একটা কাজ দেওয়া হয়েছে। আমি তো যন্ত্র নেই। সারা বছর কঠোর পরিশ্রম করি। কখনও সফল হই, কখনও ব্যর্থ। কে কী ভাবে নেবে সেটা তাদের ব্যাপার। দেশের হয়ে খেললে এ সব ভুলে যাই। তখন উইকেট নেওয়া এবং দেশকে জেতানোই আমার কাছে আসল।”