ফারহানের সেই বিতর্কিত উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।
এশিয়া কাপে ভারতের কাছে তিনটি ম্যাচেই হেরেছে পাকিস্তান। ফাইনালে লড়াই করলেও জিততে পারেনি। অথচ দেশে ফেরার পর বীরের সম্মান পেলেন দলের ওপেনার সাহিবজ়াদা ফারহান। প্রতিযোগিতার মাঝেই বন্দুক দিয়ে গুলি করার ভঙ্গিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি।
শনিবার সমাজমাধ্যমে একাধিক ছবি এবং ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, খাইবার পাখতুনখোয়ার চারসদ্দা গ্রামে নিজের বাড়িতে ফিরেছেন ফারহান। স্থানীয় মানুষ গলায় মালা পরিয়ে সম্মান জানিয়েছেন তাঁকে। কালো টিশার্ট পরা ফারহানকে হাসিমুখে সেই অভ্যর্থনা গ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে। তাঁর হাতে একটি ব্যাটও তুলে দিতে দেখা গিয়েছে, যেখানে ফারহানের সেই উচ্ছ্বাসের একটি স্টিকার সাঁটা রয়েছে। তাতে লেখা ‘গানমোড’।
ফারহানকে (মাঝে) সংবর্ধনার সেই ছবি। ছবি: সমাজমাধ্যম।
এশিয়া কাপে ব্যাট হাতে পাকিস্তানের সফলতম ক্রিকেটার ফারহান। সাতটি ম্যাচে তিনি ২১৭ রান করেছেন। দু’টি অর্ধশতরানই করেছেন ভারতের বিরুদ্ধে।
সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের হয়ে শুরুটা ভালই করেছিলেন ফারহান। হার্দিক পাণ্ড্য, জসপ্রীত বুমরাহদের উপর দাপট দেখিয়ে দ্রুত গতিতে রান তুলছিলেন। দশম ওভারে অক্ষর পটেলের একটি বল মিড উইকেটের উপর শট খেলে অর্ধশতরান পূরণ করেন। এর পরেই ব্যাটের হাতলটিকে কাঁধের কাছে রেখে এমন ভাবে উচ্ছ্বাস করেন, যেন মনে হচ্ছে বন্দুক চালাচ্ছেন। খেলাধুলোর জগতে এই ধরনের উচ্ছ্বাস ‘একে৪৭ সেলিব্রেশন’ নামে পরিচিত। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগে তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফারহান বলেন, “ওটা ওই মুহূর্তেই মাথায় এসেছিল। আমি অর্ধশতরানের পর খুব একটা উল্লাস করি না। কিন্তু হঠাৎ মনে হল, এই ম্যাচে করব। তাই উল্লাস করেছি। আমি জানি না, কে কী ভাবে তাকে নিয়েছে। আমার তাতে কিছু যায়-আসে না।”
সুপার ফোরের ম্যাচে ফারহানের ‘একে৪৭ সেলিব্রেশন’ এবং হ্যারিস রউফের ‘প্লেন ক্র্যাশ সেলিব্রেশন’-এর বিরোধিতা করে আইসিসি-র কাছে সরকারি ভাবে অভিযোগ জানিয়েছিল ভারত। উল্টো দিকে, পাকিস্তান অভিযোগ জানিয়েছিল সূর্যকুমার যাদবের ‘পহেলগাঁও’ মন্তব্যের জন্য।
ফারহান এবং রউফ দু’জনেই জানান তাঁরা কোনও অপরাধ করেননি। ফলে আনুষ্ঠানিক শুনানি করতেই হত। ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন পাকিস্তানের টিম হোটেলে গিয়ে দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে আলাদা করে দেখা করেন। ফারহান জানান, তিনি ক্রিকেটীয় সংস্কৃতির বিরোধী কোনও কাজ করেননি। যে উচ্ছ্বাস তিনি করেছেন তা পাকিস্তানের পাখতুন সম্প্রদায়ের দীর্ঘ দিনের প্রথা। রউফ কী যুক্তি দিয়েছেন তা জানা যায়নি। ফারহানকে সতর্ক করে দেন ম্যাচ রেফারি। তবে সূর্যকুমার এবং রউফকে ম্যাচ ফি-র ৩০ শতাংশ জরিমানা হিসাবে দিতে হয়।