মহম্মদ শামি। ছবি: সমাজমাধ্যম।
স্ত্রী হাসিন জাহানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে আলিপুর আদালতে। তার মাঝেই বৃহস্পতিবার মেয়ে আইরার জন্মদিনে তার উদ্দেশে লম্বা বার্তা লিখলেন মহম্মদ শামি। সেখানে কোথাও হাসিনের নাম নেই। উল্লেখ্য, শামির মেয়ে থাকে মায়ের সঙ্গেই। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে মেয়ের জন্য প্রতি মাসে আড়াই লক্ষ টাকা করে দিতে হবে শামিকে।
এ দিন সমাজমাধ্যমে শামি লিখেছেন, “এখনও আমার সেই সব রাতগুলো মনে আছে যখন আমরা জেগে থাকতাম, কথা বলতাম, হাসাহাসি করতাম এবং বিশেষ করে তোর নাচ উপভোগ করতাম। বিশ্বাসই হচ্ছে যে তুই এত তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাচ্ছিস। তোর জীবনে সব সময় ভাল কিছু হোক এটাই চাই। ঈশ্বর আজ এবং সারাজীবন তোকে ভালবাসা, শান্তি, সুখ এবং স্বাস্থ্য দিক। শুভ জন্মদিন।”
২০১৮-এ হাসিনের থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন শামি। মেয়ে আইরা থাকে মায়ের কাছেই। এর আগেও কলকাতার একটি শপিং মলে মেয়ের সঙ্গে ঘোরার ছবি পোস্ট করেছিলেন শামি।
উল্লেখ্য, বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায় গত ১ জুলাই নির্দেশ দেন, ভরণপোষণ বাবদ প্রাক্তন স্ত্রী হাসিনকে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা করে দিতে হবে শামিকে। মেয়ের জন্য মাসে দিতে হবে আরও আড়াই লাখ টাকা করে। চাইলে মেয়ের পড়াশোনা বা অন্য প্রয়োজনে আরও টাকা খরচ করতে পারেন ভারতীয় দলের ক্রিকেটার। গার্হস্থ্য হিংসার মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই টাকা দিতে হবে তাঁকে।
২০১৪ সালে মডেল এবং অভিনেত্রী হাসিনের সঙ্গে বিয়ে হয় শামির। ২০১৫ সালে তাঁদের কন্যাসন্তানের জন্ম। কিন্তু তাঁদের দাম্পত্য সুখের হয়নি। ২০১৮ সালে যাদবপুর থানায় শামি এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের করেন হাসিন। স্ত্রী নির্যাতন, বিষ খাওয়ানো, খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ-সহ একাধিক অভিযোগ করা হয় শামির বিরুদ্ধে। বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হন হাসিন। প্রোটেকশন অফ উইমেন ফ্রম ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট ২০০৫ অনুযায়ী মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার খরচ এবং অন্তর্বর্তিকালীন ভরণপোষণ বাবদ ১০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। নিজের জন্য মাসে ৭ লাখ এবং মেয়ের জন্য মাসে ৩ লাখ টাকা চান। কিন্তু নিম্ন আদালতে তাঁর এই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। আলিপুর আদালত শুধুমাত্র তাঁর সন্তানকে ৮০,০০০ টাকা প্রতি মাসে দেওয়ার নির্দেশ দেয় শামিকে। পরে জেলা জজ সেই নির্দেশ সংশোধন করে হাসিনকেও মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন হাসিন। তাঁর আইনজীবী বলেন, মাসে হাসিনের আয় ১৬ হাজার টাকা। ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানত থেকে সুদ বাবদ এই টাকা পান তিনি। এই টাকায় তাঁর এবং কন্যার খরচ চালানো সম্ভব নয়। অথচ শামির সঙ্গে থাকার সময় থেকে তাঁরা ব্যয়বহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁর প্রতি মাসে খরচ হয় প্রায় ৬ লাখ টাকা। অন্য দিকে, তাঁর প্রাক্তন স্বামীর ২০২০-২১ অর্থ বর্ষের আয় প্রায় ৭.১৯ কোটি টাকা। সামর্থ্য থাকতেও তিনি টাকা দিতে চাইছেন না।
শামি এর জবাবে আদালতকে জানান, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী একজন সফল মডেল এবং অভিনেত্রী। বিজ্ঞাপনেও কাজ করেন। তাঁর মাসিক আয় অন্তত ৫ লাখ টাকা। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর বেশ কিছু আমানত রয়েছে। তথ্য গোপনের অভিযোগও করেন শামি। জোরে বোলারের যুক্তি খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।